সপ্তম শ্রেণি, বাওবি নবম অধ্যায় (বাংলাদেশের প্রবীণ ব্যক্তি) || Class Seven, BGS Chapter 9 (Elderly person of Bangladesh)
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১. অবসর ভাতা কী?
উত্তর: একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত সরকারি চাকরি করে অবসর গ্রহণ করলে অবসর সময়ের জন্য বিধি মোতাবেক যে ভাতা দেওয়া হয় তাই অবসর ভাতা।
২. “নারীরা সমাজের অর্ধেক অংশ” -এর অর্থ কী?
উত্তর: ‘নারীরা সমাজের অর্ধেক অংশ' - এর অর্থ সব ব্যাপারেই নারী ও পুরুষ সমান সুযোগ লাভের অধিকারী।
৩. প্রবীণ কারা?
উত্তর: প্রবীণ তারাই যাদের বয়স ষাটের অধিক।
৪. মানুষের সব ধরনের অধিকার কোথায় লেখা আছে?
উত্তর: মানুষের সব ধরনের অধিকার মানবাধিকার সনদে লেখা আছে।
৫. অধিকার কী?
উত্তর: অধিকার হলো সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত কতোগুলো সুযোগ - সুবিধা, যা ভোগের মাধ্যমে নাগরিকের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে।
৬. অধিকারের মূল লক্ষ্য কী?
উত্তর: অধিকারের মূল লক্ষ্য হলো ব্যক্তির সর্বজনীন কল্যাণ।
৭. অধিকার ভোগের নিশ্চয়তা দানের দায়িত্ব কার?
উত্তর: অধিকার ভোগের নিশ্চয়তা দানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
৮. বাংলাদেশে কত বছর বয়সের মানুষকে প্রবীণ বলে গণ্য করা হয়?
উত্তর: বাংলাদেশে সাধারণত ষাটোর্ধ্ব বয়সের মানুষকে প্রবীণ বলে গণ্য করা হয়।
৯. সিনিয়র সিটিজেন কাদের বলা হয়?
উত্তর: উন্নত দেশগুলোতে ৬০ বা ৬৫ বছর বয়সের পর একজন মানুষকে প্রবীণ বা 'সিনিয়র সিটিজেন' বলা হয়।
১০. আমাদের দেশে কাদের প্রবীণ বলে গণ্য করা হয়?
উত্তর: আমাদের দেশে সাধারণত ষাটোর্ধ্ব বয়সের মানুষকে প্রবীণ বলে গণ্য করা হয়।
১১. প্রবীণদের কাদের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়?
উত্তর: প্রবীণদের সন্তানদের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।
১২. কোনটি প্রবীণদের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা?
উত্তর: পেনশন প্রবীণদের জন্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
১৩. বাংলাদেশে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স কত বছর?
উত্তর: বাংলাদেশে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৯ বছর।
১৪. বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা কত বছর?
উত্তর: বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা ৬৭ বছর।
১৫. কেমন পরিবারে প্রবীণদের দুর্দশা বেশি হয়?
উত্তর: দরিদ্র পরিবারে প্রবীণদের দুর্দশা বেশি হয়।
১৬. কোন বয়সে মানুষের শারীরিক শক্তি কমে আসে?
উত্তর: প্রবীণ বয়সে মানুষের শারীরিক শক্তি কমে আসে।
১৭. প্রতিমাসে কত টাকা হারে বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হয়?
উত্তর: প্রতিমাসে ১০০ টাকা হারে বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হয়
১৮. নারী অধিকার কোন ধরনের অধিকার?
উত্তর: নারী অধিকার মানবাধিকারের অন্তর্ভুক্ত।
১৯. ভালো ছাত্রী হয়েও অনেক সময় মেয়েরা পড়ালেখার সুযোগ পায় না কেন?
উত্তর: ভালো ছাত্রী হয়েও অনেক সময় মেয়েরা কম বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে পড়ালেখার সুযোগ পায় না।
২০. বাংলাদেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত কে?
উত্তর: বাংলাদেশে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত হলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
২১. বেগম রোকেয়া সমাজের নারী ও পুরুষকে কিসের সাথে তুলনা করেছেন?
উত্তর: বেগম রোকেয়া সমাজের নারী ও পুরুষকে এক গাড়ির দুটি চাকার সাথে তুলনা করেছেন।
২২. পুরুষের পাশাপাশি সংসার পরিচালনার গুরুদায়িত্ব পালন করে কারা?
উত্তর: পুরুষের পাশাপাশি সংসার পরিচালনার গুরুদায়িত্ব পালন করে নারীরা।
২৩. নারী অধিকার অপরিহার্য কেন?
উত্তর: রাষ্ট্র ও বিশ্বের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য নারী অধিকার অপরিহার্য।
২৪. বাংলাদেশ সরকার মেয়েদের শিক্ষার জন্যে কিসের ব্যবস্থা করেছে?
উত্তর: বাংলাদেশ সরকার মেয়েদের শিক্ষার জন্যে উপবৃত্তির ব্যবস্থা করেছে।
২৫. কারা নিজেদের খুব অবহেলিত ও অসহায় ভাবতে শুরু করে?
উত্তর: প্রবীণরা নিজেদের খুব অবহেলিত ও অসহায় ভাবতে শুরু করে।
২৬. সন্তান লালনের প্রধান দায়িত্বটা কারা পালন করেন?
উত্তর: সন্তান পালনের প্রধান দায়িত্বটা নারীরা পালন করেন।
২৭. কে পুরুষ ও নারীকে একটি গাড়ির দুটি ঢাকার সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তর: বেগম রোকেয়া পুরুষ ও নারীকে একটি গাড়ির দুটি চাকার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
২৮. আমাদের সংবিধানে কাদের পুরুষদের পাশাপাশি সমঅধিকার দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: আমাদের সংবিধানে নারীদের পুরুষদের পাশাপাশি সমঅধিকার দেওয়া হয়েছে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১. আমাদের সমাজে পুত্র সন্তানকে কন্যা সন্তান অপেক্ষা অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয় কেন?
উত্তর: আমাদের দেশে অনেক পিতামাতা মনে করেন পুত্র বড় হয়ে বাবা-মাকে উপার্জন করে খাওয়াবে, সংসারের হাল ধরবে। অন্যদিকে কন্যা বিয়ের পর স্বামী বা শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে। উপরন্তু তাকে বিয়ে দিতে গিয়ে পিতা-মাতাকে অনেক টাকা খরচ করতে হবে। এ মনোভাব থেকেই আমাদের সমাজে পুত্রসন্তানকে কন্যাসন্তানের চেয়ে অধিক গুরুত্ব দেয়।
উত্তর: আমাদের দেশে অনেক পিতামাতা মনে করেন পুত্র বড় হয়ে বাবা-মাকে উপার্জন করে খাওয়াবে, সংসারের হাল ধরবে। অন্যদিকে কন্যা বিয়ের পর স্বামী বা শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে। উপরন্তু তাকে বিয়ে দিতে গিয়ে পিতা-মাতাকে অনেক টাকা খরচ করতে হবে। এ মনোভাব থেকেই আমাদের সমাজে পুত্রসন্তানকে কন্যাসন্তানের চেয়ে অধিক গুরুত্ব দেয়।
২. সংসার জীবনে নারীর প্রধান ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: সংসার জীবনে নারীর প্রধান ভূমিকা সংসার পরিচালনা করা। সংসার জীবনে নারী মা, বোন, কন্যা, ভাবি, চাচি, ফুফু, খালা, নানি, দাদির ভূমিকা পালন করে। এর পাশাপাশি সংসার পরিচালনার গুরুদায়িত্বও পালন করে থাকে। সংসারের সবার প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখা, তাদের সকল চাহিদা পূরণ করা নারীর অন্যতম কাজ। এসব কাজের মাধ্যমে একজন নারী সংসার জীবনে তার প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে।
উত্তর: সংসার জীবনে নারীর প্রধান ভূমিকা সংসার পরিচালনা করা। সংসার জীবনে নারী মা, বোন, কন্যা, ভাবি, চাচি, ফুফু, খালা, নানি, দাদির ভূমিকা পালন করে। এর পাশাপাশি সংসার পরিচালনার গুরুদায়িত্বও পালন করে থাকে। সংসারের সবার প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখা, তাদের সকল চাহিদা পূরণ করা নারীর অন্যতম কাজ। এসব কাজের মাধ্যমে একজন নারী সংসার জীবনে তার প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. নারী - পুরুষের সমানাধিকার বলতে কী বোঝ?
উত্তর: নারী - পুরুষের সমানাধিকার বলতে পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে অর্থাৎ জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকারকে বোঝানো হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদেও নারীর এ সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে।
৪. প্রবীণরা মূল্যবান মানবসম্পদ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: পৃথিবীর বুকে প্রবীণদের অবস্থান চিরসত্য। অর্থাৎ প্রবীণদের অস্তিত্ব আগেও ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। বয়সের ভারে কাজ করার সামর্থ্য কমে এলে প্রবীণরা তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের সাহায্য করতে পারেন। তারাই বিভিন্ন সমস্যার অভিজ্ঞতাভিত্তিক সমাধান দিতে পারেন। সেদিক থেকে তারা অন্য যেকোনো বয়সের মানুষের মতোই সমাজের মূল্যবান মানবসম্পদ।
৫. প্রবীণরা নানা রকম অবহেলা বা উপেক্ষার শিকার হন কেন?
উত্তর: উপার্জন করার সামর্থ্য না থাকায় পবিরারে প্রবীণদের গুরুত্ব কমে যায়। আর তাই তারা নানারকম অবহেলা বা উপেক্ষার শিকার হন। তবে সচেতন পরিবারে এ উপেক্ষার মাত্রা কম - বেশি হয়ে থাকে।
৬. প্রবীণদের বিশ্রাম বা আরামের প্রয়োজন কেন?
উত্তর: প্রবীণ বয়সে মানুষের শারীরিক শক্তি কমে আসে। নানা প্রকার রোগব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধে। আর সেজন্যই প্রবীণদের একটু বিশ্রাম বা আরামের প্রয়োজন হয়।
৭. প্রবীণরা অর্থনৈতিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েন কেন?
উত্তর: নিজস্ব আয় - রোজগারের সুযোগ না থাকায় এবং সঞ্চিত অর্থ ও সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টিত হয়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ প্রবীণই অর্থনৈতিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েন। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত বা দরিদ্র পরিবারের প্রবীণরা বার্ধক্যে পৌছাবার পূর্বেই সংসার চালাতে, সন্তানদের লেখাপড়া, বিয়ের খরচ জোগাতে গিয়ে কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। তাদেরকে সন্তানদের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।
৮. প্রবীণদের ওপর পারিবারিক ভাঙনের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: শিল্পায়ন, শহরায়ন ও অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তনের কারণে একান্নবর্তী পরিবারগুলো ভেঙে ছোট ছোট পরিবার সৃষ্টি হচ্ছে। আর এ ভাঙনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবারের প্রবীণ ব্যক্তিদের ওপর। একক পরিবার গঠনের ফলে তারা একাকী ও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে। তাদের দেখাশুনা ও সেবাযত্ন করার মতো কেউ থাকছে না। বরং এ বয়সেও তাদের নাতি - নাতনিদের দেখাশুনার দায়িত্ব নিতে হচ্ছে।
উত্তর: শিল্পায়ন, শহরায়ন ও অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তনের কারণে একান্নবর্তী পরিবারগুলো ভেঙে ছোট ছোট পরিবার সৃষ্টি হচ্ছে। আর এ ভাঙনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবারের প্রবীণ ব্যক্তিদের ওপর। একক পরিবার গঠনের ফলে তারা একাকী ও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে। তাদের দেখাশুনা ও সেবাযত্ন করার মতো কেউ থাকছে না। বরং এ বয়সেও তাদের নাতি - নাতনিদের দেখাশুনার দায়িত্ব নিতে হচ্ছে।
৯. নারী ও পুরুষকে বেগম রোকেয়া কিসের সাথে তুলনা করেছেন এবং কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: নারী ও পুরুষকে বেগম রোকেয়া এক গাড়ির দুটি চাকার সাথে তুলনা করেছেন। কারণ দুটি চাকা সমানতালে না চললে গাড়ি যেমন থেমে যাবে তেমনি সমাজের একটি অংশ অর্থাৎ নারী যদি পিছিয়ে থাকে তবে সমাজ উন্নয়নের চাকাও থেমে যাবে।
১০. নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তর: নারীর প্রতি বৈষম্য দূর ও তার সমানাধিকার নিশ্চিত করতে সরকার কতকগুলো ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন- উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের বিনা বেতনে লেখাপড়ার সুযোগ ও তাদের জন্য উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নারী নির্যাতন, এসিড, সন্ত্রাস রোধে কঠোর আইন প্রবর্তন করা হয়েছে। কর্মস্থলে নারীর মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় বাড়িয়ে ৬ মাস করা হয়েছে। সন্তানের নামের সঙ্গে বাবার নামের পাশাপাশি মায়ের নাম লেখাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
১১. সমাজের সর্বস্তরে নারীর উপস্থিতি প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। তাদের পিছনে ফেলে, তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, অবহেলা করে সমাজকে উন্নত জাতিকে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কারণ যতদিন নারী অবহেলিত ছিল ততদিন সমাজ এক কদমও অগ্রসর হয়নি। নারী তাদের অধিকার নিয়ে দাঁড়ানোর সাথে সাথে সমাজ উন্নতির পথে চলতে আরম্ভ করছে। তাই সমাজের সর্বস্তরে নারীর উপস্থিতি প্রয়োজন।
১২. গ্রামাঞ্চলে নারী শিক্ষার হার কম কেন?
উত্তর: গ্রামাঞ্চলে কম বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। ফলে মেয়েরা ভালো ছাত্রী হয়েও প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্তরের বেশি পড়ালেখার সুযোগ পায় না। আর তাই গ্রামাঞ্চলে নারী শিক্ষার হার কম।