সপ্তম শ্রেণি, বিজ্ঞান, চতুর্দশ অধ্যায় (জলবায়ু পরিবর্তন) || Class Seven, Science, Chapter 14 (Climate change)
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কী?
উত্তর: পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা এভাবে বেড়ে যাওয়াকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলে।
২। নিম্নচাপ কী?
উত্তর: কোনো জায়গার তাপমাত্রা বেশি হলে সেখানকার বায়ু উত্তপ্ত হয়ে উপরের দিকে উঠে যায়। ফলে ঐ স্থানে বায়ু পাতলা বা ফাঁকা হয়ে যায় অর্থাৎ বায়ুচাপ কমে যায়। এরকম অবস্থাকে নিম্নচাপ বলে।
৩। উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহের কার্বন কয়ভাবে বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে?
উত্তর: উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহের কার্বন তিনভাবে বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে।
৪। শীত প্রধান দেশে গাছপালা কেন টিকে থাকতে পারে না?
উত্তর: শীত প্রধান দেশে তীব্র শীতে গাছপালা টিকে থাকতে পারে না।
৫। আবহাওয়া কী?
উত্তর: কোনো স্থানের বায়ুমণ্ডলের স্বল্পসময়ের তাপমাত্রা, চাপ, বায়ুপ্রবাহ , আর্দ্রতা এ অবস্থাগুলো হলো আবহাওয়া।
৬। গ্রিন হাউজ কী?
উত্তর: গ্রিন হাউজ হলো কাচের তৈরি ঘর যেখানে তীব্র শীতে শাক সবজি ফলানো হয়।
৭। উচ্চচাপ কাকে বলে?
উত্তর: যে স্থানে তাপমাত্রা কম সেখানে বায়ু ঘন থাকে। এর ফলে বায়ুচাপ বেশি থাকে। বায়ুচাপ বেশি থাকাকে উচ্চচাপ বলা হয়।
৮। বায়ুমণ্ডল কী দিয়ে তৈরি?
উত্তর: বায়ুমণ্ডল মূলত অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন দিয়ে তৈরি।
৯। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মূল কারণ কী?
উত্তর: বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মূল কারণ হলো বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া।
১০। শিলাবৃষ্টি কী?
উত্তর: মেঘের পানি কণাগুলো খুব বেশি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তা বরফে পরিণত হয় এবং বরফাকারে পৃথিবীতে নেমে আসে, একে শিলাবৃষ্টি বলে।
১১। গ্রিন হাউজ গ্যাস না থাকলে কী ঘটত?
উত্তর: গ্রিন হাউজ গ্যাস না থাকলে পৃথিবী থেকে তাপ বিকিরিত হয়ে মহাশূন্যে চলে যেত, ফলে পৃথিবী ভীষণ ঠাণ্ডা হয়ে পড়ত।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১। পৃথিবীর তাপমাত্রা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন?
উত্তর: খাদ্য উৎপাদনের জন্য কৃষিকাজের ফলে মিথেন গ্যাসের সৃষ্টি হয়। আবার জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য মানুষ বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন- কয়লা, পেট্রোল, প্রাকৃতিক-গ্যাস ইত্যাদি ব্যবহার করছে। এতে কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হচ্ছে। এ মিথেন গ্যাস ও কার্বন ডাইঅক্সাইড সূর্য থেকে আসা তাপ ধরে রাখে। বায়ুমণ্ডলে এদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এরা বেশি তাপ ধরে রাখছে। এজন্য পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উত্তর: খাদ্য উৎপাদনের জন্য কৃষিকাজের ফলে মিথেন গ্যাসের সৃষ্টি হয়। আবার জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য মানুষ বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন- কয়লা, পেট্রোল, প্রাকৃতিক-গ্যাস ইত্যাদি ব্যবহার করছে। এতে কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হচ্ছে। এ মিথেন গ্যাস ও কার্বন ডাইঅক্সাইড সূর্য থেকে আসা তাপ ধরে রাখে। বায়ুমণ্ডলে এদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এরা বেশি তাপ ধরে রাখছে। এজন্য পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২। ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুমণ্ডল ঘন থাকার কারণ কী?
উত্তর: বায়ুমণ্ডল মূলত নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন দিয়ে তৈরি। এছাড়াও জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা, আর্গন, কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং আরো কিছু গ্যাস বায়ুমণ্ডলে রয়েছে। পৃথিবী সকল কিছুকেই তার নিজের দিকে টানে। সেই টানের ফলে বায়ুমণ্ডলের গ্যাসগুলো পৃথিবীপৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকে। তাই ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুমণ্ডল ঘন থাকে।
৩। রাতের বেলা আমরা গরম অনুভব করি কেন?
উত্তর: রাতে যখন সূর্য অস্ত যায় তখন পৃথিবীপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তর গরম থাকে। কারণ দিনের বেলায় পৃথিবীপৃষ্ঠ যে তাপ পায় তা রাতের বেলায় সবটুকু চলে যেতে পারে না। পৃথিবীপৃষ্ঠ যে তাপ বিকিরণ করে তা বায়ুমণ্ডলের জলীয়বাষ্প , কার্বন ডাইঅক্সাইড ইত্যাদি সেই তাপ শোষণ করে ধরে রাখে , তাই রাতের বেলা আমরা গরম অনুভব করি।
৪। জলবায়ু পরিবর্তন রোধের উপায় ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে । বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মূল কারণ বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি। তাই কার্বন ডাইঅক্সাইড ও মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ কমানো অথবা যেকোনোভাবে এদেরকে বায়ুমণ্ডল থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো জলবায়ু পরিবর্তন রোধের মূল উপায়।
৫। বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে অর্থাৎ পৃথিবীর কাছাকাছি বায়ুমণ্ডলে বায়ুর ঘনত্ব বেশি থাকে কেন তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: যে বায়বীয় অংশটি পৃথিবীর পৃষ্ঠকে ঘিরে রেখেছে সেটিই বায়ুমণ্ডল। আমরা জানি, বায়ুমণ্ডল মূলত নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন দিয়ে তৈরি। এছাড়াও জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা, আর্গন, কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং আরও কিছু গ্যাস বায়ুমণ্ডলে রয়েছে। পৃথিবী সকল কিছুকে তার নিজের দিকে টানে। সেই টানের ফলে বায়ুমণ্ডলের গ্যাসগুলো পৃথিবী পৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকে। তাই ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুমণ্ডল ঘন হয়ে থাকে।
উত্তর: যে বায়বীয় অংশটি পৃথিবীর পৃষ্ঠকে ঘিরে রেখেছে সেটিই বায়ুমণ্ডল। আমরা জানি, বায়ুমণ্ডল মূলত নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন দিয়ে তৈরি। এছাড়াও জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা, আর্গন, কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং আরও কিছু গ্যাস বায়ুমণ্ডলে রয়েছে। পৃথিবী সকল কিছুকে তার নিজের দিকে টানে। সেই টানের ফলে বায়ুমণ্ডলের গ্যাসগুলো পৃথিবী পৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকে। তাই ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুমণ্ডল ঘন হয়ে থাকে।
৬। ট্রপোমণ্ডল কেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠ থেকে এগার কিলোমিটার পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলকে বলা হয়, ট্রপোমণ্ডল। এ স্তরে বায়ুর বেশিরভাগ প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহ যেমন অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয় বাষ্প থাকে। এ স্তরে মানুষ ও অন্যান্য জীবের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন সব ঘটনা ঘটে। যেমন — এ স্তরে মেঘ, বৃষ্টি, বায়ুপ্রবাহ, ঝড়, কুয়াশা এসব হয়। তাই ট্রপোমণ্ডল বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর।
৭. গ্রিন হাউজ প্রভাব কী? বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে কীভাবে এর সাহায্যে ব্যাখ্যা করা যায়?
উত্তর: শীতপ্রধান দেশে তীব্র শীতে গাছপালা টিকে থাকতে পারে না। তীব্র শীতে শাকসবজি ফলানোর জন্য কাচের ঘর তৈরি করা হয়, যাকে গ্রিন হাউজ বলা হয়। শীতকালে অল্প সময় যখন রোদ থাকে, তখন সূর্যের আলো কাচ ভেদ করে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে এবং ঘরের বায়ু, গাছ ও মাটিকে উত্তপ্ত করে। ঘরের উত্তাপ স্বাভাবিকভাবে বিকিরিত হয়ে বাইরে চলে যেতে চায়। কিন্তু তা কাচ ভেদ করে বাইরে যেতে পারে না। ফলে কাচের ঘর রাতের বেলায়ও গরম থাকে এবং ভেতরের শাকসবজি বেঁচে থাকে। কাচের ঘরের ভেতরে এভাবে তাপ থেকে যাওয়ার বিষয়টিকে গ্রিন হাউজ প্রভাব বলে।
পৃথিবীটাকে একটি গ্রিন হাউজের মতো ধরা যায়। পৃথিবীর চারদিক ঘিরে আছে বায়ুমণ্ডল। এ বায়ুমণ্ডলে আছে কার্বন ডাইঅক্সাইড , মিথেন আর জলীয়বাষ্প যেগুলো গ্রিন হাউজের গ্যাসের মতো কাজ করে। এরা সূর্যের তাপ পৃথিবীতে আসতে কোনো বাধা দেয় না ফলে সূর্যের তাপে পৃথিবী উত্তপ্ত হয় । কিন্তু এরা উত্তপ্ত পৃথিবী থেকে তাপকে বিকিরিত হয়ে চলে যেতে বাধা দেয়। ফলে পৃথিবী রাতের বেলায়ও গরম থাকতে পারে। এসব গ্যাসকে গ্রিন হাউজ গ্যাস বলে।
এ গ্রিন হাউজ গ্যাসগুলোর পরিমাণ বেশি হলে বায়ুমণ্ডল বেশি বেশি তাপ ধরে রাখতে পারবে। এতে পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বেড়ে যাবে । এতে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাবে। এভাবে গ্রিন হাউজ প্রভাবের সাহায্যে বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ব্যাখ্যা করা যায়।