সপ্তম শ্রেণি, বাওবি অষ্টম অধ্যায় (বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিচিতি) || Class Seven, BGS Chapter 8 (Population identity of Bangladesh)

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১. বাংলাদেশের আয়তন কত ?
উত্তর: বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার।

২. অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের কারণে সবচেয়ে বেশি উপকার হয়েছে কার?
উত্তর :
অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের কারণে সবচেয়ে বেশি উপকার হয়েছে গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের।

৩. বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে কতজন লোক বাস করে?
উত্তর:
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১,২৫২ জন লোক বাস করে।

৪. ১৯৭৪ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এদেশের জনসংখ্যা কত ছিল?
উত্তর:
১৯৭৪ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এদেশের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৭.৬৪ কোটি।

৫. একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান শক্তি কী?
উত্তর:
একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান শক্তি হচ্ছে জনসংখ্যা।

৬. অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ কোন ধরনের দেশ?
উত্তর:
অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ।

৭. পৃথিবীর ঘনবসতিপূর্ণ দেশ কোনটি?
উত্তর:
পৃথিবীর ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।

৮. বাংলাদেশের আয়তন কত বর্গকিলোমিটার?
উত্তর:
বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার ।

৯. ২০১১ সালে এদেশের জনসংখ্যা কত ছিল?
উত্তর:
২০১১ সালে এদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৪ জন।

১০. ১৯৭৪ সালে এ দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত ছিল?
উত্তর:
১৯৭৪ সালে এ দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২.৬৪ %।

১১· একটি দেশের জনসংখ্যার বয়স কাঠামোকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর:
  একটি দেশের জনসংখ্যার বয়স কাঠামোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

১২. বাংলাদেশের কোন এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে কম?
উত্তর:
বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে কম।

১৩. শিশু মৃত্যুহার কী?
উত্তর:
শিশু মৃত্যুহার হলো প্রতি বছরে জীবিত জন্মগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে প্রতি হাজারে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা।

১৪. বাল্যবিবাহের কারণে কী বৃদ্ধি পায়? 
উত্তর: বাল্যবিবাহের কারণে শিশু জন্মহার বৃদ্ধি পায়।

১৫. দেশান্তর কাকে বলে?
উত্তর:
দুই দেশের মধ্যে অধিবাসীদের স্থানান্তরকে দেশান্তর বলে।

১৬ আন্তঃস্থানান্তর কাকে বলে?
উত্তর:
দেশের ভিতরে এক এলাকার লোক অন্য এলাকায় গিয়ে স্থায়িভাবে বসবাস করলে তাকে আন্তঃস্থানান্তর বলে ।

১৭. ২০১৫-১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা কত?
উত্তর:
১৫ কোটি ৯৯ লক্ষ।

১৮. জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধির হার কিসের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর:
জন্মহার ও মৃত্যুহারের ওপর জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধির হার নির্ভর করে।

১৯. জনসংখ্যার পরিবর্তনশীলতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:
জনসংখ্যার কাঠামোগত পরিবর্তনকে জনসংখ্যার পরিবর্তনশীলতা বলে।

২০. একটি দেশের নির্ভরশীল জনসংখ্যা কিসের ওপর চাপ সৃষ্টি করে?
উত্তর:
একটি দেশের নির্ভরশীল জনসংখ্যা সীমিত সম্পদের ওপর প্রভাব চাপ সৃষ্টি করে।

২১. নদীভাঙন এলাকার মানুষ কিসের তাগিদে শহরে আসে?
উত্তর:
নদীভাঙন এলাকার মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে শহরে আসে।

২২. মানুষ বাধ্য হয়ে স্থানান্তরিত হয় কেন?
উত্তর:
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মানুষ বাধ্য হয়ে স্থানান্তরিত হয়।

২৩ বাংলাদেশের কোন শিল্পে বিপুল পরিমাণ নারী শ্রমিক কাজ করে?
উত্তর:
বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে বিপুল পরিমাণ নারী শ্রমিক কাজ করছে।

২৪. পারিবারিক বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ কী?
উত্তর:
পারিবারিক বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ হলো মাতৃমৃত্যু।

২৫. ২০০৫ সালে বাংলাদেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব কত ছিল?
উত্তর:
২০০৫ সালে বাংলাদেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল ৯০৪ জন।

২৬. ২০০৯ সালে বাংলাদেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব কত ছিল?
উত্তর:
২০০৯ সালে বাংলাদেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল ৯৫৩ জন।

২৭. ২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব কত ছিল?
উত্তর:
২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল ৯৯০ জন।

২৮. বাংলাদেশে প্রতিবছর কত লক্ষ শিশু জন্মগ্রহণ করে?
উত্তর:
বাংলাদেশে প্রতিবছর ২৫ লক্ষ শিশু জন্মগ্রহণ করে ।

২৯. বাংলাদেশে প্রতিবছর কত লক্ষ লোক মৃত্যুবরণ করে?
উত্তর:
বাংলাদেশে প্রতিবছর ৬ লক্ষ লোক মৃত্যুবরণ করে। 

৩০. বাংলাদেশে প্রতিবছর কত লক্ষ লোক বৃদ্ধি পাচ্ছে? 
উত্তর: বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৯ লক্ষ লোক বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৩১. আগামী তিন দশকে বাংলাদেশে শতকরা কত ভাগ নির্ভরশীল জনসংখ্যা থাকবে?
উত্তর:
আগামী তিন দশকে বাংলাদেশে শতকরা ৪০ ভাগ নির্ভরশীল জনসংখ্যা থাকবে।

৩২. আগামী তিন দশকে বাংলাদেশে শতকরা কত ভাগ কর্মক্ষম জনসংখ্যা থাকবে?
উত্তর:
আগামী তিন দশকে বাংলাদেশের শতকরা ৬০ ভাগ কর্মক্ষম জনসংখ্যা থাকবে।

৩৩. কোন দেশে আবাসন সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করছে?
উত্তর:
বাংলাদেশে আবাসন সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করছে।

৩৪. আইনগতভাবে ছেলেদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম কত বছর নির্ধারণ করা হয়েছে?
উত্তর:
আইনগতভাবে ছেলেদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম ২১ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।

৩৫. আইনগতভাবে মেয়েদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম কত বছর নির্ধারণ করা হয়েছে?

উত্তর: আইনগতভাবে মেয়েদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।


অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১. জনসংখ্যা কীভাবে জনসম্পদে পরিণত হতে পারে?
উত্তর: যদি জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা যায় তবেই জনসংখ্যা একটি দেশের জন্য জনসম্পদে পরিণত হতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান ব্যবস্থা উন্নয়ন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার এ ধরনের বহু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দক্ষ জনসম্পদ শুধু দেশের জন্য নয় বরং বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে।

২. বাংলাদেশের মাতৃ - মৃত্যুর কারণ ব্যাখা কর।
উত্তর: আমাদের দেশে বাল্যবিবাহের কারণে মেয়েরা অল্পবয়সে গর্ভধারণ করে। গর্ভকালীন সময়ে, অবহেলা, অজ্ঞতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি প্রভৃতি কারণে মায়েরা প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। ফলে তারা মাতৃত্বকালীন নানা জটিলতায় ভোগে এবং মৃত্যুবরণ করে। তাছাড়া মাতৃমৃত্যুর আরও অনেক কারণ রয়েছে। যেমন- নিম্ন জীবনযাত্রা, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও দুর্বল সেনিটেশন ব্যবস্থা, নারী শিক্ষার অভাব, চিকিৎসার অভাব; ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাত, প্রসবকালীন উচ্চ রক্তচাপ , একলেমশিয়া প্রভৃতি।

৩. জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ কোনটি? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো মৃত্যুহার হ্রাস। পূর্বে পৃথিবীব্যাপী বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশু মৃত্যুহার অধিক ছিল। হাম, পোলিও , ধনুষ্টংকার, ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, যক্ষ্মা ইত্যাদি রোগে অনেক শিশুর মৃত্যু ঘটত। কিন্তু এসব মারাত্মক রোগের প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার ও ব্যবহারের ফলে অনেক শিশু অকালমৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাচ্ছে। খাওয়ার স্যালাইনের ব্যবহার , চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতি, প্রসূতি মায়ের মৃত্যুহ্রাস প্রভৃতি কারণে উল্লেখযোগ্য হারে মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে। ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৪. অশিক্ষা কীভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: অশিক্ষা জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অশিক্ষা মানুষকে অজ্ঞতা আর কুসংস্কারের শিক্ষা দিয়ে থাকে । ফলে মানুষ অধিক সন্তান জন্মদানে কোনো সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করে না। তাছাড়া , অশিক্ষার কারণে সৃষ্ট কুসংস্কার তাদের সন্তান জন্মদানে উৎসাহ প্রদান করে। এর ফলে জনসংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায়।

৫. বাংলাদেশকে পৃথিবীর ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বলা হয় কেন?
উত্তর: বাংলাদেশের আয়তন অনুসারে জনসংখ্যা বেশি। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১,২৫২ জন বাস করে, যা পৃথিবীর যেকোনো দেশের লোকসংখ্যার ঘনত্বের তুলনায় অনেক বেশি। আর তাই বাংলাদেশকে পৃথিবীর ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বলা হয়।

৬. জন্মহার কমবেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: যে দেশ যত বেশি শিক্ষিত সে দেশ তত বেশি উন্নত । জ্ঞানের পরিবর্তনের প্রভাব শিক্ষিত লোকের ধ্যানধারণার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। ফলে তারা ছোট পরিবার গঠন করে। শিক্ষিত জনগণের জন্মহার কম। অশিক্ষিত জনগণের জন্মহার বেশি। পেশাগত কারণে জন্মহারের তারতম্য ঘটে । যেমন- কৃষক, শ্রমিক, জেলে এদের জন্মহার বেশি। ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার প্রভৃতি পেশাজীবী শ্রেণির জন্মহার কম।

৭. জনসংখ্যা কখন দেশের জন্য সম্পদ হতে পারে? ব্যাখ্যা কর ।
উত্তর: জনসংখ্যা দেশের জন্য সম্পদ হতে পারে, যদি জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা যায়। প্রবাসে আমাদের দেশের কয়েক লক্ষ দক্ষ ও অদক্ষ লোক শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন । তারা যে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশে প্রেরণ করছেন তা আমাদের বৈদেশিক অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। তাছাড়া আমাদের দেশের জনসম্পদের একটি বড় অংশ আত্মকর্মসংস্থানের নানা উপায় উদ্ভাবন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।

৮. জনসংখ্যার হ্রাসবৃদ্ধি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কোনো দেশে বছরে যত শিশু জন্মগ্রহণ করে তার চেয়ে বেশি মারা গেলে জনসংখ্যা হ্রাস পায়। অপরদিকে, যত শিশু জন্মলাভ করে তার চেয়ে কম মারা গেলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

৯. বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধর।
উত্তর: বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এদেশের জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৯৭ লক্ষ ৭২ হাজার ৩৬৪ জন এবং ২০১৫-১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৯৯ লক্ষে। বর্তমানে এদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,২৫২ জন। জনসংখ্যার বার্ষিক বৃদ্ধির হার ১.৩৭ শতাংশ।

১০. অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর বলতে কী বোঝ?
উত্তর: দেশের সীমানার মধ্যে একস্থান থেকে অন্যস্থানে গমন করাকে অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর বলে। ব্যবসায় বাণিজ্য, চাকরি, বসবাস ইত্যাদি নানা কারণে মানুষ একস্থান থেকে অন্যস্থানে গমন করে। অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কোনো আইন বা অনুমতির প্রয়োজন হয় না। এ ধরনের স্থানান্তর ঘটে প্রয়োজন ও ইচ্ছানুযায়ী। গ্রাম থেকে গ্রামে, শহর থেকে গ্রামে , শহর থেকে শহরে ও গ্রাম থেকে শহরে স্থানান্তরকে অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর বলে । সাধারণ অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যেই মূলত অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর হয়ে থাকে।

১১. একটি দেশের জন্য বহির্গমন গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা কর ।
উত্তর: একটি দেশের সামগ্রিক কাঠামোতে বহির্গমনের গুরুত্ব অপরিসীম। সাধারণত চাকরি, ব্যবসায় বাণিজ্য, শিক্ষা ইত্যাদি কারণে এক দেশের মানুষ অন্য দেশে স্থায়ী বা অস্থায়িভাবে স্থানান্তর করে। এর ফলে প্রথম দেশটির জনসংখ্যা কমে যায় এবং এর ওপর জনসংখ্যা সংক্রান্ত চাপও হ্রাস পায়। উপরন্তু তাদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়।

১২. জনসংখ্যার পরিবর্তনশীলতা বলতে কী বোঝ?
উত্তর: জনসংখ্যা কাঠামোর বদলে যাওয়াকে জনসংখ্যার পরিবর্তনশীলতা বলা হয়। পরিবর্তনশীলতা জনসংখ্যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এ পরিবর্তন প্রধানত জন্মহার, মৃত্যুহার, স্থানান্তর ও সামাজিক গতিশীলতার ওপর নির্ভর করে। জনসংখ্যার পরিবর্তনের এ বিষয়গুলো বয়স, লিঙ্গ, বিবাহ, সমাজকাঠামো, ধর্মীয় মূল্যবোধ, শিক্ষা, পেশা প্রভৃতির ওপরও নির্ভরশীল। যেমন- কোনো দেশে বাল্যবিবাহ বেশি হলে জন্মহার বৃদ্ধি পাবে। আর জন্মহার বৃদ্ধি পেলে নির্ভরশীল জনসংখ্যার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। এ পরিবর্তনকেই জনসংখ্যার পরিবর্তনশীলতা বলা হয়।

১৩. অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের কারণে কারা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের কারণে সবচেয়ে বেশি উপকার হয়েছে গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের। গ্রামীণ দরিদ্র নারীরা কর্মহীন থাকার কারণে পরিবার তাদেরকে বোঝা ভাবত । ফলে তারা বৈষম্য, বঞ্চনা, প্রতারণা ও নিপীড়নের শিকার হতো। বর্তমানে নারীরা শহরের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় চাকরি করছে। ফলে তাদের পারিবারিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাচ্ছে । তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেড়েছে।

১৪. আন্তর্জাতিক স্থানান্তর কীভাবে জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটায়?
উত্তর: আন্তর্জাতিক স্থানান্তর নানাভাবে জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটায়। বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা এদেশের কৃষি ও শিল্প, ব্যাংকিং সেবাখাত, গার্মেন্টস শিল্প ও নানা ধরনের লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করা হয়। এর ফলে দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এছাড়া চাকরি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এতে আমাদের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটে।

১৫. আন্তর্জাতিক স্থানান্তর কীভাবে রোগের বিস্তার ঘটে?
উত্তর: আন্তর্জাতিক স্থানান্তরের মাধ্যমে দেশে রোগের বিস্তার ঘটে। আন্তর্জাতিক স্থানান্তরিত ব্যক্তিরা দেশে ফেরার সময় বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বহন করে নিয়ে আসে। এসব ভাইরাস দেশে বিস্তার লাভ করে। ফলে রোগেরও বিস্তার ঘটে।

১৬. মাতৃহারা শিশুর মনে মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয় কেন?
উত্তর: সমাজে দেখা যায়, মায়ের মৃত্যুর পর পিতা বিয়ে করে। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নতুন যা শিশুকে সহজে গ্রহণ করতে চায় না। এসব শিশু অবহেলা ও অনাদরে বড় হয়। ফলে তাদের মনে এক ধরনের মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।

১৭। বাংলাদেশের শিশুদের একটা বিরাট অংশ মৃত্যুবরণ করে কেন?
উত্তর: দরিদ্রতার কারণে বাংলাদেশের শিশুদের একটা বিরাট অংশ মৃত্যুবরণ করে । বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। ফলে মা ও শিশু সঠিক স্বাস্থ্যসেবা, পরিচর্যা ও পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হয়। আর এ কারণেই বাংলাদেশের শিশুদের একটা বিরাট অংশ মৃত্যুবরণ করে।

১৮. বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় শিশু মৃত্যুর হার বেশি কেন?
উত্তর: বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় শিশু মৃত্যুর হার বেশি। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার অভাব, গ্রাম ও শহরের চিকিৎসা সুযোগ সুবিধার তারতম্যের কারণে এদেশে গ্রামীণ এলাকায় শিশু মৃত্যুর হার বেশি। এছাড়া গ্রামের দরিদ্র জনগণের অশিক্ষা , অজ্ঞতা, কুসংস্কার এবং অবহেলার কারণেও শিশু মৃত্যু বেশি ঘটে থাকে।

১৯. শিশু মৃত্যুর কারণে পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কেন?
উত্তর: হতাশাজনিত কারণে শিশু মৃত্যুর ফলে পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কেননা শিশুর মৃত্যুজনিত কারণে পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে। যা উপার্জনক্ষম ব্যক্তির স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে পরিবার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url