সপ্তম শ্রেণি, বিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় (উদ্ভিদ ও প্রাণীর কোষীয় সংগঠন) || Class Seven, Science Chapter 2 (Cellular Organization of Plants and Animals)
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১। তরুণাস্থি কী?
উত্তর: তরুণাস্থি হলো এক ধরনের যোজক টিস্যু, যা হাড়ের চেয়ে নরম ও অন্যান্য টিস্যুর চেয়ে বেশি চাপ ও টান সহ্য করতে পারে।
২। সেন্ট্রিওল কাকে বলে?
উত্তর: সেন্ট্রিওল হল প্রাণিকোষের নিউক্লিয় আবরণীর কাছাকাছি অবস্থিত বেলনাকৃতি বা দন্ডাকার ফাপা অণু নালিকা যুক্ত অঙ্গাণু। প্রাণিকোষের নিউক্লিয়াসের কাছে দুটি ফাঁপা নলাকার বা দণ্ডাকার অঙ্গাণু দেখা যায়, এগুলোকেই সেন্ট্রিওল বলে।
৩। টিস্যু কী?
উত্তর: উৎপত্তির দিক থেকে একইরকম কতকগুলো কোষ আয়তনে ও আকৃতিতে অভিন্ন বা ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও যদি দসগতভাবে অবস্থান করে একই ধরনের কাজ করে তখন সেই দলবদ্ধ কোষগুলোকে টিস্যু বলে।
৪। কোষ কাকে বলে?
উত্তর: জীবদেহের গঠন ও কাজের একককে কোষ বলে। কোষ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে সেল (Cell)। সেল শব্দটি লাতিন শব্দ সেলুনা থেকে এসেছে। যার অর্থ একটি ছোট কক্ষ। বিজ্ঞানী রবার্ট হুক প্রথম এ নামটি ব্যবহার করেন।
৫। প্রোটোপ্লাজম কী?
উত্তর: কোষ মধ্যস্থ সম্পূর্ণ সজীব অংশ প্রোটোপ্লাজম। প্রোটোপ্লাজম হলো কোষের অর্ধতরল, জেলির মতো আঠালো ও দানাদার বর্ণহীন সজীব অংশ। এটি বিভিন্ন জৈব ও অজৈব যৌগের সমন্বয়ে গঠিত।
৬। ঘাসের মূলের প্লাস্টিডের নাম কী?
উত্তর: ঘাসের মূলের প্লাস্টিডের নাম লিউকোপ্লাস্ট।
৭। প্লাস্টিড কী?
উত্তর: সজীব উদ্ভিদ কোষের সাইটোপ্লাজমে বর্তমান বর্ণহীন অথবা বর্ণযুক্ত গোলাকার বা ডিম্বাকার অঙ্গাণুই প্লাস্টিড। সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত অঙ্গাণুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অঙ্গাণু হল প্লাস্টিড।
৮। অনৈচ্ছিক পেশি কী?
উত্তর: মানব দেহের যে সকল পেশি ইচ্ছানুযায়ী সংকুচিত, প্রসারিত বা চালনা করা যায় না তাকে অনৈচ্ছিক পেশি বলে।
৯। নিউক্লিয়ার পর্দা কী?
উত্তর: নিউক্লিয়াস যে সজীব ও দ্বিস্তর বিশিষ্ট পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে তাই নিউক্লিয়ার পর্দা।
১০। লাইকোপেন কী?
উত্তর: টমেটোর লাল টকটকে রঙের জন্য দায়ী রঞ্জক পদার্থই হচ্ছে লাইকোপেন। লাইকোপেন হ'ল এক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।
১১। যোজক কলা কাকে বলে?
উত্তর: যে কলা প্রাণিদেহের বিভিন্ন টিস্যু এবং অঙ্গের মধ্যে সংযোগ সাধন করে তাকে যোজক কলা বলে। যোজক কলা এক ধরনের আঁশবহুল কলা, যেটি মানবদেহের অন্যান্য অঙ্গ অথবা কলাকে সমর্থন করে, যুক্ত করে অথবা বিচ্ছিন্ন করে।
১২। সাইন্যান্স কী?
উত্তর: অ্যাক্সন ও ডেনড্রনের মিলনস্থলই সাইন্যান্স।
১৩। প্রোটোপ্লাজমে পানির পরিমাণ কত?
উত্তর: শতকরা ৬৭ থেকে ৯০ ভাগ পানি।
১৪। নিউক্লিওলাস কী?
উত্তর: নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে অবস্থিত ক্ষুদ্র, গোলাকার, উজ্জ্বল ও অপেক্ষাকৃত ঘন বস্তুটি হলো নিউক্লিওলাস। নিউক্লিয়াসের ভেতরে, প্রোটিন ও ডিএনএ দ্বারা গঠিত যে ছোট, গোলাকার ও অধিকতর ঘন বস্তুটি ক্রোমাটিন তন্তুর সাথে লেগে থাকে, তাকে নিউক্লিওলাস বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১। ক্রোমোসোম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: নিউক্লিওপ্লাজমে ভাসমান অবস্থায় প্যাচানো সুতার মতো গঠনটি নিউক্লিওজালিকা বা ক্রোমাটিন জালিকা নামে পরিচিত। কোষ বিভাজনের সময় তন্তুময় গঠনটি কতকগুলো টুকরায় পৃথক হয়ে যায়। এ প্রতিটি টুকরাকে ক্রোমোসোম বলা হয়।
উত্তর: নিউক্লিওপ্লাজমে ভাসমান অবস্থায় প্যাচানো সুতার মতো গঠনটি নিউক্লিওজালিকা বা ক্রোমাটিন জালিকা নামে পরিচিত। কোষ বিভাজনের সময় তন্তুময় গঠনটি কতকগুলো টুকরায় পৃথক হয়ে যায়। এ প্রতিটি টুকরাকে ক্রোমোসোম বলা হয়।
২. হৃদপেশিকে কেন অনৈচ্ছিক পেশি বলে?
উত্তর: যে পেশি আমাদের ইচ্ছামতো সংকুচিত হয় না তাদের অনৈচ্ছিক পেশি বলে। হৃদপেশি নামে বিশেষ এক ধরনের অনৈচ্ছিক পেশি আছে। এ পেশি নিজ ছন্দে পর্যায়ক্রমে সংকুচিত ও স্বাভাবিক হয়ে দেহের রক্ত সঞ্চালন করছে। শুধু হূৎপিণ্ড এ পেশি দ্বারা গঠিত।
৩। জীব দেহে টিস্যু গুচ্ছাকারে থাকে কেন?
উত্তর: টিস্যুগুলোর মধ্যে একদিকে শ্রেণিবিন্যাস ঘটে এবং অপরদিকে শ্রমবিভাজন হয়ে থাকে। যদি কোষগুলো একই সাথে ও একই রকমভাবে জৈবিক কার্য সম্পন্ন করতো তাহলে সুষ্ঠু জৈবিক ধারা বজায় থাকত না। সুষ্ঠু জৈবিক ক্রিয়া এবং সুষ্ঠু জীবনধারা রক্ষায় বিভিন্ন প্রকার কোষ একত্রে কাজ করার জন্য জীবদেহে টিস্যু গুচ্ছাকারে থাকে।
৪। লিউকোপ্লাস্ট বলতে কী বোঝ?
উত্তর: লিউকোপ্লাস্ট হলো বর্ণহীন প্লাস্টিড। উদ্ভিদের যেসব অংশে আলো পৌছায় না, সেসব অংশের কোষে লিউকোপ্লাস্ট থাকে যেমন মূলের কোষের প্লাস্টিড। এছাড়াও সবুজ দূর্বা ঘাস ইট দিয়ে কিছুদিন ঢেকে রাখলে ঘাসগুলো সাদা হয়ে যায়। কারণ বর্ণযুক্ত ক্লোরোপ্লাস্টগুলো বর্ণহীন লিউকোপ্লাস্টে রূপান্তরিত হয়ে যায়।
৫ ৷ মাইটোকন্ড্রিয়াকে শক্তিঘর বলা হয় কেন?
উত্তর: মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের শ্বসন অঙ্গাণু। এখানেই শ্বসনের সকল কাজ সম্পন্ন হয়। আর এ শ্বসনের মাধ্যমেই জীবদেহে শক্তি উৎপন্ন হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোষের জৈবিক কাজ পরিচালনার জন্য যে শক্তি প্রয়োজন তার একমাত্র উৎস হলো মাইটোকন্ড্রিয়া। তাই মাইটোকন্ড্রিয়াকে শক্তিঘর বলা হয়।
৬। সাইটোপ্লাজমিক অঙ্গাণু বলতে কী বুঝ?
উত্তর: সাইটোপ্লাজম হলো কোযের প্রোটোপ্লাজমের নিউক্লিয়াসের বাহিরে জেলির মতো অংশ। এর অভ্যন্তরে অবস্থিত কোষের বিভিন্ন জৈবনিক ক্রিয়াকলাপের সাথে সংশ্লিষ্ট সজীব বস্তুসমূহকে একত্রে সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু বলা হয়। প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজি বডি, রাইবোজোম, লাইসোজোম ইত্যাদি অঙ্গাণু হলো সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু।
৭। পেশির কাজ উল্লেখ কর।
উত্তর: পেশির কাজ হলো-
১. দেহের আকৃতি দান করে ও অস্থি সঞ্চালনে সহায়তা করে।
২. নড়াচড়া ও চলাচলে সাহায্য করে।
৩. হৃদপেশি দেহে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে।
২. নড়াচড়া ও চলাচলে সাহায্য করে।
৩. হৃদপেশি দেহে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে।
৮। সবুজ দূর্বাঘাস ইট দিয়ে ঢেকে রাখলে কিছুদিন পর সাদা দেখায় কেন?
উত্তর: সবুজ দূর্বাঘাস ইট দিয়ে কিছুদিন ঢেকে রাখার পর ঘাসগুলো সাদা দেখায় । কারণ ক্লোরোপ্লাস্টগুলো লিউকোপ্লাস্টে রূপান্তরিত হয়ে যায়।
৯। প্লাস্টিডকে উদ্ভিদের অনন্য বৈশিষ্ট্য বলা হয় কেন?
উত্তর: প্লাস্টিড উদ্ভিদের এমন একটি উপাদান যা শুধু উদ্ভিদকে বেঁচে থাকার জন্য সাহায্য করে না এটি সব উদ্ভিদকে বাঁচিয়ে রাখে। তাই প্লাস্টিডকে উদ্ভিদের অনন্য বৈশিষ্ট্য বলা হয়।
১০। কোষগহ্বরকে কোষের ভাণ্ডার বলা হয় কেন?
উত্তর : কোষগহ্বরে পানি, জৈব এসিড, শর্করা ইত্যাদি জমা থাকে। তাই একে কোষের সজ্জিত খাদ্যের ভাণ্ডার বলে।
১১। আমরা কনুই সোজা বা বাঁকা করতে পারি কেন?
উত্তর: ঐচ্ছিক পেশির কারণে আমরা কনুই সোজা বা বাঁকা করতে পারি। আমরা যখন কনুই সোজা করি তখন ঊর্ধ্ববাহুর পেছনের পেশি সংকুচিত হয়ে নিম্নবাহু টেনে সোজা করে। আবার যখন কনুই বাঁকা করি তখন ঊর্ধ্ববাহুর সামনের দিকের পেশি সংকুচিত হয়ে বাহুকে টেনে বাঁকা করে।