সপ্তম শ্রেণি, বাওবি তৃতীয় অধ্যায় (পরিবারে শিশুর বেড়ে ওঠা) || Class Seven, BGS Chapter 3 (Growing up a child in the family)

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:

উত্তর: স্বামী - স্ত্রী ও অবিবাহিত সন্তান নিয়ে একক পরিবার গঠিত হয়।

উত্তর: পরিবার একটি চিরস্থায়ী সামাজিক সংগঠন।

উত্তর: বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে একক পরিবারের সংখ্যা বেশি।

উত্তর: গ্রামাঞ্চলে যৌথ পরিবার দেখা যায়।

উত্তর: পরিবারের সদস্যদের মধ্যকার গভীর সম্পর্কের মূলে স্নেহ, মায়ামমতা, ভালোবাসা ও আবেগীয় সম্পর্ক রয়েছে।

উত্তর: পিতার হাতেই বেশি লক্ষ করা যায়।

উত্তর: গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের উপর বেশি নির্ভরশীল।

উত্তর: যৌথ পরিবারে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

উত্তর: শহুরে পরিবারের প্রধানরূপ হচ্ছে ক্ষুদ্র পরিবার।

উত্তর: স্ত্রীর মতামতের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।

উত্তর: পরিবার।

উত্তর: সাম্প্রতিক সময়ে শিশুকে ক্যাসেট, ভিসিডি কিংবা মৌলভি রেখে ধর্ম শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

উত্তর: বেবি হোমে ও ডে কেয়ারে লালিতপালিত হচ্ছে।

উত্তর: যে পরিবার মূলত ধরন পরিবর্তন হয়ে সৃষ্টি হয়, তাকে পরিবর্তনশীল পরিবার বলে।

উত্তর: শিশুর ভাষা শিক্ষার প্রথম মাধ্যম হলেন মা।

উত্তর: পিতামাতার স্বতন্ত্র আচরণ ও মূল্যবোধ শিশুর সামাজিকীকরণকে প্রভাবিত করে।

উত্তর: পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

উত্তর: পিতার অভ্যধিক শাসন ও শিশুর প্রতি মায়ের অধিক স্নেহপ্রবণতা শিশুর সামাজিকীকরণকে বাধাগ্রস্ত করে।

উত্তর: শিশুর আচরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

১. বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে যৌথ পরিবার বেশি দেখা যায় কেন? 
উত্তর: বাংলাদেশের গ্রামীণ ও শহুরে সমাজে বিভিন্ন ধরনের পরিবার দেখা যায়। গ্রাম ও শহর ভেদে এই পরিবারগুলোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক গ্রামে বসবাস করে এবং তারা বেশিরভাগই কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। যেহেতু বেশিরভাগ পরিবারই কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য জমি প্রথমে দাদা হতে বাবা পরে ছেলে ক্রমে পরিবারও বড় হতে পারে। তাই গ্রামীণ সমাজে যৌথ পরিবার বেশি দেখা যায়।

উত্তর: বাংলাদেশের অধিকাংশ লোখ গ্রামে বসবাস করে। তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। গ্রামের বেশিরভাগ পরিবারই কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্য জমি পর্যায়ক্রমে ভোগ করায় পরিবার বড় হয় এবং যৌথ পরিবার গড়ে ওঠে। তবে সম্প্রতি গ্রামে যৌথ পরিবার ভেঙে যাচ্ছে। বর্তমানে মানুষের আর্থিক পরিবর্তন, পেশাগত পরিবর্তন, সম্পত্তির সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ নীতি ইত্যাদি কারণে গ্রামীণ সমাজে যৌথ পরিবারের ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে এবং একক পরিবার গড়ে উঠছে।

উত্তর: একজন পুরুষ ও একজন স্ত্রীলোকের একক বিবাহের ভিত্তিতে যে পরিবার গড়ে ওঠে তাকে একক পরিবার বলে। অর্থাৎ স্বামী - স্ত্রী ও তাদের অবিবাহিত সন্তান নিয়ে একক পরিবার গঠিত হয়। আধুনিক সমাজব্যবস্থায় পৃথিবীর সর্বত্র এ ধরনের পরিবারের সংখ্যা সর্বাধিক। বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে একক পরিবারের সংখ্যা বেশি দেখা যায়।

উত্তর: বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ শিশুর ধর্ম শিক্ষা বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। সাধারণত পরিবারের মধ্যেই শিশুর ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয়। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতা সম্পর্কে পিতামাতা, কিংবা দাদা - দাদি বা অন্যান্য সদস্য বিভিন্নভাবে শিশুকে অবহিত করতেন। তবে সময়ের পরিবর্তনে এখন পরিবারের ধর্মবিষয়ক ভূমিকা দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা শিশুর সামাজিকীকরণে প্রভাব ফেলেছে। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসেট, ভিসিডি কিংবা মৌলভি রেখে শিশুকে ধর্ম শিক্ষা দিচ্ছে। এজন্যই শিশুর মধ্যে প্রকৃত ধর্মীয় মূল্যবোধ তৈরি হচ্ছে না। ফলে শিশুর মধ্যে কোনো নৈতিক গুণ তৈরি হচ্ছে না।

উত্তর: শিশুর সামাজিকীকরণে পরিবারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অনেক দায়িত্ব পালন করে। যেমন- শিক্ষার ক্ষেত্রে পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ বিদ্যালয়, টেকনিক্যাল বিদ্যালয়সহ বহু প্রতিষ্ঠানে শিশুর শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুর বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষা, বিনোদন ও অর্থনৈতিক উৎপাদন ইত্যাদি কাজগুলো এখন পারিবারিক পর্যায় ছাড়াও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সম্পন্ন হচ্ছে।

উত্তর: শিশুর সামাজিকীকরণে প্রথম ভূমিকা রাখে পরিবার। পিতামাতার মাধ্যমেই শিশু শিক্ষাজগতে প্রবেশ করে। এ কারণে বলা হয়, পরিবার হলে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবারের এ দায়িত্ব ও ভূমিকা বর্তমানে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রহণ করেছে; যেমন- শিশুশিক্ষার জন্য সাধারণ বিদ্যালয়, টেকনিক্যাল বিদ্যালয়সহ বহু প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তাই বলা যায়, পরিবারের শিক্ষাবিষয়ক ভূমিকা আগের মতো নেই।

উত্তর: পরিবারের সদস্যদের আচার - আচরণের মধ্য দিয়ে শিশুর সাথে একটা পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এজন্যই শিশুর সুষ্ঠু সামাজিকীকরণে সুন্দর পারিবারিক পরিবেশ প্রয়োজন। কারণ সুন্দর পারিবারিক পরিবেশে পিতামাতার পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো থাকে, পারিবারিক ঝগড়াবিবাদ ও মনোমালিন্য হয় না, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি হয় এবং ভাইবোনদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে সুন্দর পারিবারিক পরিবেশে শিশুর সুষ্ঠু সামাজীকরণ সম্ভব হয়।

 উত্তর: শিশু যেভাবে সামাজিক হয়ে গড়ে ওঠে তাকে সামাজিকীকরণ বলা হয়। শিশু পরিবারে জন্ম নেয় ও বেড়ে ওঠে। এক্ষেত্রে পরিবার শিশুর শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। আর পরিবারের ভূমিকার মধ্যে যৌথ পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। কেননা যৌথ পরিবারে দাদা - দাদি, চাচা - চাচিসহ অন্য সদস্যদের সাথে শিশুর পারস্পরিক আচার - আচরণিক সম্পর্ক গড়ে কঠে। এসব আচার - আচরণিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে শিশু সহযোগিতা, সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা, সহনশীলতা, নিরাপত্তাবোধ, সমানভাগের অংশীদাৰপ্তাসহ বিভিন্ন গুণ অর্জন করার সামাজিক শিক্ষা পায়; যা শিশুর সামাজিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।