সপ্তম শ্রেণি, বিজ্ঞান, পঞ্চম অধ্যায় (পরিপাকতন্ত্র এবং রক্ত সংবহনতন্ত্র) || Class Seven, Science, Chapter 5 (Digestive system and circulatory system)

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১। লালা কী? 
উত্তর : লালা হল একটি শারীরিয় তরল বস্তু যা প্রানীর মুখের লালা গ্রন্থি হতে উৎপন্ন হয়। 

২। জেজুনাম কী?
উত্তর:
ক্ষুদ্রান্ত্রের ডিওডেনাম ও ইলিয়ামের মাঝে অবস্থিত অংশটিই জেজুনাম।

৩। টায়ালিন কী? 
উত্তর:
লালা গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত লালায় উপস্থিত এনজাইম হলো টায়ালিন।

৪। কোন পদার্থ খাদ্যবস্তুকে পিচ্ছিল করে?
উত্তর:
লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত লালা খাদ্যবস্তুকে পিচ্ছিল করে। মুখ ও পরিপাকতন্ত্রে অবস্থিত বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত লালা ও মিউসিন খাদ্যবস্তুকে পিচ্ছিল করে।

৫। যকৃৎ থেকে কী তৈরি হয়?
উত্তর:
যকৃৎ থেকে পিত্তরস তৈরি হয়।

৬। সংবহন প্রক্রিয়া কী? 
উত্তর:
যে প্রক্রিয়ায় প্রাণিদেহের রক্ত পরিবহনের কাজ সম্পন্ন হয় তাকে সংবহন প্রক্রিয়া বলে।

৭। রক্তের উপাদান কয়টি? 
উত্তর: রক্তের উপাদান ২ টি।

৮। ধমনি কী ? 
উত্তর:
যে সকল রক্তবাহী নালি হৃৎপিণ্ড থেকে উৎপন্ন হয়ে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত বহন করে তাই ধর্মনি।

৯। হৃৎপিণ্ড কয় প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট? 
উত্তর:
হৃৎপিণ্ড চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট।

১০। লোহিত কণিকায় কী থাকে? 
উত্তর:
হিমোগ্লোবিন নামক রঞ্জক পদার্থ থাকে।

১১। পরিপাকতন্ত্র কী? 
উত্তর:
যে তন্ত্র পরিপাকে অংশ নেয় তাকে পরিপাকতন্ত্র বলে। অথবা, যে তন্ত্রের মাধ্যমে পরিপাক ক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাই পরিপাকতন্ত্র বা পৌষ্টিকতন্ত্র।

১২। রক্ত কী? 
উত্তর: 
রক্ত হচ্ছে একধরনের তরল যোজক কলা, যার মাধ্যমে বিভিন্ন রক্তবাহিকা দেহের সকল কোষে পুষ্টি, ইলেক্ট্রোলাইট, হরমোন, ভিটামিন, অ্যান্টিবডি, অক্সিজেন, ইমিউন কোষ ইত্যাদি বহন করে এবং বের করার জন্য বহন করে।

১৩। ইলিয়াম কী? 
উত্তর:
ইলিয়াম হলো ক্ষুদ্রান্ত্রের সর্বশেষ অংশ।

১৪। মানুষের স্থায়ী দাঁতের সংখ্যা কয়টি ? 
উত্তর:
মানুষের স্থায়ী দাঁতের সংখ্যা ৩২ টি।

১৫। লোহিত রক্তকণিকা কাকে বলে ? 
উত্তর:
যে রক্ত কণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে না, শুধুমাত্র হিমোগ্লোবিন নামক এক ধরনের লৌহ জাতীয় পদার্থ থাকে তাকে লোহিত রক্ত কণিকা বলে।

১৬। শিরা কাকে বলে? 
উত্তর:
যে সকল রক্তনালি দ্বারা দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে তাকে শিরা বলে।


অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১. রক্তরস কী ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:
রক্তরস রক্তের তরল অংশ। সাধারণত রক্তের শতকরা ৫৫ ভাগ রক্তরস। এতে আমিষ , লবণ ও অন্ত্র থেকে শোষিত খাদ্য উপাদান থাকে। রক্তরসে রক্তকণিকা ভাসমান অবস্থায় থাকে। ফাইব্রিনোজেন রক্ত জমাট বাঁধাতে সাহায্য করে।

২. ডিওডেনামের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:
ডিওডেনামের ভূমিকা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো এটা ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশ। পাকস্থলীর পরের অংশ, দেখতে ঢ আকৃতির। পিত্তথলি থেকে পিত্তরস এবং অগ্ন্যাশয় থেকে অগ্ন্যাশয় রস নালীর মাধ্যমে এখানে এসে খাদ্যের সাথে মিশে। এ রসগুলোও পরিপাকে অংশ নেয়। এখানে আমিষ, শর্করা ও স্নেহ পদার্থের পরিপাক ঘটে।

৩. কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ কী?
উত্তর:
কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হলো পৌষ্টিক নালির মধ্য দিয়ে খাদ্যবস্তুর চলন ধীর হওয়া। কাঁচা ফলমূল ও শাকসবজি না খাওয়া, পায়খানার বেগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে পায়খানায় না বসা ইত্যাদি।

৪. অণুচক্রিকাকে প্লেটেলেট বলা হয় কেন?
উত্তর:
অণুচক্রিকা দেখতে গোলাকার ও বৃত্তের মতো। এরা লোহিত রক্তকণিকার চেয়ে আকারে ছোট হয় ও নিউক্লিয়াস থাকে না। এরা গুচ্ছাকারে থাকে। অর্থাৎ দেহের কোনো অংশ কেটে গেলে রক্তপাত ঘটলে অণুচক্রিকা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে বলেই অণুচক্রিকাকে প্লেটেলেট বলে।

৫. এনজাইম কীভাবে কাজ করে?
উত্তর:
খাদ্য গ্রহণ করার পর দেহের ভিতর থেকে নিঃসৃত বিভিন্ন এনজাইমের ক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এনজাইম প্রথমে খাদ্যবস্তুর সাথে মিশে এবং পরিপাক শুরু করে। এসব ক্ষেত্রে এরা প্রভাবক হিসেবে কাজ করে এবং বিক্রিয়ার গতিকে ত্বরান্বিত করে। এতে করে গৃহীত জটিল খাদ্যদ্রব্য ডেঙে সরল হয় এবং পরিপাকের উপযোগী হয়ে উঠে। এভাবে এনজাইম খাদ্য পরিপাকের সময় কাজ করে থাকে। 

৬. বিভিন্ন প্রকার দাঁতের কাজ লিখ।
উত্তর:
মানুষের সাধারণত ৪ প্রকার দাঁত দেখা যায় । এদের কাজ নিম্নরূপ : 
১. কর্তন দাঁত: খাবার ছোট ছোট করে কাটতে সাহায্য করে।
২. ছেদন দাঁত: মাংস ও অন্যান্য শক্ত জিনিস ছিড়তে ও কাটতে সহায়তা করে।
৩. অগ্রপেষণ দাঁত: খাদ্যবস্তু চর্বণ ও পেষণ করতে ব্যবহৃত হয়।
৪. পেষণ দাঁত: খাদ্যবস্তু চিবাতে ও পিযতে সাহায্য করে।

৭. ক্ষুদ্রান্ত্রের কয়টি অংশ ও কী কী? 
উত্তর:
ক্ষুদ্রান্ত্রের তিনটি অংশ। যথা- 
১. ডিওডেনাম, 
২. জেজুনাম 
৩. ইলিয়াম।

৮. বৃহদন্ত্রের কয়টি অংশ ও কী কী? 
উত্তর:
বৃহদন্ত্রের তিনটি অংশ । যথা- 
১. সিকাম, 
২. কোলন ও 
৩. মলাশয়।

৯. আমাশয় রোগ কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়? 
উত্তর: নিম্নলিখিত উপায়ে আমাশয় রোগ প্রতিরোধ করা যায়-
১. নলকূপের পানি বা ফুটানো পানি পান করে।
২ . টাটকা ও সতেজ শাকসবজি খেতে হবে।
৩. মাছি , আরশোলা থেকে খাদ্যবস্তু রক্ষা করার মাধ্যমে।

১০. ব্যাসিলারি আমাশয়কে রক্ত আমাশয় বলা হয় কেন? 
উত্তর:
সিগেলা নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রকে আক্রমণ করলে ব্যাসিলারি আমাশয় হয়। ফলে বারবার পায়খানা হয় এবং পায়খানার সাথে শ্লেষ্মা বের হয়। অনেক সময় এর সাথে রক্তও যায়। এ কারণে এ রোগকে রক্ত আমাশয় বলে।

১১. শ্বেত রক্তকণিকাকে সৈনিকের সাথে তুলনা করা হয় কেন? 
উত্তর:
দেহে কোনো রোগ-জীবাণু প্রবেশ করলে শ্বেত রক্তকণিকা সেগুলোকে ধ্বংস করে এবং শ্বেত রক্তকণিকা দেহের প্রহরীর মতো কাজ করে। এ কারণেই শ্বেত রক্তকণিকাকে সৈনিকের সাথে তুলনা করা হয়।

১২. পরিপাকতন্ত্রের যত্ন নেওয়া উচিত কেন? 
উত্তর:
যে তন্ত্র পরিপাকে অংশ নেয় তাকে পরিপাকতন্ত্র বলে। পরিপাকতন্ত্রের যত্ন নেওয়া আমাদের উচিত কারণ আমরা যদি পরিপাকতন্ত্রের যত্ন না নেই তাহলে আমাদের অনেক রোগ দেখা দিতে পারে। যেমন— কোষ্ঠকাঠিন্য, ব্যাসিলারি আমাশয় ইত্যাদি। তাই পরিপাকতন্ত্রের যত্ন নেওয়া অতীব জরুরি।

১৩. লোহিত রক্তকণিকার রং লাল দেখায় কেন? 
উত্তর:
মানুষের রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ শতকরা ৪৫ ভাগ এবং লোহিত রক্ত কণিকায় হিমোগ্লোবিন নামক এক ধরনের লৌহ জাতীয় রঞ্জক পদার্থ থাকে। রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতির কারণেই রক্তের রং লাল হয়।

১৪. হৃদরোগের কারণ ব্যাখ্যা কর। 
উত্তর:
হৃদরোগের কারণ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
১. অতিরিক্ত তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া।
২. সুষম খাদ্য গ্রহণ না করা।
৩ . ধূমপান করা। 
৪. অতিরিক্ত পরিশ্রম করা। 
৫. কোনো রকম শারীরিক পরিশ্রম না করা।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url