সপ্তম শ্রেণি, বিজ্ঞান, নবম অধ্যায় (তাপ ও তাপমাত্রা) || Class Seven, Science, Chapter 9

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১. তাপমাত্রা কাকে বলে?
উত্তর: কোনো বস্তুর তাপীয় অবস্থা যা নির্ধারণ করে ঐ বস্তুটি অন্য বস্তুর সংস্পর্শে আসলে তাপ গ্রহণ করবে না তাপ বর্জন করবে, তাকে তাপমাত্রা বলে।

২. ঊর্ধ্ব স্থিরাঙ্ক কাকে বলে?
উত্তর : স্বাভাবিক চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ পানি ফুটে বাষ্পে পরিণত হয় সেই তাপমাত্রাকে ঊর্ধ্ব স্থিরাঙ্ক বলে।

৩. উষ্ণতা কী?
উত্তর: উষ্ণতা হলো বস্তুর এমন এক তাপীয় অবস্থা যা নির্ণয় করে বস্তুটি (তার সংস্পর্শে থাকা) অন্য কোন বস্তুকে তাপ দেবে নাকি অন্য কোন বস্তু থেকে তাপ নেবে। অর্থাৎ উষ্ণ বস্তু শীতল বস্তু কে তাপ দেবে বা পক্ষান্তরে শীতল বস্তু উষ্ণ বস্তু থেকে তাপ নেবে।
সপ্তম শ্রেণি, বিজ্ঞান, নবম অধ্যায় (তাপ ও তাপমাত্রা)

৪. সেলসিয়াস এবং ফারেনহাইট স্কেলের মধ্যে সম্পর্ককারী সমীকরণ কী?
উত্তর: সেলসিয়াস স্কেল এবং ফারেনহাইট স্কেলের মধ্যে সম্পর্ককারী সমীকরণটি হলো, 
C/5 = (F − 32)/9

৫. পারদ থার্মোমিটার কী?
উত্তর:
যে থার্মোমিটারে পারদ ব্যবহার করে তাপমাত্রা মাপা হয় তাই পারদ থার্মোমিটার।

৬. নিম্ন স্থিরাঙ্ক কী?
উত্তর: স্বাভাবিক চাপে যে তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ বরফ গলে পানিতে পরিণত হয় , সেই তাপমাত্রাকে নিম্ন স্থিরাঙ্ক বলে।

৭. বিকিরক কাকে বলে? 
উত্তর: যেসব পদার্থ তাপ বিকিরণ করে তাদেরকে বিকিরক বলে।

৮. তাপ সঞ্চালন কাকে বলে? 
উত্তর: দুটি জায়গায় তাপমাত্রার পার্থক্য থাকলে, অধিক তাপ মাত্রার জায়গায় থেকে কম তাপমাত্রার জায়গার দিকে তাপের প্রবাহ হয়। একেই তাপের সঞ্চালন বলা হয়।

৯. মানুষের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয় কী দিয়ে? 
উত্তর: মানুষের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয় থার্মোমিটার দিয়ে।

১০. ফারেনহাইট স্কেলের ঊর্ধ্ব ও নিম্ন স্থিরাঙ্কের মধ্যবর্তী ব্যবধান কত? 
উত্তর: ফারেনহাইট স্কেলের ঊর্ধ্ব ও নিম্ন স্থিরাঙ্কের মধ্যবর্তী ব্যবধান হলো ১৮০।


অনুধাবনমূলক প্রশ্ন :
১. C/5 = (F − 32)/9 সমীকরণে 32 দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে ?
উত্তর: 32 হলো ফারেনহাইট স্কেলের নিম্ন স্থিরাঙ্ক। অর্থাৎ স্বাভাবিক চাপে যে উষ্ণতায় বিশুদ্ধ বরফ গলে পানিতে পরিণত হয় , ফারেনহাইট ফেলে তার মান 32 ° ফারেনহাইট। এটি সেলসিয়াস স্কেলে ০ ° সেলসিয়াস এর সমান।

২. শীতকালে ঠোঁট ফাটে কেন?
উত্তর: আমরা জানি, ভূ-পৃষ্ঠের পানি বাষ্প হয়ে বায়ুতে মিশে, বায়ুতে সবসময়ই এভাবে কিছু জলীয়বাষ্প থাকে যাকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে। শীতকালে বায়ুর তাপমাত্রা কম থাকে, তাই পানি কম পরিমাণে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। ফলে বায়ুর আর্দ্রতা কম থাকে। এ কারণেই শীতকালে ঠোঁট ফাটে।

৩. কাচের বোতলে ধাতব মুখ আটকে গেলে গরম করতে হয়?
উত্তর: কাচের বোতলে ধাতব মুখ আটকে গেলে ধাতব মুখটি গরম করা হয়। কারণ ধাতব মুখটি তাপ পেয়ে প্রসারিত হয়ে বোতল থেকে কিছুটা আলগা হয় । এ অবস্থায় মোচড় দিলে সহজেই মুখটি খুলে যায়।

৪. একটি পাত্রে পানি রেখে উত্তপ্ত করা হলে প্রথমে পানির উচ্চতা কমে তারপর আবার বাড়তে থাকে কেন? 
উত্তর: কোনো পাত্রে পানি রেখে যদি তাপ প্রয়োগ করা হয় তাহলে প্রথমে পানির উচ্চতা কমে যাবে কারণ তাপ প্রয়োগ করার পর পানির তাপমাত্রা বাড়ার আগে পাত্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে এবং তার প্রসারণ ঘটবে অর্থাৎ পাত্রটি আকারে একটু বড় হবে এতে পানির উচ্চতা কমে যাবে। এরপরও তাপ দিতে থাকলে পানির তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে পাশাপাশি পানির প্রসারণও ঘটবে ফলে পানির উচ্চতা আবার বাড়তে থাকবে কারণ পাত্রের প্রসারণের চেয়ে পানির প্রসারণ বেশি।

৫. শীতকালে পশমের পোশাক পরা হয় কেন? 
উত্তর: শীতকালে পশমের পোশাক পরার কারণ হলো , পশমের আঁশগুলো আলগাভাবে থাকে , পশমের ফাঁকে ফাঁকে বাতাস আটকে থাকে। পশম এবং বাতাস তাপ কুপরিবাহী বিধায় পশমের কাপড় পরলে দেহের তাপ বাইরে যেতে পারে না। তাই পশমের পোশাক পরলে আমরা গরম বোধ করি । এজন্য শীতকালে পশমের পোশাক পরা হয়।

৬. খড়ের চালের ঘর গ্রীষ্মকালে ঠাণ্ডা, শীতকালে গরম অনুভূত কেন? 
উত্তর: খড় দিয়ে অনেক সময় ঘরের চাল তৈরি করা হয়। এ চালে খড়ের সাথে অনেক বায়ুও আটকে থাকে। খড় ও বায়ু তাপ কুপরিবাহী । তাই গরমের দিনে বাইরে সূর্যের প্রচণ্ড তাপ খড়ের ভেতরে পরিবাহিত হয়ে আসতে পারে না। ফলে ঘর ঠাণ্ডা থাকে। আবার শীতকালে ঘরের ভিতরের তুলনায় বাইরে উষ্ণতা কম থাকে। ঘরের ভিতরের তাপ বাইরে যেতে পারে না বলে ঘর গরম থাকে।

৭. রুটি সেঁকার সময় ফুলে উঠে কেন? 
উত্তর : আটার সাথে পানি মিশিয়ে রুটি তৈরি করা হয়। রুটির ভেতরের পানি গরম হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। রুটি যখন গরম তাওয়ায় বসানো হয় তখন জলীয় বাষ্প আরও তাপ পেয়ে প্রসারিত হয় । এজন্য রুটি সেঁকার সময় ফুলে উঠে।

সৃজনশীল প্রশ্ন:
১. আনিকা অল্পবয়সের হলেও দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা সে মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করে। একদিন সে ভাত রান্নার সময় পাতিলের বুদবুদের ধাক্কায় ঢাকনাটি পড়ে যেতে দেখলো অন্যদিকে তাদের কাঠের দরজায় গ্রীষ্মকালে কোনো ফাঁক না থাকলেও শীতকালে কিছু ফাঁক লক্ষ করল। উল্লিখিত দুটো ঘটনাই তাকে ভাবিয়ে তুলল।
ক. কোন পদার্থ তাপে সবচেয়ে বেশি প্রসারিত হয়?
খ. রেললাইনের সংযোগ স্থলে ফাঁক রাখা হয় কেন?
গ. ভাত রান্নার সময় আনিকার পর্যবেক্ষণকৃত ঘটনাটির কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আনিকার পর্যবেক্ষণকৃত কাঠের দরজার শীত ও গ্রীষ্মে দ্বৈত হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করো।

২. রিকি গত ৩ দিন যাবৎ জ্বরে ভুগছে। চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি পরীক্ষা করে বললেন রিকির শরীরের তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট। চিকিৎসক ঔষধ সেবনের সাথে সাথে একটি থার্মোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে প্রতি ঘণ্টায় তার দেহের তাপমাত্রা পরিমাপ করে লিপিবদ্ধ করার পরামর্শ দিলেন।
ক. তাপমাত্রা কাকে বল?
খ. নিম্ন স্থিরাঙ্ক ও ঊর্ধ্ব স্থিরাঙ্ক বলতে কী বোঝায় তা ব্যাখ্যা করো।
গ. রিকির শরীরের তাপমাত্রা সেলসিয়াস স্কেলে নির্ণয় করো।
ঘ. চিকিৎসক যে যন্ত্রটির কথা বলেছিলেন তার গঠন বর্ণনা করো এবং উক্ত যন্ত্রটি দ্বারা দিনের তাপমাত্রা নির্ণয় করা যাবে কি? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করো।

৩. বিজ্ঞান ক্লাসে শিক্ষক ফারেনহাইট ও সেলসিয়াস স্কেলে দাগাঙ্কিত একটি থার্মোমিটার নিয়ে গেলেন। ছাত্ররা প্রশ্ন করল কেন থার্মোমিটারে পারদ ব্যবহার করা হয়। শিক্ষক এক ছাত্রের তাপমাত্রা মেপে দেখলেন যে, তাপমাত্রা ৯৭° ফারেনহাইট।
ক. বিকিরক কী?
খ. পৃথিবীকে একই সাথে তাপের বিকিরক ও শোষক বলা হয় কেন?
গ. ছাত্রের তাপমাত্রা সেন্টিগ্রেড স্কেলে কত হবে হিসাব করে বের করো।
ঘ. উল্লিখিত থার্মোমিটারে পারদ ব্যবহারের কারণ বিশ্লেষণ করো।

৪. স্কুল থেকে ফেরার পথে শ্রাবন্তী বৃষ্টিতে ভিজে বাসায় পৌছাল। ঐ রাতে তার প্রচণ্ড জ্বর আসে। মা ডাক্তার ডেকে আনলেন। ডাক্তার শ্রাবন্তীর শরীরের তাপমাত্রা মেপে জানালেন ১০৩° F। ডাক্তার শ্রাবন্তীর জন্য কিছু ঔষুধ লিখে দিয়ে গেলেন।
ক. মানুষের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত?
খ. তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বদ্ধ পাত্রে বায়ুচাপ বাড়ে তবে বায়ুমণ্ডলে কমে কেন?
গ. শ্রাবন্তীর শরীরের তাপমাত্রা সেলসিয়াস স্কেলে কত হবে?
ঘ. শ্রাবন্তীর তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রটিতে কোন প্রক্রিয়ায় পারদের উচ্চতা বাড়ছিল—–বিশ্লেষণ করো।

৫. তাপ প্রয়োগে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের প্রসারণ হয়। আবার সূর্য পৃথিবী থেকে অনেক দূরে হওয়া সত্ত্বেও সূর্যের তাপে পৃথিবী উত্তপ্ত হয়।
ক. ঊর্ধ্ব স্থিরাঙ্ক কী?
খ. মরু অঞ্চলে দিনে তীব্র গরম ও রাতে তীব্র শীত অনুভূত হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে কঠিন পদার্থের প্রসারণের ক্ষেত্রে পিতলের তৈরি বল ও রিং পরীক্ষাটি দেখাও ।
ঘ. উদ্দীপকের ২য় ঘটনাসহ বিভিন্ন পদার্থে তাপ সঞ্চালনের সক্রিয়া বর্ণনা করো।

৬. সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান শিক্ষক ফারেনহাইট ও সেলসিয়াস স্কেলে দাগাঙ্কিত দুটি থার্মোমিটার নিয়ে গেলেন। ছাত্ররা জিজ্ঞাসা করলেন কেন থার্মোমিটারে পারদ ব্যবহার করা হয়। শিক্ষক একজন ছাত্রের দেহের তাপমাত্রা মাপলেন এবং দেখলেন তা ৯৭° ফারেনহাইট।
ক. কোন পদার্থ তাপে বেশি প্রসারিত হয়?
খ. তাপ ও তাপমাত্রা একই বিষয় নয়- ব্যাখ্যা করো। গ. ছাত্রের তাপমাত্রা সেন্টিগ্রেড স্কেলে কত হবে?
ঘ. উল্লেখিত যন্ত্রে পারদ ব্যবহারের কারণ বিশ্লেষণ করো।

৭. শাহেরা প্রচণ্ড জ্বরে কাঁপছে, এটা দেখে তার মা রাহেলা বেগম ডাক্তার ডেকে আনলেন, ডাক্তার শাহেরার শরীরের তাপমাত্রা জানালেন ৪০° সেলসিয়াস, ডাক্তার কিছু ঔষধ লিখে দিয়ে গেলেন, ঔষধ খেয়ে শাহেরার গায়ের তাপমাত্রা আস্তে আস্তে কমে আসে।
ক. আর্দ্রতা কী?
খ. দুটি রেল লাইনের মাঝে ফাঁক রাখা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. কোন তাপমাত্রায় উদ্দীপকে আলোচিত স্কেল ও ফারেনহাইট স্কেলের একই তাপমাত্রা হয়?
ঘ. রাহেলা বেগমের ডাক্তার ডাকা কতটা যুক্তিযুক্ত আলোচনা করো।

৮. মাহবুব তার বিজ্ঞান বই থেকে কঠিন পদার্থের প্রসারণ সম্পর্কে জেনেছে। সে জেনেছে কেন বিদ্যুতের তার টানটান করে না দিয়ে কিছুটা ঝুলিয়ে রাখা হয়। গরমকালে আমাদের ঘরের দরজা শীতকাল অপেক্ষা আঁটসাঁট হয়ে বন্ধ হয় কেন? লোহাতে আগুন ধরালে কী হয়? সে তার চারপাশেই কঠিন পদার্থের প্রসারণের অজস্র প্রমাণ পায়।
ক. কঠিন পদার্থে তাপের প্রভাব কী?
খ. শীতকালে ঠোঁট ফাটে কেন?
গ. উল্লিখিত বিষয়টি আমাদের জীবনে ঘটে এমন ঘটনার প্রয়োগ দেখাও।
ঘ. উল্লিখিত বিষয়টি রেললাইনে কীভাবে প্রভাব ফেলে— বিশ্লেষণ করো।

৯. মাহবুব তার বিজ্ঞান বই থেকে কঠিন পদার্থ সম্পর্কে জেনেছে। সে জেনেছে কেন বিদ্যুতের তার টানটান করে না দিয়ে কিছুটা ঝুলিয়ে রাখা হয়। গরমকালে আমাদের ঘরের দরজা শীতকাল অপেক্ষা আটসাঁট হয়ে বন্ধ হয় কেন? লোহাতে আগুনে ধরলে কী হয়। সে তার চারপাশেই কঠিন পদার্থের প্রসারণের অজস্র প্রমাণ পায়।
ক. কঠিন পদার্থে তাপের প্রভাব কী?
খ. শীতকালে ঠোঁট ফাটে কেন?
গ. উল্লিখিত বিষয়টির বাস্তবজগতে কিছু প্রয়োগ দেখাও ৷
ঘ. উল্লিখিত বিষয়টি রেল লাইনে কীভাবে প্রভাব ফেলে? বিশ্লেষণ করো।

১০. ডিসেম্বর মাসে নারিকেল তেল মাথায় দিতে গিয়ে সামিহা দেখল যে শীতে সব তেল জমে গেছে। তাই সে নারিকেল তেলের কৌটাটি একটি গরম চুলার ওপর রেখে কিছুক্ষণ তাপ দিল। কিছুক্ষণ পর সে দেখল কৌটার সব নারিকেল তেল তরলে পরিণত হয়েছে। সামিহা ঐ গরম তেল হাতে নেওয়ার চেষ্টা করল কিন্তু পারল না।
ক. তাপ কী?
খ. রুটি সেঁকার সময় তা ফুলে উঠে কেন?
গ. উদ্দীপকে সামিহা ঐ তেল হাতে নিতে পারল না কেন? ব্যাখ্যা করো ।
ঘ. উদ্দীপকে যে প্রক্রিয়ায় কৌটার নারিকেল তেলে তাপ সঞ্চালিত হয় তা বিশ্লেষণ করো।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url