সপ্তম শ্রেণি, বাওবি পঞ্চম অধ্যায় (বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের নাগরিক) || Class Seven, BGS Chapter 5 (Bangladesh and citizens of Bangladesh)
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১. কোন নাগরিক দেশের জন্য সম্পদ?
উত্তর: সুনাগরিক।
২. নাগরিকের যোগ্যতা ও দক্ষতার উপর কোনটি নির্ভরশীল?
উত্তর: রাষ্ট্রের উন্নতি।
উত্তর: রাষ্ট্রের উন্নতি।
৩. দেশের প্রগতি ও ব্যর্থতা উভয়ই কোনটির উপর নির্ভর করে?
উত্তর: নাগরিকের সততা, দক্ষতা এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের উপর।
উত্তর: নাগরিকের সততা, দক্ষতা এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের উপর।
৪. একটি দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য কী প্রয়োজন?
উত্তর: সুনাগরিক।
উত্তর: সুনাগরিক।
৫. সুনাগরিক হতে হলে একজন নাগরিককে কয়টি মৌলিক গুণের অধিকারী হতে হবে?
উত্তর: তিনটি।
উত্তর: তিনটি।
৬. কোন অধিকার ছাড়া নাগরিকের যথাযথ মানসিক বিকাশ সম্ভব নয়?
উত্তর: নাগরিক অধিকার।
উত্তর: নাগরিক অধিকার।
৭. কোন নাগরিক যেকোনো রাষ্ট্রের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ?
উত্তর: বুদ্ধিমান নাগরিক।
উত্তর: বুদ্ধিমান নাগরিক।
৮. বুদ্ধিমত্তা অর্জনের সবচেয়ে বড় উপায় কী?
উত্তর: শিক্ষা লাভ করে জ্ঞান অর্জন করা।
উত্তর: শিক্ষা লাভ করে জ্ঞান অর্জন করা।
৯. যথার্থ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে কাদের?
উত্তর: নাগরিকদের।
উত্তর: নাগরিকদের।
১০. বুদ্ধিমান নাগরিক গড়তে হলে বাবা - মায়ের কী করা উচিত?
উত্তর: সন্তানদের যথাযথ শিক্ষা দেওয়া উচিত।
উত্তর: সন্তানদের যথাযথ শিক্ষা দেওয়া উচিত।
১১. বুদ্ধিমান নাগরিক গড়তে হলে সরকারের দায়িত্ব কী?
উত্তর: উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
উত্তর: উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
১২. আত্মসংযম নাগরিককে কোন কাজ থেকে বিরত রাখে?
উত্তর: অসৎ কাজ।
উত্তর: অসৎ কাজ।
১৩. কোনটি ছাড়া সুনাগরিক হওয়া সম্ভব নয়?
উত্তর: আত্মসংযম।
১৪. কোন নাগরিক নিয়মকানুন মেনে চলে ও অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয়?
উত্তর : আত্মসংযমী নাগরিক।
১৫. অন্যায় কাজ ও দলীয় স্বার্থপরতা থেকে বিরত থাকে কোন নাগরিক?
উত্তর: আত্মসংযমী নাগরিক।
১৬. ভালো - মন্দের জ্ঞান ও দায়িত্ব - কর্তব্যের জ্ঞানকে কী বলে?
উত্তর: বিবেক বিচার।
১৭. সুনাগরিকের জাগ্রত শক্তি কোনটি?
উত্তর: বিবেক।
১৮. বিবেক বিচারসম্পন্ন নাগরিকের কী করতে হবে?
উত্তর: মন্দ কাজটি পরিহার করে ভালো কাজটি করতে হবে।
১৯. সুনাগরিকের গুণগুলো কী দ্বারা প্রভাবিত হয়?
উত্তর: পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের পরিবেশ দ্বারা।
২০. নির্লিপ্ততা কাকে বলে?
উত্তর: কাজের প্রতি নাগরিকদের উদাসীনতাকে।
২১. নির্লিপ্ততা তৈরি হওয়ার কারণ কী?
উত্তর: নিরক্ষরতা, উপযুক্ত শিক্ষার অভাব, অলসতা, দারিদ্র্য ও কাজে অনীহা নির্লিপ্ততার কারণ।
২২. কোনটির ফলে ব্যক্তি নিজের স্বার্থকে দেশের স্বার্থের চেয়ে বড় করে দেখে?
উত্তর: ব্যক্তিস্বার্থপরায়ণতার ফলে।
২৩। নাগরিক সহজেই দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতিত্ব করে থাকে কোনটির কারণে?
উত্তর: ব্যক্তিস্বার্থপরায়ণতার কারণে।
২৪. গণতন্ত্র কী ছাড়া চলতে পারে না ?
উত্তর: রাজনৈতিক দল।
২৫. কোন শাসনব্যবস্থায় এক ধর দলীয় মনোভাব কাজ কর।
উত্তর: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা।
২৬. আমাদের দেশের কত শতাংশ নাগরিক নিরক্ষর ?
উত্তর: এক - তৃতীয়াংশ।
২৭. কোনটি ব্যক্তিকে অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষী করে তোলে?
উত্তর: ধর্মান্ধতা।
২৮. নেতিবাচক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কোনটি?
উত্তর: দাম্ভিকতা।
২৯. নিজের মতামত অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চায় কোন ধরনের ব্যক্তি?
উত্তর: দাম্ভিক ব্যক্তি।
৩০. দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক সময় বিভেদ ও অশান্তি বিরাজ করে কোনটির কারণে?
উত্তর: সাম্প্রদায়িকতার কারণে।
৩১. সুনাগরিকতা অর্জনের জন্য দেশের সব নাগরিককে কোন মনোভাবের অধিকারী হতে হবে।
উত্তর: উদার মনোভাবের।
৩২. কোনটির কারণে আমাদের দেশের প্রায় এক - তৃতীয়াংশ লোক লিখতে - পড়তে পারে না?
উত্তর: দারিদ্র্যের কারণে।
৩৩. কোনটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য দেশের জনগোষ্ঠীকে দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে?
উত্তর: সুশাসন।
৩৪. রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমাধানের জন্য উপযোগী ও দক্ষ হয় কারা?
উত্তর: সুনাগরিকরা।
৩৫. বাংলাদেশের সরকার পরিচালনার দলিল কোনটি?
উত্তর: বাংলাদেশের সংবিধান।
৩৬. নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্যগুলো কাদের জন্য প্রযোজ্য?
উত্তর: দেশের সব নাগরিকের জন্য।
৩৭. আজকাল রাষ্ট্রের উন্নয়নে অধিকার ভোগের চেয়ে কোনটি পালনের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়?
উত্তর: নাগরিকের কর্তব্য পালনের উপর।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন:
১. সুনাগরিক হতে হলে একজন নাগরিককে কয়টি মৌলিক গুণের অধিকারী হতে হবে?
ক. ২টি খ. ৩টি
গ. ৪টি ঘ. ৫টি
২. সুনাগরিককে কোনটি হতে হবে?
ক. আত্মসংযমী খ. দুর্নীতিপরায়ণ
গ. স্বার্থপর ঘ. নির্লিপ্ত
৩. দক্ষতার সাথে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে কারা?
ক. বুদ্ধিমান নাগরিক খ. নির্লিপ্ত নাগরিক
গ. নিরপেক্ষ লোক ঘ. অদক্ষ নাগরিক
৪. নাগরিকের অমূল্য সম্পদ কোনটি?
ক. বিবেক খ. আত্মসংযম
গ. বুদ্ধি ঘ. স্বার্থপরতা
৫. যথাসময়ে কর প্রদান করে কোন নাগরিক?
ক. সাধারণ নাগরিক খ. বিদেশি নাগরিক
গ. ক্ষমতাবান নাগরিক ঘ. বিবেকবান নাগরিক
৬. সমাজের বৃহত্তম স্বার্থে নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করার নাম-
ক. বুদ্ধি খ. বিবেক
গ. মহত্ত্ব ঘ. আত্মসংযম
৭. একটি দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য কোনটি প্রয়োজন?
ক. সুনাগরিকের খ. নাগরিকের
গ. শিক্ষিত জনগণের ঘ. বুদ্ধিমান জনগণের
৮. কোন ধরনের নাগরিক যেকোনো রাষ্ট্রের জন্য মূল্যবান সম্পদ?
ক. স্বার্থপর খ. চালাক
গ. বোকা ঘ. বুদ্ধিমান
৯. বুদ্ধিমত্তা অর্জনের সবচেয়ে বড় উপায় কোনটি?
ক. শিক্ষালাভ করা খ. চিন্তায় মগ্ন থাকা
গ. সমালোচনা করা ঘ. শিক্ষককে সম্মান করা
১০. উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া কার দায়িত্ব?
ক. সরকারের খ. নিজের
গ. প্রতিবেশীর ঘ. দলের
১১. আত্মসংযম নাগরিককে কোন ধরনের কাজ থেকে বিরত রাখে?
ক. সৎ খ. অসৎ
গ. ধর্মীয় ঘ. শিক্ষণীয়
১২. নিচের কোন কর্মকান্ড রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য সহায়ক?
ক. অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করা
খ. নিজের মতামতকে প্রধান্য দেয়া
গ. অন্যের কথায় সিদ্ধান্ত নেয়া
ঘ. নিজেকে বড় করে দেখা
১৩. বিবেক-বিচার বলতে কোনটি বোঝায়?
ক. শিক্ষা অর্জন করা খ. সৎ পথে চলা
গ. ভালো-মন্দের জ্ঞান ঘ. দলীয় মনোভাব পোষণ
১৪. দায়িত্ব কর্তব্যের জ্ঞান সুনাগরিকের কোন ধরনের গুণাবলি?
ক. বিবেক-বিচার খ. বুদ্ধি
গ. আত্মসংযম ঘ. আত্মবিশ্বাস
১৫. নাগরিককে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনটির মাধ্যমে?
ক. বিবেক খ. আত্মসংযম
গ. শ্রদ্ধা ঘ. শিক্ষা
১৬. বিবেক কী?
ক. সুনাগরিকের জাগ্রত শক্তি
খ. সুনাগরিকের ঘুমন্ত শক্তি
গ. সুনাগরিকের সদিচ্ছা
ঘ. সুনাগরিকের আত্মবিশ্বাস
১৭. সুনাগরিক দেশের জন্য কোন ধরনের সম্পদ?
ক. মূল্যবান খ. বিক্রয়যোগ্য
গ. অমূল্য ঘ. অবস্তুগত সম্পদ
১৮. উষা অন্যের হারানো কিছু পেলে ফেরত দেয় না। তার মধ্যে সুনাগরিকের কোন গুণাবলির অভাব রয়েছে?
ক. বুদ্ধি খ. আত্মবিশ্বাস
গ. অধিকার ঘ. আত্মসংযম
১৯. কোনটি সুনাগরিকের জাগ্রত শক্তি?
ক. বুদ্ধি খ. আত্মসংযম
গ. বিবেক ঘ. শিক্ষা
২০. বুদ্ধিমান নাগরিক-
i. উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে
ii. দক্ষতার সাথে দেশ পরিচালনা করতে পারে
iii. রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
২১. আত্মসংযম নাগরিককে বিরত রাখে-
i. দুর্নীতি হতে
ii. স্বার্থপরতা থেকে
iii. মনুষ্যত্বের বিকাশ হতে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
২২. মাতৃভূমিকে বিশ্বের বুকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজন-
i. বুদ্ধিমান নাগরিক
ii. আত্মসংযমী নাগরিক
iii. বিবেক-বিচারসম্পন্ন নাগরিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
২৩. সাবিনা আত্মসংযমী নাগরিক বলে সে-
i. নিয়ম-কানুন মেনে চলে
ii. অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করে
iii. নিজের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
২৪. বিবেক-বিচার বলতে বোঝায়-
i. পক্ষপাতিত্বমূলক জ্ঞান
ii. ভালো-মন্দের জ্ঞান
iii. দায়িত্ব-কর্তব্যের জ্ঞান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
২৫. সুনাগরিক হতে হলে প্রয়োজন-
i. বুদ্ধি
ii. আত্মসংযম
iii. বিবেক-বিচার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
২৬. আফসানার মধ্যে সুনাগরিকের মৌলিক তিনটি গুণ রয়েছে। এছাড়া তার আরও প্রয়োজন-
i. বুদ্ধিমত্তা অর্জন করা
ii. শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে জানা
iii. অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মনোভাব
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ২৭ ও ২৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।
রহিম একটি রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত। সে সকল অন্যায় কাজ ও দলীয় স্বার্থপরতা থেকে বিরত থাকে এবং রাষ্ট্রের সার্বিক মঙ্গলের জন্য কাজ করে।
২৭ . রহিমকে কোন ধরনের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা যায়?
ক. সুনাগরিক খ. কুনাগরিক
গ. ব্যক্তিস্বার্থান্বেষী ঘ. দলীয় স্বার্থান্বেষী
২৮ . রহিমের উক্ত কর্মকাণ্ড-
i. রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য সহায়ক
ii. রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য বাধাস্বরূপ
iii. রাষ্ট্রের সার্বিক মঙ্গল সাধন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ২৯ ও ৩০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।
এক সন্তানের জননী তানিয়া একজন বাংলাদেশের নাগরিক। সে তার সন্তানের পড়ালেখার ব্যাপারে উদাসীন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সে তার ভাইয়ের কথা মতো অযোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেয়।
২৯ . তানিয়ার মধ্যে সুনাগরিকের মৌলিক গুণাবলির কোনটি অনুপস্থিত?
ক. বুদ্ধি খ. আত্মসংযম
গ. বিবেক-বিচার ঘ. দলীয় মনোভাব
৩০ . তার যে সকল কর্মকান্ড সুনাগরিক হতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে তা হলো-
i. দলীয় মনোভাব
ii. নির্লিপ্ততা
iii. ব্যক্তি স্বার্থপরায়ণতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
অনুধাবনমূলক প্রশ:
১. "বিবেক হলো সুনাগরিকের জাগ্রত শক্তি।" - ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বিবেক - বিচার বলতে ভালো - মন্দের জ্ঞান, দায়িত্ব কর্তব্যের জ্ঞানকে বোঝায়। একজন নাগরিককে শুধু বুদ্ধিমান ও আত্মসংযমী হলেই চলবে না, যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে হলে তাকে ভাবতে হবে কাজটি ভালো না মন্দ। মন্দ কাজটি পরিহার করে ভালো কাজটি করতে হবে। এছাড়া সমাজ বা রাষ্ট্রের কোনো সমস্যা সমাধান করতে হলে নাগরিককে তার বিবেক দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই বলা হয়, বিবেক হলো সুনাগরিকের জাগ্রত শক্তি।
উত্তর: বিবেক - বিচার বলতে ভালো - মন্দের জ্ঞান, দায়িত্ব কর্তব্যের জ্ঞানকে বোঝায়। একজন নাগরিককে শুধু বুদ্ধিমান ও আত্মসংযমী হলেই চলবে না, যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে হলে তাকে ভাবতে হবে কাজটি ভালো না মন্দ। মন্দ কাজটি পরিহার করে ভালো কাজটি করতে হবে। এছাড়া সমাজ বা রাষ্ট্রের কোনো সমস্যা সমাধান করতে হলে নাগরিককে তার বিবেক দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই বলা হয়, বিবেক হলো সুনাগরিকের জাগ্রত শক্তি।
২. বুদ্ধিমান নাগরিক যেকোনো রাষ্ট্রের মূল্যবান সম্পদ কেন?
উত্তর: একটি দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য সুনাগরিকের প্রয়োজন। আর সুনাগরিকের সবচেয়ে বড় গুণ হলো তাকে বুদ্ধিমান হতে হবে। কারণ বুদ্ধিমান নাগরিক উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচন, দক্ষতার সাথে দেশ পরিচালনা, রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও সফলতাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। তাই বুদ্ধিমান নাগরিক যেকোনো রাষ্ট্রের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।
৩. নির্লিপ্ততা বাংলাদেশের নাগরিকদের সুনাগরিক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে কীভাবে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে?
উত্তর: সাধারণভাবে কাজের প্রতি নাগরিকদের উদাসীনতাকে বলে নির্লিপ্ততা। বিভিন্ন কারণে নির্লিপ্ততা তৈরি হয়। যেমন- নিরক্ষরতা, উপযুক্ত শিক্ষার অভাব, অলসতা, দারিদ্র্য ও কাজে অনীহা। আমাদের দেশের নাগরিকদের মধ্যে এ জাতীয় নির্লিপ্তত লক্ষ করা যায়। এর ফলে নাগরিক রাষ্ট্রের সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করতে চায় না। এমনকি নাগরিক হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে না। এভাবেই নির্লিপ্ততা বাংলাদেশের নাগরিকদের সুনাগরিক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করে।
৪. "ব্যক্তিস্বার্থপরায়ণতা সুনাগরিকতা অর্জনের পথে একটি বড় অন্তরায়।''- উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ব্যক্তিস্বার্থপরায়ণতা বলতে ব্যক্তির নিজের স্বার্থ বড় করে দেখা। এর ফলে ব্যক্তি নিজের স্বার্থকে দেশের স্বার্থের চেয়ে বড় করে দেখে। এতে নাগরিক সহজেই দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতিত্ব করে থাকে। এ কারণেই নির্বাচনে অনেক সময় যোগা লোককে ভোট না দিয়ে দলীয় ও ব্যক্তিগত স্বার্থ বিবেচনা করে ভোট দেয়। উপযুক্ত প্রার্থীকে বাদ দিয়ে নিজ আত্মীয় বা পরিচিতজনকে চাকরি দেয়। স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক অনিয়ম করে। এ সব কিছুই সুনাগরিকতার প্রতিবন্ধকতা। তাই ব্যক্তিস্বার্থপরায়ণতাকে সুনাগরিকতা অর্জনের পথে একটি বড় অন্তরায় বলা হয়।
৫. অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতা কীভাবে বাংলাদেশের নাগরিকদের সুনাগরিক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে?
উত্তর: অজ্ঞ ও নিরক্ষর লোক অনেক কিছু জানতে ও বুঝতে পারে না। আমাদের দেশে প্রায় এক - তৃতীয়াংশ নাগরিক নিরক্ষর। যারা লেখাপড়া জানেন তাদের অনেকেই স্বল্প শিক্ষিত। ফলে তারা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়। তাদের উপর রাষ্ট্রের দেওয়া দায়িত্ব তারা সঠিকভাবে পালন করতে পারে না। এভাবেই অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতা বাংলাদেশের নাগরিকদের সুনাগরিক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে।
৬. সুনাগরিকতার বিকাশে ধর্মান্ধতা একটি বিরাট অন্তরায়।'- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ধর্মান্ধতা বলতে ধর্মের প্রতি অন্ধবিশ্বাসকে বোঝায়। ধর্মান্ধতা ব্যক্তিকে অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষী করে তোলে। এ ধরনের মনোভাব বিভিন্ন ধর্মের লোকের মধ্যে বিভেদ ও সংঘাত সৃষ্টি করে। এ ধরনের পরিস্থিতি দেশের সংহতি, উন্নতি ও প্রগতিকে বিনষ্ট করে। তাই বলা হয় সুনাগরিকতার বিকাশে ধর্মান্ধতা একটি বিরাট অন্তরায়।
৭. দাম্ভিকতা একটি নেতিবাচক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কেন?
উত্তর: ' দাম্ভিক ' শব্দের অর্থ হলো অহঙ্কারী। এর ফলে ব্যক্তি নিজেকে বড় করে দেখে। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় না। নিজের মতামত অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। এ ধরনের মানসিকতা সুনাগরিকতার পথে বিরাট বাধা তাই দাম্ভিকতাকে একটি নেতিবাচক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বলা হয়।
৮. সুনাগরিকের প্রতিবন্ধকতা কীভাবে দূর করা যায়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: সুনাগরিকের প্রতিবন্ধকতা দূর করার উপায় নিম্নরূপ-
১. উপযুক্ত শিক্ষাগ্রহণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।
২. ব্যক্তির চেয়ে দেশকে বড় মনে করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ পরিত্যাগ করতে হবে।
৩. দলীয় মনোভাব পরিত্যাগ করে সার্বজনীন মনোভাব পোষণ করতে হবে।
৪. দাম্ভিকতা পরিহার করে সবার জন্য কল্যাণকার মতামতের উপর গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।
৫. অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা দূর করে সবার জন্য সমমর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
২. ব্যক্তির চেয়ে দেশকে বড় মনে করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ পরিত্যাগ করতে হবে।
৩. দলীয় মনোভাব পরিত্যাগ করে সার্বজনীন মনোভাব পোষণ করতে হবে।
৪. দাম্ভিকতা পরিহার করে সবার জন্য কল্যাণকার মতামতের উপর গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।
৫. অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা দূর করে সবার জন্য সমমর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
৯. নাগরিক নিজের অধিকার ভোগের পাশাপাশি অন্যের অধিকার সমুন্নত রাখার কাজে কীভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে?
উত্তর: নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্যগুলো দেশের সব নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য। এসব অধিকার ছাড়া নাগরিকের যথাযথ মানসিক বিকাশ সম্ভব নয়। তাই নাগরিক নিজে এ অধিকারগুলো ভোগ করবে এবং অন্য নাগরিকরা যাতে ভোগ করতে পারে সেজন্য সচেতন থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, নাগরিক নিজে শিক্ষিত হবে, অন্যকে শিক্ষিত করার কাজে অংশগ্রহণ করবে ও সহায়তা দেবে। প্রতিটি নাগরিক নিজের ধর্ম নিজে পালন করবে। অন্য ধর্মের লোককে তাদের নিজ ধর্ম পালনে কোনো বাধা দেবে না। নাগরিক নিজে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করবে, অন্যকেও মত প্রকাশের সুযোগ দেবে এবং তাদের মতামতকে শ্রদ্ধা করবে। এভাবে নাগরিক নিজের অধিকার ভোগের পাশাপাশি অন্যের অধিকার সমুন্নত রাখার কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
১০. উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের আর্থসামাজিক সমস্যা কীভাবে সমাধান করা সম্ভব?
উত্তর: একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের আর্থসামাজিক সমস্যা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নিরক্ষরতা, দারিদ্র্য, দুর্বল অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দুর্নীতি, অধিক জনসংখ্যা ইত্যাদি। এসব সমস্যা সমাধান করার জন্য দেশের সরকার ও নাগরিকদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য দেশের জনগোষ্ঠীকে দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কারণ সুনাগরিক সহজেই আর্থসামাজিক সমস্যাগুলো বুঝতে পারে এবং তাদের বুদ্ধিমত্তা, দক্ষতা, বিবেক - বিচার বোধ ইত্যাদির সাহায্যে এসব সমস্যা সমাধানে নাগরিকের প্রত্যাশিত ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন করতে পারে। সুনাগরিক বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের মাধ্যমে সমাজ ও সরকারকে সঠিক পথে পরিচালিত, বিশ্বের বুকে উন্নত, আত্মনির্ভরশীল একটি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তাই বাংলাদেশে বিভিন্ন আর্থসামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য সুনাগরিক গড়ে তুলতে হবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন:
১. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
সামিহা: লাজিন, কিছু দিন আগে পত্রিকায় রিকশাওয়ালার খবরটি পড়েছিস?
লাজিন: হ্যাঁ পড়েছি। তার রিকশায় পড়ে থাকা একজন যাত্রীর এক লক্ষ টাকার একটি ব্যাগ পেয়েও নেয়নি। বরং যাত্রীর ঠিকানা খুঁজে বের করে পুরো টাকাটা যাত্রীকে ফেরত দেয়।
সামিহা: ঐ রিকশাওয়ালার মতো মানুষই আমাদের দেশের জন্য দরকার। সত্যিই রিকশাওয়ালার বিচক্ষণতা ও সচেতনতা প্রশংসার দাবীদার।
ক. জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে কততম দেশ?
খ. সাম্প্রদায়িকতা সুনাগরিকত্ব অর্জনের একটি অন্তরায়—কথাটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের রিকশাওয়ালার মাঝে সুনাগরিকের কোন গুণটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “সুনাগরিক হতে হলে রিকশাওয়ালার উক্ত গুণটিই যথেষ্ট”—তুমি কি একমত? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
২. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
সোবহান সাহেব এবং শেখর বাবু দুই বন্ধু। সোবহান সাহেব একজন বড় সরকারি কর্মকর্তা। তিনি কিছুদিন পূর্বে নির্বাচনে একটি ভোট কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব সম্পন্ন করেন। শেখর বাবু একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। এ বছর তিনি শ্রেষ্ঠ করদাতার পুরস্কার পান। তাদের সন্তানদের লেখাপড়ায় উভয়েই অত্যন্ত সচেতন। সোবহান সাহেব ঈদসহ অন্যান্য উৎসবে শেখর বাবুর পরিবারকে দাওয়াত করেন। শেখর বাবুও পূজা-পার্বণে সোবহান সাহেবের পরিবারকে তাঁর বাসায় নিয়ে আসেন। উভয় পরিবারই নিজেদের আচার-অনুষ্ঠান স্বাধীনভাবে পালন করে।
ক. রাষ্ট্রের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ কে?
খ. সুনাগরিক হওয়ার ক্ষেত্রে নির্লিপ্ততা একটি বাধা। কথাটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের উভয় পরিবারই স্বাধীনভাবে নিজেদের আচার-অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে নাগরিকের কোন অধিকারটি ভোগ করছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “সোবহান সাহেব এবং শেখর বাবু অধিকার ভোগের পাশাপাশি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে যাচ্ছেন”—পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
৩. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
দৌলতরামদি ইউনিয়নে প্রায় ৮০% লোক শিক্ষিত। উক্ত ইউনিয়নের নির্বাচনে নাগরিকগণ ‘ক’ ও ‘খ’ ব্যক্তির মধ্যে ‘ক’ ব্যক্তিকে সৎ ও যোগ্য বলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ‘ক’ ব্যক্তি তার এলাকার একটি বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তার ভাইয়ের ছেলে প্রার্থী হলেও প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দিয়ে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন।
ক. কোন ধরনের নাগরিক যেকোনো রাষ্ট্রের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ?
খ. নাগরিকদের সুনাগরিক হতে হবে কেন? ব্যাখ্যা কর
গ. দৌলতরামদি ইউনিয়নের নাগরিকদের মধ্যে কোনটির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর জনাব ‘ক’ একজন সুনাগরিক—মতামত দাও।
৪. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
দৃশ্যপট-১: জনাব ‘ক’ একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। তিনি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বার্থপরতা এবং পক্ষপাতিত্ব থেকে নিজেকে বিরত রাখেন।
দৃশ্যপট-২: জনাব ‘খ’ যেকোনো কাজ করার আগে কাজটির ভালো-মন্দ যাচাই করে কাজটি সম্পন্ন করেন।
ক. বুদ্ধিমত্তা অর্জনের বড় উপায় কী?
খ. ‘দাম্ভিকতা সুনাগরিকতার অন্তরায়’—ব্যাখ্যা কর।
গ. দৃশ্যপট-১ এ সুনাগরিকের কোন গুণটি নির্দেশিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. দৃশ্যপট-২ পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
.jpg)