সপ্তম শ্রেণি, বিজ্ঞান, একাদশ অধ্যায় (পারিপার্শ্বিক পরিবর্তন ও বিভিন্ন ঘটনা) || Class Seven, Science, Chapter 11
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১. গলন কী ?
উত্তর: তাপ প্রয়োগের ফলে কোনো কঠিন পদার্থ ধীরে ধীরে গলে তরলে পরিণত হওয়ার পদ্ধতিকে গলন বলে।
২. শিলা কী?
উত্তর: ভূ-তৃক যেসব উপাদান দ্বারা গঠিত তার সাধারণ নাম শিলা।
৩. ইলেকট্রোপ্লেটিং কী?
উত্তর: তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে একটি ধাতুর ওপর অন্য ধাতুর পাতলা আবরণ তৈরির প্রক্রিয়াকে ইলেকট্রোপ্লেটিং বলে।
8. দহন কী ?
উত্তর : যে রাসায়নিক পরিবর্তনের ফলে পদার্থ বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে তাপশক্তি উৎপন্ন করে তাকে দহন বলে।
৫. চক কী?
উত্তর: চক মূলত ক্যালসিয়াম কার্বনেট (CaCO)।
৬. চকের গুঁড়ায় পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড যোগ করলে কী ঘটে?
উত্তর: চক্রের গুঁড়ায় পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড যোগ করলে কার্বন ডাইঅক্সাইডে বুদবুদ উঠে ও ফেনাসহ দ্রবণ সৃষ্টি হয়।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
১. গলন ও স্যুটন কী ধরনের পরিবর্তন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: গলন ও স্ফুটন উভয়ই ভৌত পরিবর্তন। কারণ উভয় ক্ষেত্রে পরিবর্তনের ফলে সংশ্লিষ্ট পদার্থের অবস্থার বা আকার-আকৃতির পরিবর্তন ঘটে কিন্তু কোনো নতুন পদার্থের সৃষ্টি হয় না।
উত্তর: গলন ও স্ফুটন উভয়ই ভৌত পরিবর্তন। কারণ উভয় ক্ষেত্রে পরিবর্তনের ফলে সংশ্লিষ্ট পদার্থের অবস্থার বা আকার-আকৃতির পরিবর্তন ঘটে কিন্তু কোনো নতুন পদার্থের সৃষ্টি হয় না।
২. পানি চক্র, কার্বন চক্র এবং অক্সিজেন চক্রে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: পানি চক্রে ভৌত পরিবর্তন ঘটে কারণ এটি একটি চক্রাকার প্রক্রিয়া এবং এই প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন পদার্থের ধর্মের কোনো পরিবর্তন হয় না। অপরদিকে কার্বন ও অক্সিজেন চক্রে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে কারণ উভয় পরিবর্তনের বলে উৎপন্ন পদার্থ বিক্রিয়ক পদার্থ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং এদের ধর্মও পুরোপুরি ভিন্ন।
৩. ম্যাগনেসিয়ামের দহনের কলে কী পরিবর্তন ঘটে- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ম্যাগনেসিয়ামের দহনের ফলে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। ম্যাগনেসিয়াম বাতাসের অক্সিজেনে পুড়তে থাকলে আমরা প্রজ্জ্বলিত শিখা দেখতে পাই। একসময় সমস্ত ম্যাগনেসিয়াম পুড়ে শেষ হয়ে যায় এবং ম্যাগনেসিয়াম ও অক্সিজেন পুড়ে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড উৎপন্ন হয়। এক্ষেত্রে উৎপন্ন পদার্থ (ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড) ম্যাগনেসিয়াম ও অক্সিজেন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং এদের ধর্মও পুরোপুরি ভিন্ন । তাই এটি একটি রাসায়নিক পরিবর্তন।
৪. রূপান্তরিত শিলার গঠন এক ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: রূপান্তরিত শিলা তৈরি হয় আগ্নেয় বা পাললিক শিলা থেকে চাপ ও রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রভাবে আয়ে বা পাললিক শিলা পরিবর্তিত হয়ে নতুন ধরনের যে শিলা তৈরি করে , তাকে রূপান্তরিত শিলা বলে। রূপান্তরিত শিলার ধর্ম মূল শিলা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং রূপান্তরের সময় রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয় বলে রূপান্তরিত শিলার গঠন এক ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন।
৫. বাতাসে ফেলে রাখলে লোহার ক্ষয় হয় কেন?
উত্তর: লোহা বাতাসের অক্সিজেন ও পানির সাথে বিক্রিয়ায় পানিযুক্ত ফেরিক অক্সাইড তথা মরিচা উৎপন্ন করে। মরিচার বৈশিষ্ট্য হলো, এতে ঘষা লাগলেই বসে পড়ে। ফলে মরিচা পড়ায় লোহার ক্ষয় হয়।
৬. লোহার ক্ষয় কীভাবে রোধ করা যায়?
উত্তর: লোহার ক্ষয়ের জন্য দায়ী মরিচা, যা বাতাসের অক্সিজেন ও পানির সংস্পর্শে এলে সৃষ্টি হয়। তাই ক্ষয় রোধে লোহাকে এগুলোর সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখতে হবে। এজন্য লোহার ওপর তেল , গ্রিজ বা পেইন্ট লাগিয়ে অথবা গ্যালভানাইজিং, ইলেকট্রোপ্লেটিং ইত্যাদির মাধ্যমে অন্য ধাতুর হালকা আবরণ সৃষ্টি করে দেওয়া যেতে পারে।
৭. মোম জ্বালানোর ফলে কী পরিবর্তন ঘটে—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: মোম জ্বালানোর ফলে ভৌত ও রাসায়নিক উভয় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। মোমের একটি অংশ গলে সলতের মধ্য দিয়ে আগুনে পুড়ে যায়। সেখানে মোমবাতি বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও পানিতে (জলীয় বাষ্পে) পরিণত হয়। এটি রাসায়নিক পরিবর্তন। অপরদিকে অন্য একটি অংশ গলে নিচে পড়ে জমে যায়। এটি ভৌত পরিবর্তন।
৮. বাষ্পীভবন একটি ভৌত পরিবর্তন কেন?
উত্তর: বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ায় নদ-নদী, খাল-বিল ও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সূর্যের ভাগে পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়ে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। এতে পানি শুধু তরুণ অবস্থা থেকে বাষ্পে পরিণত হয়েছে, ভিন্নধর্মী কোনো পদার্থ সৃষ্টি হয়নি। তাই বাষ্পীভবন একটি ভৌত পরিবর্তন।
৯. কার্বন ডাইঅক্সাইড পানিতে দ্রবীভূত হলে কী ঘটে।
উত্তর: কার্বন ডাইঅক্সাইড পানিতে দ্রবীভূত হলে কার্বনিক এসিড তৈরি করে পানির মাছ থেকে এটি ভেঙে আবার কার্বন ডাইঅক্সাইতে পরিণত হয় ও বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে।
সৃজনশীল প্রশ্ন:
১. আমাদের চারপাশে ধাতব বস্তুগুলো আস্তে আস্তে ক্ষয় হয়ে পড়ে । এটি একটি পরিবর্তন। আবার আমাদের পরিবেশের পানি আস্তে আস্তে শুকিয়ে যায়। তারপর মেঘ হয় এবং বৃষ্টি হয়। এটিও এক ধরনের পরিবর্তন। আবার কাঠ পুড়ালে তাপ উৎপন্ন হয়। এটিও এক ধরনের পরিবর্তন।
ক. গলন কী?
খ. শিলা গঠন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের ২য় ও ৩য় পরিবর্তনের পার্থক্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ধাতুর পরিবর্তনের কারণ লেখো। এর প্রতিকার কী?
২. সোহাগ বাজার থেকে একটি ঝকঝকে ছুরি কিনল। সে ছুরিটিকে ব্যবহার না করে বারান্দার এক কোণে রেখে দিয়েছিল। অনেকদিন পর সে ছুরিটি বের করে দেখল যে ছুরিটির গায়ে লাল রং এর একটি আবরণ পড়েছে।
ক. তাপহারী বিক্রিয়া কাকে বলে?
খ. গ্রাফাইট রূপান্তরিত শিলা কেন?
গ. সোহাগের ছুরিটির গায়ে যে আবরণটি পড়েছে সেটি কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ছুরিটির এই আবরণের জন্য যে গ্যাসটি দায়ী মানবজীবনে তার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
৩. সাথী গ্রামে গিয়ে, একদিন বারান্দায় পুরানো গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে ছিল ৷ সে লক্ষ করল, কিছু লোহার গুঁড়ার মত অংশ তার হাতে লেগেছে। সে বাড়ির লোকদেরকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলল।
ক. গ্রাফাইট কী?
খ. আগ্নেয় শিলা কীভাবে তৈরি হয়েছে?
গ. বারান্দার গ্রীলগুলোর এরূপ অবস্থার কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. গ্রীলগুলোর এরূপ অবস্থা রোধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেত বলে তুমি মনে করো।
৪. মি. সাইদুর রহমান তাঁর বাড়ির সমস্ত লৌহাজাত জিনিসপত্র আর্দ্র বাতাসে কিছুদিন রেখে লক্ষ করলেন, কিছু জিনিসে মরিচা ধরেছে আর কিছুতে মরিচা ধরে নাই।
ক. বাষ্পীভবন কাকে বলে?
খ. কোয়ার্টজ কেন রূপান্তরিত শিলা?
গ. কিছু জিনিসপত্রে কেন মরিচা পড়েনি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উল্লিখিত রাসায়নিক বস্তুটি রোধে সাইদুর সাহেব কী করতে পারেন? পরামর্শ দাও।
৫. পরীক্ষাগারে ম্যাগনেসিয়াম রিবনের একটি ছোট টুকরাকে স্পিরিট ল্যাম্পের শিখায় ধরা হলো। এতে রিবনটি প্রজ্জলিত শিখাসহ জ্বলতে লাগলো। এক সময় দেখা গেল শুধু ল্যাম্পের শিখা জ্বলছে।
ক. স্ফুটন কী?
খ. স্টেইনলেস স্টীলের তৈরি জিনিসে মরিচা পড়ে না কেন?
গ. স্পিরিট ল্যাম্প ধরার সাথে সাথে রিবনটি প্রজ্জলিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উপরিউক্ত ঘটনায় কী ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে বিশ্লেষণ করো।
৬. সুমন লোহার তৈরি একটি ছুরিকে দীর্ঘদিন খোলা বাতাসে রেখে দিল। তারপর সে ছুরিটি ব্যবহার করতে গিয়ে দেখে তার ছুরিতে বাদামী রঙের আস্তরণ পড়ে গেছে।
ক. বাদামী রঙের আস্তরণটির সংকেত লেখো।
খ. ছুরিতে কীভাবে বাদামী রঙের আস্তরণটি পড়লো?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত বাদামী রঙের আস্তরণটি কীভাবে লোহার ক্ষতি করে বর্ণনা করো।
ঘ. কোন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে লোহাকে বাদামী আস্তরণ থেকে রক্ষা করা যাবে তোমার নিজস্ব মতামত দাও।
৭. সৃষ্টির শুরুতে পৃথিবীর তাপমাত্রা অনেক বেশী ছিল । অতঃপর ধীরে ধীরে তাপ কমে ভূ-অভ্যন্তরে এক প্রকার শিলার সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীতে অন্য শিলায় পরিণত হয়।
ক. পাললিক শিলা কী?
খ. মরিচা কীভাবে সৃষ্টি হয়?
গ. উদ্দীপকে কোন শিলার কথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত শিলার গঠন প্রক্রিয়া পানি চক্রের কোন প্রক্রিয়ার মতো? যুক্তি দাও।
৮. সাঈফ মাহমুদ তার নতুন ঘরের জানালায় লোহার তৈরি গ্রিল লাগালেন। কয়েকদিন যেতে না যেতেই গ্রিলে বাদামি আস্তরণ পড়তে শুরু করলো। সাঈফ মাহমুদ চিন্তা করেন, কাঠের তৈরি দরজা ক্ষয় হলো না অথচ লোহার তৈরি জানালার গ্রিল ক্ষয় হয়ে গেল।
ক. ভৌত পরিবর্তন কাকে বলে?
খ. স্টেইনলেস স্টিলে লোহার মতো মরিচা পড়ে না কেন?
গ. উদ্দীপকের সাঈফ মাহমুদের জানালার গ্রিল ক্ষয় হয়েছে কেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সাঈফ মাহমুদের গ্রিলকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষার উপায় বিশ্লেষণ করো।
৯. জাহিদ, আবরার ও রাওহা স্কুলের পরীক্ষাগারে ৩টি পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছিল। জাহিদ যে পরীক্ষাটি দেখেছিল তার উপকরণ হলো ম্যাগনেসিয়াম রিবন, স্পিরিট ল্যাম্প ও আংটা। আবরার যে পরীক্ষাটি দেখেছিল তার উপকরণ হলো চক ও হাইড্রোক্লোরিক এসিড। রাওহা যে পরীক্ষাটি দেখেছিল তার উপকরণ হলো ম্যাগনেসিয়াম রিবন, পাতলা হাইড্রোক্লোরিক এসিড ও স্পিরিট ল্যাম্প ।
ক. ম্যাগমা কী?
খ. পাললিক শিলা কীভাবে গঠিত হয়- ব্যাখ্যা করো।
গ. জাহিদের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো।
ঘ. আবরার ও রাওহার পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করো।
১০. x এর মধ্যে y যোগ করলে একটি গ্যাস উৎপন্ন হয়, যা জ্বলন্ত পাটকাঠিকে নিভিয়ে দেয়। আবার z এর মধ্যে y যোগ করলে একটি গ্যাস উৎপন্ন, যা নীল শিখাসহ জ্বলে ৷
ক. রাসায়নিক পরিবর্তন কাকে বলে?
খ. উৎপন্ন গ্যাস দুটি কী কী হতে পারে? ব্যাখ্যা করো।
গ. y পদার্থটি কী হতে পারে? শনাক্ত করো।
ঘ. উৎপন্ন গ্যাস দুটির মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করো।
