বদরের যুদ্ধ || Battle of Badr

 

বদরের যুদ্ধ
বদরের যুদ্ধ ( ১৩ মার্চ , ৬২৪ খ্রিস্টাব্দ ) 

বদরের যুদ্ধের কারণ 
মদিনার শাসন - শৃঙ্খলা, শক্তি প্রতিষ্ঠা এবং হযরতের (স) কৃতিত্ব ও সফলতার সংবাদে কুরাইশদের মনে হিংসা ও শত্রুতার উদ্রেক হলো। তারা হযরতকে (স) , তাঁর ধর্ম ইসলামকে এবং সমগ্র মদিনাবাসীকে জগতের বুক হতে নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হলো। হযরতকে (স) এবং তাঁর সাহাবাগণকে আশ্রয় দেয়ার জন্য তাঁরা মদিনাবাসীদের উপর শতগুণে ক্রোধান্বিত হয়ে ওঠে। বিদ্রোহী মদিনাবাসীকে এবং মহানবিকে (স) সমুচিত শিক্ষা দিবার জন্য তারা সুযোগ খুঁজছিল এবং অচিরেই এক সূবর্ণ সুযোগ এলে তারা মুসলমানদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

আবদুল্লাহ - বিন - উবাই হযরতের (স) প্রাধান্য সহ্য করতে পারলো না। সে হযরতের (স) সফলতার জন্য মদিনার শাসক হতে পারছিল না বলে গোপনে মক্কার কুরাইশদেরকে হযরতের (স) বিরুদ্ধে উত্তেজিত করতে লাগল। সে মদিনায় হযরতের (স) বিরুদ্ধে মোনাফেকদের সমন্বয়ে একটি দল গঠন করে। সে হযরতকে (স) এবং ইসলামকে সমূলে বিনাশ করার উদ্দেশ্যে কুরাইশদের সাথে জঘন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলো। হযরতের (স) ক্রমবর্ধমান প্রতিপত্তি ইহুদিগণ সহ্য করতে পারলো না। ধর্মীয় ও নাগরিক স্বাধীনতা সত্ত্বেও তারা হযরতের (স) বিনাশ সাধনে তৎপর হয়ে উঠল। মহানবির প্রচারিত ধর্ম তাদের স্বার্থে কুঠারাঘাত করলে তারা মদিনার মুসলমানদের গোপন সংবাদসমূহ মক্কায় সরবরাহ করে কুরাইশদেরকে যদিনা আক্রমণের জন্য প্ররোচিত করতে লাগল। 

এরূপে মুনাফেকের দল ও বিশ্বাসঘাতক ইহুদিগণ সনদের চুক্তির বরখেলাপ করে গোপনে সারা মদিনায় মুসলমান ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে। তারা হযরতের মহানুভবতা ও সহনশীলতার সুযোগে নিজেদের উদ্দেশ্য তৎপর হয়ে ওঠে।

তাদের দুরভিসন্ধি এবং ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গে সৈয়দ আমীর আলী বলেন— “সারা মদিনা শহর তাদের বিদ্রোহ ও বিশ্বাসঘাতকতায় ভরে গিয়েছিল।"
মক্কার বণিকগণ সিরিয়া , মিশর এবং অন্যান্য দেশের সাথে মদিনা হয়ে ব্যবসা - বাণিজ্য করতো। সিরিয়া হতে মাত্র ৮০ মাইল দূরে মদিনা মক্কা - সিরিয়া বাণিজ্য পথে অবস্থিত। মদিনায় হযরতের (স) হুকুমাৎ সুপ্রতিষ্ঠিত হলে কুরাইশগণের বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে এ আশঙ্কায় তারা রণপ্রস্তুতি গ্রহণ করে এবং মুসলমানদেরকে ধরাধাম হতে চিরতরে মুছে ফেলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো।

মক্কার কুরাইশগণ মদিনার সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায়ই লুটতরাজ করতো। তারা মুসলমানদের শস্যক্ষেত্রও জ্বালিয়ে দিত , ফলবান বৃক্ষ ধ্বংস করতো এবং ছাগল , উট প্রভৃতি অপহরণ করতো। ৬২৩ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে (অক্টোবর- নভেম্বর) কুরজ - বিন - জাবিরের নেতৃত্বে একটি কুরাইশ বাহিনী মদিনার উপকণ্ঠে হামলা চালায় এবং মুসলমানদের কতকগুলো উট অপহরণ করে নিয়ে যায়। কুরজ কুরাইশদের গোপন মিত্র আব্দুল্লা - ইন - উবাইকে এ বলে সতর্ক করে দিয়ে যায় যে অনতিবিলম্বে মুহাম্মদ (স) -কে মদিনা হতে বহিষ্কার না করলে কুরাইশগণ মদিনা আক্রমণ করবে। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নাগরিকদের ধন - মাল রক্ষার পবিত্র নীতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুহাম্মদ (স) আব্দুল্লাহ্ - বিন জাহেশের নেতৃত্বে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি দল কুরাইশদের পতিবিধি লক্ষ করবার জন্য সজার উপকণ্ঠে পাঠান। এ তথ্য সংগ্রাহক দলটি মক্কার নিকটবর্তী নাখলাতে অতর্কিতভাবে কুরাইশদের লুণ্ঠনকারী একটি দলকে আক্রমণ করে এবং সে খণ্ডযুদ্ধে কুরাইশদের নেতা আমর বিন হাজরামী নিহত এবং আরও দুজন মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়। এ ঘটনার পর কুরাইশদের শত্রুতা শতগুণে বৃদ্ধি পায় এবং খুনের প্রতিশোধ গ্রহণ করার জন্য আবু জেহেলের নেতৃত্বে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে রণসজ্জায় সজ্জিত হতে লাগল। মক্কাবাসী এ ঘটনাকেই বদরের যুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ হিসেবে অভিহিত করেছে। আসলে এটি একটি অজুহাত মাত্র। কুরাইশগণ পূর্ব হতেই ইসলামের ধ্বংস সাধনে প্রস্তুত হচ্ছিল।

এ প্রসঙ্গে মওলানা মুহম্মদ আলী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ইসলামের ক্রমবর্ধমান শক্তিকে ধ্বংস সাধন করার কুরাইশদের উদ্বেগই যুদ্ধের একমাত্র কারণ।"

এদিকে কুরাইশ দলপতি আবু সুফিয়ান বাণিজ্যের অজুহাতে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য সিরিয়া গমন করে। সক্কায় খবর আসে যে , কুরাইশ কাফিলা মক্কা প্রত্যাবর্তনের পথে মদিনায় মুসলমানগণ কর্তৃক আক্রান্ত হয়েছে। এ সংবাদের সত্যতা যাচাই না করেই কুরাইশগণ আবু জেহেলের নেতৃত্বে প্রায় ১০০০ সৈন্য (৭০০ উক্টারোহী , ১০০ অশ্বারোহী এবং ২০০ পদাতিক সৈন্যসহ ) মদিনা আক্রমণের জন্য যাত্রা করে। মুসলমান গোয়েন্দাগণ কর্তৃক এ দুঃসংবাদ হযরতকে ( স ) জানানো হলে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং কি করবেন স্থির করতে পারছিলেন না। ঠিক এ সময় তিনি ঐশীবাণী লাভ করে অনুপ্রাণিত হলেন এবং মদিনার শিশু পাত ও শিশুকে রক্ষার তৎপরতা ইসলামী রাষ্ট্রকে রক্ষার জন্য তৎপর হলেন।

ঐশীবাণীটি হলো— “আল্লাহর পথে তাদের সাথে যুদ্ধ কর , যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে।" 

তিনি বিশ্বস্রষ্টার দরবারে মোনাজাত করলেন , “হে আল্লাহ্, হে করুণাময় প্রভু , তুমি তোমার সাহায্য করার ওয়াদা ভুলে যেও না, যদি মুসলমানদের এ ক্ষুদ্র দলটি আজ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় , তা হলে এ দুনিয়ায় আর কেউই তোমার নাম, তোমার মহিমা উচ্চারণ করবে না।” 

যুদ্ধের ঘটনাবলি : কুরাইশদের এ অভিযানের সংবাদে হযরত মুহাম্মদ (স) মাত্র ৩১৩ জন মুজাহিদ নিয়ে গঠিত একটি ক্ষুদ্র বাহিনীসহ মদিনার প্রায় ৮০ মাইল দক্ষিণ - পশ্চিমে অবস্থিত বদর নামক উপত্যকার দিকে রওয়ানা হন। পানির সরবরাহ এবং অন্যান্য সুযোগ - সুবিধার দিকে লক্ষ রেখে তিনি আল - আরিশ পাহাড়ের পাদদেশে শিবির স্থাপন করেন। সিপাহসালার মুহাম্মদ (স) মুসলমানদের অস্ত্রশস্ত্রের স্বল্পতার কথা চিন্তা করে তাদেরকে অস্ত্রশস্ত্রের পব্যবহার করতে নিষেধ করেন এবং আল্লাহর পথে জীবন উৎসর্গের পুণ্যের কথা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিলেন। তিনি মুসলমান বাহিনীকে সু - শৃঙ্খলার সাথে যথাস্থানে সন্নিবেশিত করেন এবং যে কোনো অবস্থাতেই স্থানচ্যুত না হতে নির্দেশ দিলেন। ৬২৪ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ই মার্চ এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

তৎকালীন প্রচলিত রেওয়াজ অনুসারে কুরাইশ পক্ষের নেতা উবা , শাইবা এবং উয়ালিদ - বিন - উত্সা ময়দানে মুসলিম সেনানায়কদেরকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান জানায়। মহানবি (স) বীরকেশরী হামজা , আলী ও আবু ওবায়দাকে তাদের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে পাঠান। দ্বন্দ্বযুদ্ধে কুরাইশ নেতৃবৃন্দ পরাজিত ও নিহত হলে কুরাইশ গণ সম্মিলিতভাবে মুসলমানগণকে আক্রমণ করে। কুরআন মজিদে বর্ণিত আছে যে , এ যুদ্ধে আল্লাহর সাহায্যরূপে ফিরিস্তাগণ মুসলমানদের পক্ষ সমর্থন করেন । ভীষণ যুদ্ধের পর কুরাইশগণ শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করে যুদ্ধক্ষেত্র হতে পলায়ন করে। এ যুদ্ধে আবু জেহেলসহ মোট ৭০ জন কুরাইশ নিহত হয় এবং সমসংখ্যক কুরাইশ মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়। মুসলমানদের পক্ষে মাত্র ১৪ জন শাহাদৎ করা করেন , তন্মধ্যে ৮ জন ছিলেন আনসার এবং ৬ জন মোহাজের।

রাসুলুল্লাহ (স) -এর নির্দেশে বন্দীদের প্রতি মুসলমানগণ যে উদারতা প্রদর্শন করেছিলেন দুনিয়ার ইতিহাসে তার নজির নেই । মাত্র দুজন গুরুতর অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় , অন্য সবার প্রতি অতিশয় উদার ব্যবহার করা হয়েছিল।

জনৈক বন্দীর জবানীর মাধ্যমে ঐতিহাসিক স্যার উইলিয়াম মুর বলেন, “মদিনাবাসীদের উপর আশীর্বাদ বর্ষিত হোক; তারা আমাদেরকে (উটে কিংবা ঘোড়ায়) চড়তে দিয়ে নিজেরা হেঁটে চলতো। তারা নিজেদের সামান্য রুটিও নিজেরা না খেয়ে আমাদেরকে খেতে দিয়ে নিজেরা খুরমা খেয়ে ক্ষুন্নিবৃত্তি করতো।” 

হযরত কুরাইশ বন্দীদেরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আবদ্ধ না রেখে মুক্তিপণ গ্রহণ করে মুক্তি দেন। মাত্র ৪০০০ দিরহাম মুক্তিপণ নির্ধারিত হয়। আর যারা মুক্তিপণ দিতে অক্ষম ছিল তাদেরকে পরে তিনি বিনাশর্তেই মুক্তিদান করেন। মানবতার ইতিহাসে পরম শত্রুর প্রতি এরূপ উদারতা ও মহানুভবতা এক নতুন যুগের সূচনা করে।


বদরের যুদ্ধের গুরুত্ব
বদরের যুদ্ধ মুসলমানদের ইতিহাসের প্রথম যুদ্ধ। এটা ইসলামের ইতিহাসেও চূড়ান্তকারী (most decisive) এবং গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব এবং তৌহীদকে দুনিয়ার বুকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এটা অসত্যের উপর সত্যের এবং পৌত্তলিকতার উপর তৌহীদের বিজয় সূচনা করেছে। এ যুদ্ধে এটাই প্রমাণিত হলো যে, ইসলাম আল্লাহর অভিপ্রেত ধর্ম এবং ইসলামকে ধ্বংস করা মানুষের সাধ্যের অতীত। 

এ যুদ্ধে মুসলমানগণ জয়লাভ না করলে ইসলাম ধর্ম ধরণীর বুক হতে চিরদিনের জন্য বিলীন হয়ে যেত। পক্ষান্তরে এ যুদ্ধে জয়লাভ করে মুসলমানগণ ধর্ম বিশ্বাসে এবং আত্মবিশ্বাসে অনুপ্রাণিত হয়ে উঠেছিল। ধর্মের জন্য প্রাণ দানের দৃঢ় সংকল্পই পরবর্তীকালে মুসলমান জাতিকে অজেয় করে তুলেছিল। অপূর্ব কর্তব্যপরায়ণতা, অতুলনীয় শৃঙ্খলা, অমিত বিক্রম, অসামান্য রণনিপুণতা এবং অটুট ঈমানের বলই মুসলমানদেরকে সর্বক্ষেত্রে জয়যুক্ত করেছে। 

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক হিট্টি বলেন, “এ সম্মুখ যুদ্ধে মুসলমানগণ যে নিয়মানুবর্তিতা ও মৃত্যুর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের নজির স্থাপন করেছিলেন তাতেই ইসলামের পরবর্তী ও মহত্তর বিজয়ের বিশেষ লক্ষণসমূহ পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে।" 

ঐতিহাসিক জোসেফ হেলও মনে করেন যে, “বদরের যুদ্ধ ছাড়াও পরবর্তীকালের সমস্ত বড় বড় যুদ্ধে বিপুল সংখ্যক শত্রুসৈন্যের উপর জয়লাভের মূলমন্ত্র ছিল শৃঙ্খলা ও মৃত্যুর প্রতি অবহেলা।"

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা - তে বলা হয়েছে— “বদরের যুদ্ধ মুসলমানদের ইতিবৃত্তের শুধু একটি বিখ্যাত যুদ্ধই নয়, এর ঐতিহাসিক গুরুত্বও অপরিসীম।"

এ যুদ্ধের পর কুরাইশদের শক্তি খর্ব এবং সকল প্রকার অহংকার ধূলিসাৎ হলো। পক্ষান্তরে ইসলামের গৌরব ও শক্তি মদিনায় ও মদিনার বাইরে বহু গুণে দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। হযরতের ইজ্জত ও সম্ভ্রম শত গুণে বেড়ে গেল। যে ধর্ম এতদিন আত্ম রক্ষার চিন্তায় শঙ্কিত থাকতো সে ধর্ম তখন বরং হামলা করার মতো শক্তি সঞ্চয় করে। এক্ষেত্রেও অধ্যাপক হিট্টির মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য।

তিনি বলেন— “ ইসলাম আত্মরক্ষার শঙ্কা হতে মুক্তিলাভ করে প্রতিঘাত করার শক্তি সঞ্চয় করে।"

ইহুদি ও বেদুইন জাতিও ইসলামের শক্তি সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা লাভ করে। তারা শত্রুতা ত্যাগ করলো না বটে, কিন্তু মুসলমানদেরকে আর তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে সাহস পায়নি। 
বদরের যুদ্ধের ফলাফল ইসলাম বিস্তারেরও বিশেষ সহায়ক হয়েছিল। এ সময় হতে ইসলামের অভাবিতপূর্ব সম্প্রসারণ ঘটে। জোসেফ হেল - এর মতে, বিধর্মীদের অনেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়। বস্তুত বহু বিধর্মী মহানবির ঐশ্বরিক শক্তিতে আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে আরম্ভ করে। 

তাছাড়া, বদরের যুদ্ধে শত্রুপক্ষের প্রচুর অস্ত্র - শস্ত্র , সমরোপকরণ ও ধনরত্ন মুসলমানদের হস্তগত হয়। এ অতি প্রয়োজনীয় সমরসম্ভার উদ্বাস্তু জাতি মুসলমানদের সমরশক্তি বহুলাংশে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া অন্তর্বিরোধে জর্জরিত মদিনায় মহানবির প্রভাব প্রতিপত্তিও বহুগুণে বৃদ্ধি পায় এবং বিরুদ্ধবাদী ইহুদি সম্প্রদায় ও আব্দুল্লাহ-বিন উবাই-এর ক্ষমতা হ্রাস পায়। 

পরিশেষে, এ যুদ্ধ মুসলমানদের বিশ্ব বিজয়েরও সূত্রপাত করে। আর বদরের যুদ্ধের পরই ইসলাম একটি রাষ্ট্রীয় ধর্মে পরিণত হলো। এতে সফলতা লাভের পর এক নতুন মনোবল ও সামরিক প্রেরণায় মুসলমানদের অন্তর ভরে যায়। 

এ যুদ্ধের গুরুত্ব সম্বন্ধে ঐতিহাসিক হিট্টি আবার বলেন, “সামরিক দ্বন্দ্ব হিসেবে যত নগণ্যই হোক, বদরের এ যুদ্ধ মুহাম্মদের (স) পার্থিব শক্তির ভিত্তি স্থাপন করে। ইসলাম তার প্রথম ও চূড়ান্ত সামরিক বিজয় অর্জন করে।”
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url