সপ্তম শ্রেণি, বাওবি সপ্তম অধ্যায় (বাংলাদেশের জলবায়ু) || Class Seven, BGS Chapter 7 (Climate of Bangladesh)
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১। আবহাওয়া কী?
উত্তর: আবহাওয়া হচ্ছে কোনো একটি অঞ্চলের একদিন বা কয়েকদিনের কোনো বিশেষ সময়ের বাতাসের চাপ, তাপ ও আর্দ্রতা।
২। গ্রিন হাউস গ্যাস কী?
উত্তর: কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড , ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন প্রভৃতি গ্যাসকেই একসাথে গ্রিন হাউস গ্যাস বলা হয়।
৩. সিডর ও আইলা কী?
উত্তর: সিডর ও আইলা হলো সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া দুটি বড় ঘূর্ণিঝড়।
৪। বাংলাদেশ কোন অঞ্চলে অবস্থিত?
উত্তর: বাংলাদেশ ক্রান্তীয় অঞ্চলে।
৫। আবহাওয়া কী?
উত্তর: আবহাওয়া হলো কোনো একটি অঞ্চলের একদিন বা কয়েক দিনের কোনো বিশেষ সময়ের বাতাসের চাপ, তাপ ও আর্দ্রতা।
৬। বাংলাদেশের জলবায়ুর নাম কী?
উত্তর: বাংলাদেশের জলবায়ুর নাম হচ্ছে— ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু।
৭. বাংলাদেশের জলবায়ু কেমন?
উত্তর: বাংলাদেশের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ।
৮. নাতিশীতোষ্ণ মানে কী?
উত্তর: নাতিশীতোষ্ণ মানে হচ্ছে খুব শীতও না খুব গরমও না।
৯. কোন মাস থেকে বাংলাদেশে গ্রীষ্ম ঋতু শুরু হয়?
উত্তর: বৈশাখ মাস থেকে বাংলাদেশে গ্রীষ্ম ঋতু শুরু হয়।
১০. বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস বেশি হয় কখন?
উত্তর: বাংলাদেশে এপ্রিল - মে ও অক্টোবর - নভেম্বর মাসে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস বেশি হয়।
১১. শীতকালে বাংলাদেেশর তাপমাত্রা কত থাকে?
উত্তর: শীতকালে বাংলাদেেশর তাপমাত্রা ১১ ° -২৯° ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে।
১২. কোন বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টি হয়?
উত্তর: মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টি হয়।
১৩. কখন নদীভাঙনের পরিমাণ বেড়ে যায়?
উত্তর: বর্ষাকালে নদীভাঙনের পরিমাণ বেড়ে যায়।
১৪. বাংলাদেশ কোন ধরনের দেশ?
উত্তর: বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ।
১৫. সারা পৃথিবীতেই জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ কী?
উত্তর: সারা পৃথিবীতেই জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন।
১৬. কবে বাংলাদেশে সিডর হয়?
উত্তর: ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশে সিডর হয়।
১৭. বাংলাদেশে আইলা হয় কবে?
উত্তর: বাংলাদেশে আইলা হয় ২০০৯ সালের ৫ মে।
১৮. বাংলাদেশের প্রায় সব নদীর উৎস কোথায়?
উত্তর: বাংলাদেশের প্রায় সব নদীর উৎস হচ্ছে ভারতে।
১৯. শীতকালে উত্তর দিক থেকে আসা হিমপ্রবাহ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে কোন পর্বতমালা?
উত্তর: শীতকালে উত্তর দিক থেকে আসা হিমপ্রবাহ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে হিমালয় পর্বতমালা।
২০. মানুষের তৈরি গ্রিনহাউস গ্যাসের মধ্যে কোনটির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি?
উত্তর: মানুষের তৈরি গ্রিনহাউস গ্যাসের মধ্যে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
২১. ২০০৭ সালের ১৫ ই নভেম্বর সিডরে কত লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল?
উত্তর: ২০০৭ সালের ১৫ ই নভেম্বর সিডরে প্রয় ৩০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
২২. মৌসুমি বায়ু কী?
উত্তর: বর্ষাকালে বাংলাদেশে বঙ্গোপসাগর হতে জলীয় বাষ্পপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিমে যে বায়ু প্রবাহিত হয় তাই মৌসুমি বায়ু।
২৩. কিসের প্রভাবে বাংলাদেশে বেশি বৃষ্টিপাত হয়?
উত্তর: মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে বেশি বৃষ্টিপাত হয়।
২৪. বাংলাদেশের জলবায়ুকে কী বলা হয়?
উত্তর: বাংলাদেশের জলবায়ুকে সমভাবাপন্ন বলা হয়।
২৫. আইলা হয়েছিল কত সালে?
উত্তর: আইলা হয়েছিল ২০০৯ সালের ২৫ শে মে।
২৬. টর্নেডো কী?
উত্তর: টর্নেডো হলো একটি প্রচণ্ড গতিসম্পন্ন এক ধরনের ঘূর্ণিঝড়।
২৭. খরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী করতে হবে?
উত্তর: খরা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য পর্যাপ্ত বনায়ন এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পরীক্ষা করে মাটির নিচ থেকে পানি উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।
২৮. অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি হলে কোন কোন দুর্যোগ ঘটার সম্ভাবনা থাকে?
উত্তর: অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি হলে বন্যা ও নদীভাঙন ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
২৯. বর্তমান ফসলের ব্যাপক ক্ষতির কারণ কী?
উত্তর: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১. মৌসুমি বায়ু সম্পর্কে কী জান?
উত্তর: বর্ষাকালে বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ দিক থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ যে বাতাস বয়ে যায় তাকে মৌসুমি বায়ু বলা হয়। এ বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। তবে দেশের সব এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সমান হয় না।
উত্তর: বর্ষাকালে বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ দিক থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ যে বাতাস বয়ে যায় তাকে মৌসুমি বায়ু বলা হয়। এ বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। তবে দেশের সব এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সমান হয় না।
২. গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: গ্রিন হাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলে অতিরিক্ত মাত্রায় সঞ্চারিত হয়ে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এ গ্যাস জলবায়ু পরিবর্তন বা পরিবেশের বিপর্যয়ের জন্য বহুলাংশে দায়ী। গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধির ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে গিয়ে প্রকৃতিতে খরার সৃষ্টি করে । ফলে ফসল উৎপাদন কমে যায়।
৩. বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো বর্ণনা কর।
উত্তর: বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। এদেশে নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। এসব দুর্যোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, নদীভাঙন, খরা, শৈত্যপ্রবাহ, টর্নেডো, কালবৈশাখী প্রভৃতি। এছাড়াও বাংলাদেশ ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
৪. পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন?
উত্তর: অগ্ন্যুৎপাতের ফলে নির্গত গ্যাস, লাভা, ছাই প্রভৃতি বায়ুমণ্ডলে মিশে যে বাধার সৃষ্টি করে তাতে সূর্যরশ্মি থেকে আসা তাপ পৃথিবীপৃষ্ঠে আটকে থাকে। এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া বায়ুমণ্ডলের গ্রিন হাউস গ্যাস অতিরিক্ত মাত্রায় সঞ্চারিত হয়েও পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে।
৫. আবহাওয়া বলতে কী বোঝ?
উত্তর: আবহাওয়া হলো কোনো একটি অঞ্চলের একদিন বা দিনের কোনো বিশেষ সময়ের বাতাসের তাপ, চাপ, আর্দ্রতা। তাপমাত্রা , বায়ুর চাপ ও গতি, বাতাসের আর্দ্রতা এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হিসাব করে এটা নির্ধারণ করা হয়।
৬. জলোচ্ছ্বাস বলতে কী বোঝ?
উত্তর: সমুদ্রে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও ঝড়ের ফলে সমুদ্রের লোনা পানি বিশাল উচ্চতা নিয়ে তীব্রবেগে উপকূলে আছড়ে পড়ে স্থলভাগকে প্লাবিত করাকে জলোচ্ছ্বাস বলে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে এ পর্যন্ত কয়েকবার জলোচ্ছ্বাস মারাত্মকভাবে আঘাত হেনেছে। এতে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
৭. শীতকাল এখানে দীর্ঘ হয় না কেন?
উত্তর: হিমালয় পর্বতমালা যদিও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী নয়; তবুও তা শীতকালে বাংলাদেশকে সাইবেরীয় হিমপ্রবাহ থেকে রক্ষা করে। আর তাই শীতকাল এখানে দীর্ঘ হয় না।
৮. খরা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: খরা বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সাধারণভাবে বলতে গেলে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাতের অভাবে ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেলে খরা হয়। কিন্তু বিশেষভাবে বলতে গেলে বৃষ্টিপাতের অভাব ছাড়াও বিভিন্ন নদীর উজানে রাঁধ নির্মাণ, পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি কারণে খরা দেখা দিয়ে থাকে।
৯. কালবৈশাখীর ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর: কালবৈশাখী হলো এক ধরনের ক্ষণস্থায়ী ও স্থানীয়ভাবে সৃষ্ট প্রচণ্ড ঝড়। বৈশাখ মাসেই এ জাতীয় ঝড় বেশি হয় বলে একে কালবৈশাখী বলা হয়। সাধারণত উত্তর - পশ্চিম দিক থেকে এ ঝড়টি আসে।
১০. বর্ষাকালে অধিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বর্ষাকালে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে আসার সময় প্রচুর জলীয় বাষ্প সমৃদ্ধ থাকে। এ জলীয় বাষ্প হিমালয় পর্বতমালা ও বাংলাদেশের পাহাড় এলাকায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। বছরের মোট বৃষ্টিপাতের প্রায় ৮০ ভাগ এ সময়ে হয়।
১১. পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য উন্নত দেশগুলোকে দায়ী করা হয় কেন?
উত্তর: পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোরও জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণ প্রায় একই। তবে পৃথিবীর শিল্পোন্নত দেশগুলো যে পরিমাণ জ্বালানি ব্যবহার করে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো ততটা করে না। সুতরাং পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য উন্নত দেশগুলোই বেশি দায়ী। যদিও তার ফলটা উন্নয়নশীল দশগুলোরই বেশি ভোগ করতে হয়।
১২. ঘূর্ণিঝড়ের সময় আমাদের করণীয় উল্লেখ কর।
উত্তর: ঘূর্ণিঝড়ের আগে সাধারণত আবহাওয়া বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পূর্বাভাস ও সতর্ক বাণী প্রচার করা হয়। আমরা যদি সে সতর্ক বাণী মেনে আগে থেকে সাবধান হই, তবে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় প্রাণহানি এড়ানো যায়। এ সময় দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র বা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।
১৩. খরা কৃষির জন্য বিরাট হুমকি কেন?
উত্তর: খরার কারণে মাটির উপরের পানি শুকিয়ে যেতে থাকে। খরার সময়ে খুব জোরে যখন বাতাস বইতে থাকে তখন উপরের মাটি সরে যায়। শস্যের উপযোগী উপরিভাগের এ মাটি সরে যাওয়ার ফলে চাষাবাদে দারুণ অসুবিধা হয়। তাই খরাকে কৃষির জন্য একটি বিরাট হুমকি বলা হয়।