সপ্তম শ্রেণি, ইসলাম ও নৈতিকশিক্ষা, দ্বিতীয় অধ্যায় (ইবাদত) || Class Seven, Islam and Moral Education, Chapter 2 (Worship)
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১। কয় ওয়াক্ত সালাত ছুটে গেলে কাযা করতে হয় না?
উত্তর: পাঁচ ওয়াত্তের বেশি সালাত ছুটে গেলে, তার আর কাযা করতে হয় না।
২। মুক্তাদি কাকে বলে?
উত্তর: যিনি ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে তাঁকে অনুরেণ করে সাগত আদায় করেন, তাকে মুক্তাদি বলে।
৩। কসর কী?
উত্তর: মুসাফির অবস্থায় জোহর, আসর ও এশার ৪ রাকআত ফরজ নামাযকে দুই রাকআত আদায় করার বিধানকে কসর বলে।
৪। ঈদুল ফিতরের দিনে ওয়াজিব কাজ কয়টি?
উত্তর: ঈদুল ফিতরের দিনে ওয়াজিব কাজ দুটি। যথা-
১. ফিতরা দেওয়া,
২. ঈদের দুই রাকআত সালাত ছয় তাকবিরের সাথে আদায় করা।
২. ঈদের দুই রাকআত সালাত ছয় তাকবিরের সাথে আদায় করা।
৫। ঈদুল ফিতর অর্থ কী?
উত্তর: ঈদুল ফিতর অর্থ হলো সাওম ভাঙ্গার আনন্দ।
৬। মাসবুকের সালাত কাকে বলে?
উত্তর: যে ব্যক্তি নামাযে এক বা একাধিক রাকআত শেষ হওয়ার পর ইমামের সাথে জামাতে অংশগ্রহণ করে তাকে মাসবুক বলে। মাকবুক তার ছুটে যাওয়া নামায আদায় করাই হলো- মাসবুকের সালাত।
৭। জুমার সালাত কখন কোন দিন আদায় করতে হয়?
উত্তর: জুমার সালাত শুক্রবার দিন যোহরের সময়ে আদায় করতে হয়।
৮। আল্লাহর নিকট বান্দার আনুগত্য ও বিনয় প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম কী?
উত্তর: আল্লাহর নিকট বান্দার আনুগত্য ও বিনয় প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম হচ্ছে সালাত।
৯। কিসের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে বেশি নৈকট্য লাভ করতে পারে?
উত্তর: সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে বেশি নৈকট্য লাভ করতে পারে।
১০। জামাত কী শব্দ?
উত্তর: জামাত আরবি শব্দ।
১১। জামাত - এর অর্থ কী?
উত্তর: জামাত - এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সমবেত হওয়া প্রভৃতি।
১২। 'ইমাম' অর্থ কী?
উত্তর: ‘ইমাম' অর্থ নেতা।
১৩। জামাতে সালাত আদায় কী শিক্ষা দেয়?
উত্তর: জামাতে সালাত আদায় শৃঙ্খলাবোধ, সময়ানুবর্তিতা ও নেতার প্রতি আনুগত্য শিক্ষা দেয়।
১৪। মুক্তাদি কী বলে সালাতের নিয়ত করবে?
উত্তর: মুক্তাদি এ বলে সালাতের নিয়ত করবে যে, 'আমি এ ইমামের পিছনে সালাত আদায় করছি।'
১৫। মুসাফির অবস্থায় কী কী সালাত কসর পড়তে হয়?
উত্তর: মুসাফির অবস্থায় যোহর, আসর ও ইশার ফরয সালাত কসর পড়তে হয়।
১৬। সালাত এবং জুমা দুটি কী শব্দ?
উত্তর: সালাত এবং জুমা দুটিই আরবি শব্দ।
১৭। জুমার সালাত কাকে বলে?
উত্তর: শুক্রবার যোহরের সময়ে যোহরের সালাতের পরিবর্তে যে সালাত আদায় করা হয় তাকে বলা হয় জুমার সালাত।
১৮। জুমার সালাতে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কোনটি?
উত্তর: ফরযের আগে চার রাকআত কাবলাল জুমা ও পরে চার রাকআত বাদাল জুমা আদায় করার সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
১৯। জুমার জন্য কয়টি আযান দেওয়া হয়?
উত্তর: জুমার জন্য দুটি আযান দেওয়া হয়।
২০। জুমার সালাতের আগে মুসলমানদের খুতবা শোনা কী?
উত্তর: জুমার সালাতের আগে মুসলমানদের খুতবা শোনা ওয়াজিব।
২১। কোনো কারণে জুমাতে অংশগ্রহণ করতে না পারলে কী সালাত আদায় করতে হয়?
উত্তর: কোনো কারণে জুমাতে অংশগ্রহণ করতে না পারলে যোহরের সালাত আদায় করতে হয়।
২২। জুমার সালাতের ফলে সকলের মধ্যে কী গড়ে ওঠে?
উত্তর: জুমার সালাতের ফলে সকলের মধ্যে সম্প্রীতি, ভালোবাসা ও ভাতৃত্ববোধ গড়ে ওঠে।
২৩। মুসলমানগণ ঈদুল ফিতর উৎসব পালন করে কবে?
উত্তর: রমযানের পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিন মুসলমানগণ এ উৎসব পালন করে।
২৪। ঈদের তাকবির কী?
উত্তর: আল্লাহু আকবার - ওয়াল্লাহু আকবার - আল্লাহু আকবার - আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
২৫। বছরে কয়দিন মহান আল্লাহ মানুষের জন্য মহাসম্মেলনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন?
উত্তর: বছরে দুই দিন মহান আল্লাহ মানুষের জন্য মহাসম্মেলনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
২৬। কুরবানির গোশত কয় ভাগে ভাগ করতে হয়?
উত্তর: কুরবানির গোশত তিন ভাগে ভাগ করতে হয়।
২৭। ঈদুল আযহার ওয়াজিব কাজ কয়টি?
উত্তর: ঈদুল আযহার ওয়াজিব কাজ দুটি।
২৮। ঈদুল আযহার দিন কখন কিছু খাওয়া সুন্নাত?
উত্তর: ঈদুল আযহার দিন সালাত ও কুরবানির পর কিছু খাওয়া সুন্নাত।
২৯। ঈদুল ফিতরের সুন্নাত কাজ কয়টি?
উত্তর: ঈদুল ফিতরের সুন্নাত কাজ ৭ টি।
৩০। ঈদুল আযহার সালাত কোন সময় পর্যন্ত আদায় করা যায়?
উত্তর: ঈদুল আযহার সালাত ঈদের দিন সূর্যোদয়ের পর থেকে দুপুরের পূর্ব পর্যন্ত আদায় করা যায়।
৩১। তারাবির সালাত কী?
উত্তর: তারাবির সালাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ।
৩২। তারাবিহের সালাত জামাতে আদায় করা কী?
উত্তর: তারাবিহের সালাত জামাতে আদায় করা সুন্নাত।
৩৩। তারাবিহর সালাত মোট কত রাকআত?
উত্তর: তারাবিহর সালাত মোট বিশ রাকআত।
৩৪। পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় কোনটি?
উত্তর: পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় হলো রমযান মাস।
৩৫। 'তাহাজ্জুদ' কী শব্দ এবং এর অর্থ কী?
উত্তর: তাহাজ্জুদ আরবি শব্দ এর অর্থ রাত জাগা, ঘুম থেকে ওঠা।
৩৬। তাহাজ্জুদের সালাত কাকে বলে?
উত্তর: মধ্যরাতের পর ঘুম থেকে ওঠে যে সালাত আদায় করতে হয় তাকে তাহাজ্জুদের সালাত বলে।
৩৭। তাহাজ্জুদ সালাতের মাধ্যমে বান্দার কী উন্নতি সাধিত হয় ?
উত্তর: তাহাজ্জুদ সালাতের মাধ্যমে বান্দার আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধিত হয়।
৩৮। রোযা কয় প্রকার?
উত্তর: রোযা ছয় প্রকার।
৩৯। কোনগুলো সুন্নাত রোযা?
উত্তর: রাসুলুল্লাহ (স) যে সকল রোযা নিজে পালন করেছেন এবং অন্যদের পালন করতে উৎসাহিত করেছেন সেগুলো সুন্নাত রোযা।
৪০। আশুরা ও আরাফার দিনে রোযা পালন করা কী?
উত্তর: আশুরা ও আরাফার দিনে রোযা পালন করা সুন্নাত।
৪১। কোন কোন দিন রোযা রাখা নফল ?
উত্তর: যে সকল দিনে রোযা পালন করা মাকরুহ ও হারাম, ঐ সকল দিন ব্যতীত অন্য যেকোনো দিন রোযা রাখা নফল।
৪২। 'সাহরি' কী শব্দ এবং এটি কোন কাজ থেকে উৎপত্তি হয়েছে?
উত্তর: ‘সাহরি' আরবি শব্দ এবং এটি সাহারুন শব্দ থেকে উৎপত্তি হয়েছে।
৪৩। সাহরি কাকে বলে?
উত্তর: রমযান মাসে রোযা পালনের উদ্দেশ্যে সুবহি সাদিকের পূর্বে যে খাবার খাওয়া হয় তাকে সাহরি বলে।
৪৪। ইফতার কাকে বলে?
উত্তর: ইসলামি পরিভাষায় সূর্যাস্তের পর নিয়তের সাথে হালাল বস্তু পানাহারের মাধ্যমে রোযা ভঙ্গ করাকে ইফতার বলে।
৪৫। ইফতার করার সময় কী বলে শুরু করা এবং কী বলে শেষ করা উত্তম?
উত্তর: ইফতার করার সময় বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা এবং 'আলহামদুলিল্লাহ' বলে শেষ করা উত্তম।
৪৬। সাওম ভঙ্গের কারণ কয়টি?
উত্তর: সাওম ভঙ্গের কারণ ৮ টি।
৪৭। সাওম মাকরুহ হওয়ার কারণ কয়টি?
উত্তর: সাওম মাকরুহ হওয়ার কারণ ৫ টি।
৪৮। কোন রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম?
উত্তর: লাইলাতুল কদর - এর রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।
৪৯। রমযানের শেষ দশ দিন ই'তিকাফ করা কী?
উত্তর: রমযানর শেষ দশ দিন ই'তিকাফ করা সুন্নাত।
৫০। কবে ‘সাদকাতুল ফিতর' আদায় করা উত্তম ?
উত্তর: ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে ঈদের মাঠে রওনা হওয়ার পূর্বে ‘সাদকাতুল ফিতর' আদায় করা উত্তম।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১। ইমাম হওয়ার যোগ্যতা কী?
উত্তর: সালাতের ইমামের ন্যূনতম যোগ্যতা হবে যার কিরাআত শুদ্ধ, সুন্দর, যিনি ইসলামি জ্ঞান সমৃদ্ধ এবং বয়সে বড়। এছাড়া তাঁকে সঠিক আকিদা সম্পন্ন ও আমলদার হতে হবে। তবে ইমাম যদি সামাজিক নেতা বা রাজনৈতিক নেতা অর্থে ব্যবহৃত হয় , তাহলে তাকে এসব গুণের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সম্পন্ন হতে হবে। ইসলামি জ্ঞানের সাথে সাথে সাধারণ জ্ঞানেও যথেষ্ট পারদর্শী হতে হবে। যাতে হক ও বাতিলের পার্থক্য করতে পারে। তাকে সমকালীন বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কেও সুস্পষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে।
উত্তর: সালাতের ইমামের ন্যূনতম যোগ্যতা হবে যার কিরাআত শুদ্ধ, সুন্দর, যিনি ইসলামি জ্ঞান সমৃদ্ধ এবং বয়সে বড়। এছাড়া তাঁকে সঠিক আকিদা সম্পন্ন ও আমলদার হতে হবে। তবে ইমাম যদি সামাজিক নেতা বা রাজনৈতিক নেতা অর্থে ব্যবহৃত হয় , তাহলে তাকে এসব গুণের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সম্পন্ন হতে হবে। ইসলামি জ্ঞানের সাথে সাথে সাধারণ জ্ঞানেও যথেষ্ট পারদর্শী হতে হবে। যাতে হক ও বাতিলের পার্থক্য করতে পারে। তাকে সমকালীন বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কেও সুস্পষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে।
২। মুসাফিরের জন্য সালাত সংক্ষিপ্ত করার অনুমতি প্রদানের কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: সফর একটি কষ্টকর বিষয়। তাই আল্লাহ তার মুসাফির বান্দার ওপর সালাত সংক্ষিপ্ত করার অনুমতি প্রদান করেছেন। আল্লাহর দেওয়া সকল সুযোগ-সুবিধা খুশি মনে গ্রহণ করা উচিত। কাজেই কোনো মুসাফির ব্যক্তি যদি ইচ্ছে করে যোহর, আসর বা ইশার ফরয সালাত চার রাকআত আদায় করে , তবে আল্লাহর দেওয়া সুযোগ গ্রহণ না করায় গুনাহগার হবে। কিন্তু ইমাম যদি মুকিম (স্থায়ী) হয় তা হলে সে ইমামের অনুসরণ করে পূর্ণ সালাত আদায় করবে।
তিলাওয়াত দীর্ঘ বা ছোট করা। মুসল্লিদের মধ্যে অনেকে বৃদ্ধ, রুম, দুর্বল ও মুসাফির থাকতে পারে। তাই ইমামকে সকলের প্রতি লক্ষ রেখে সালাত আদায় করতে হবে।
৩। সাওমের কাফ্ফারা কীভাবে আদায় করতে হয়?
উত্তর: ইচ্ছাকৃত রোযা পালন না করলে বা রোযা রেখে বিনা কারণে ভেঙে ফেললে কাযা এবং কাফ্ফারা উভয়ই ফরয হবে। সাওমের কাফফারা নিম্নরূপ-
১. একাধারে দুই মাস রোযা পালন করা;
২. এতে অক্ষম হলে ৬০ জন মিসকিনকে পরিতৃপ্তির সাথে দুই বেলা খাওয়ানো;
৩. একজন গোলামকে আযাদ করা। একাধারে দুই মাস কাফ্ফারার রোযা আদায়কালীন যদি মাসে দুই একদিন বাদ পড়ে যায় তবে পূর্বের রোযা বাতিল হয়ে যাবে। পুনরায় নতুন করে দুই মাস রোযা পালন করতে হবে। তবে মহিলাদের ব্যাপারে কিছুটা ব্যতিক্রম আছে।
২. এতে অক্ষম হলে ৬০ জন মিসকিনকে পরিতৃপ্তির সাথে দুই বেলা খাওয়ানো;
৩. একজন গোলামকে আযাদ করা। একাধারে দুই মাস কাফ্ফারার রোযা আদায়কালীন যদি মাসে দুই একদিন বাদ পড়ে যায় তবে পূর্বের রোযা বাতিল হয়ে যাবে। পুনরায় নতুন করে দুই মাস রোযা পালন করতে হবে। তবে মহিলাদের ব্যাপারে কিছুটা ব্যতিক্রম আছে।
৪। ঈদের সালাত আদায়ের নিয়ম ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ঈদের সালাত অন্যান্য সালাতের মতোই অতিরিক্ত ছয় তাকবিরের সাথে আদায় করতে হয় । সালাত শেষে ইমাম সাহেব প্রদত্ত দুটো খুৎবা শোনা ওয়াজিব।
৫। ঈদুল ফিতর কেন বলা হয় ?
উত্তর: ঈদ মানে আনন্দ। আর ফিতর অর্থ সাওম বা রোযা ভঙ্গ করা। ঈদুল ফিতর অর্থ সাওম ভঙ্গের আনন্দ। সুদীর্ঘ একটি মাস আল্লাহর নির্দেশমতো রোযা পালনের পর বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এদিনে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসে আনন্দ-উৎসব করে বলে একে ঈদুল ফিতর বলা হয় । রমযানের পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিন মুসলমানগণ এ উৎসব পালন করে।
৬। রুম ব্যক্তির সালাত কীভাবে পড়তে হয়? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: রুগ্ন ব্যক্তিকে হুঁশ থাকা পর্যন্ত সময়ের মধ্যেই সালাত আদায় করতে হবে। রোগ যত কঠিন হোক না কেন, সম্পূর্ণরূপে অপারগ না হলে সালাত ত্যাগ করা যাবে না। রোগীর দাঁড়াতে কষ্ট হলে বসে রুকু- সিজদার সাথে সালাত আদায় করবে । রুকু - সিজদা করতে অক্ষম হলে বসে ইশারায় সালাত আদায় করবে।
৭। জামাতে সালাত বলতে কী বোঝ?
উত্তর: জামাআত আরবি শব্দ। এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সমবেত হওয়া প্রভৃতি। ইসলামি পরিভাষায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় মুসলিম সম্প্রদায় ইমামের সহিত একত্রিত হয়ে সালাত আদায় করাকে জামাতে সালাত আদায় বলে।
৮। অধিক সাওয়াব পাওয়ার আশায় প্রত্যেক মুমিন বান্দাকে জামাতে সালাত আদায় করতে হবে কেন ?
উত্তর: নবি করিম (স) জামাতে সালাত আদায়ের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন, “একাকী সালাত আদায় অপেক্ষা জামাতে আদায় করলে সাতাশগুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়।" (বুখারি ও মুসলিম)
জামাতে সালাত আদায়কারীকে নবি করিম (স) খুবই পছন্দ করতেন। তিনি নিজে কখনো জামাত ত্যাগ করেননি। আবার কেউ জামাতে উপস্থিত না হলে তিনি খোঁজ নিতেন এবং এতে তিনি (স) অসন্তুষ্ট হতেন। তাই অধিক সাওয়াব পাওয়ার আশায় প্রত্যেক মুমিন বান্দাকে জামাতে সালাত আদায় করতে হয়।
৯. সাদকাতুল ফিতর বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে গরিব-দুঃখীদের সহযোগিতায় (খাদ্যস্বরূপ) রোযার ত্রুটিবিচ্যুতি সংশোধনে ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থসম্পদ দান করা হয় তাকে সাদাকাতুল ফিতর বলে।
১০। জামাআতের সালাতে ইমামের কর্তব্য সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: ইমাম অর্থ নেতা। যিনি সালাত পরিচালনা করেন তিনিই ইমাম । ইমামের কর্তব্য হচ্ছে সালাতে কাতার সোজা হলো কি না সেদিকে দৃষ্টি রাখা। মুসল্লিদের মধ্যে সুসম্পর্ক রক্ষা করা। সৎ উপদেশ দেওয়া এবং মুসল্লিদের প্রতি দায়িত্ব যথাযথ পালন করা। ইমাম হিংসা - বিদ্বেষ , প্রবৃত্তির অনুসরণ ও ইসলাম বহির্ভূত কাজকর্ম থেকে দূরে থাকবেন। তাঁর উচিত মুসল্লিদের অবস্থা দেখে সালাতে তিলাওয়াত দীর্ঘ বা ছোট করা। মুসল্লিদের মধ্যে অনেকে বৃদ্ধ, রুগ্ন, দুর্বল ও মুসাফির থাকতে পারে, তাই ইমামকে সকলের প্রতি লক্ষ রেখে সালাত আদায় করতে হবে।
১১। আরবিতে কসর বলতে কী বোঝ?
উত্তর: কমপক্ষে ৪৮ মাইল দূরবর্তী কোনো স্থানে যাওয়ার নিয়তে কোনো ব্যক্তি বাড়ি থেকে বের হলে শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুসাফির বলে। শরিয়তে মুসাফিরকে সংক্ষিপ্ত আকারে সালাত আদায়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ সংক্ষিপ্তকরণকে আরবিতে কসর বলে। মুসাফির অবস্থায় যোহর , আসর ও ইশার ফরয সালাত কসর পড়তে হয়।
১২। ঈদের দিনের সুন্নাত কাজগুলো সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : ঈদের দিনে কতকগুলো কাজ করা সুন্নাত। সে কাজগুলো নিম্নরূপ-
১. গোসল করা।
২. সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৩. পবিত্র ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরা।
৪. সালাত আদায়ের পূর্বে মিষ্টিজাতীয় খাদ্য খাওয়া।
৫ . ময়দানে গিয়ে ঈদের সালাত আদায় করা।
৬ . ঈদগাহে যাওয়ার সময় তাকবির বলতে বলতে যাওয়া।
৭. এক রাস্তায় ঈদগাহে যাওয়া এবং অন্য রাস্তায় ফিরে আসা।
২. সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৩. পবিত্র ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরা।
৪. সালাত আদায়ের পূর্বে মিষ্টিজাতীয় খাদ্য খাওয়া।
৫ . ময়দানে গিয়ে ঈদের সালাত আদায় করা।
৬ . ঈদগাহে যাওয়ার সময় তাকবির বলতে বলতে যাওয়া।
৭. এক রাস্তায় ঈদগাহে যাওয়া এবং অন্য রাস্তায় ফিরে আসা।
১৩ । ঈদকে যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা মুসলমানদের অবশ্য। কর্তব্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ঈদের দিন আত্মীয়স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশী সকলের খোঁজখবর নিতে হয়। সাধ্যমতো তাদের বাসায় মিষ্টান্ন খাদ্য যেমন— পিঠা, পায়েস , সেমাই ইত্যাদি খাবার পাঠাতে হয় । ধনী, গরিব, মিসকিন সকলের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে হয়। এতে সকলের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। ঈদ আসে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে সীমাহীন প্রীতি, ভালোবাসা ও কল্যাণের সংবাদ নিয়ে। তাই ঈদকে যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপন করা মুসলমানদের অবশ্য কর্তব্য।
১৪। ঈদের সালাত থেকে আমরা কী ধরনের শিক্ষা গ্রহণ করব? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: ঈদের দিন আমরা ভেদাভেদ ভুলে যাব। বড়দের সম্মান করব , ছোটদের স্নেহ দেব। একে অন্যের সাথে সুখ - দুঃখ ভাগাভাগি করে নেব। পরস্পরের সাথে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তুলব। একে অপরকে ভালোবাসার শিক্ষা গ্রহণ করব। পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহমর্মিতায় আমাদের জীবনকে সুন্দর করে গঠন করার শিক্ষা গ্রহণ করব। তদুপরি সামাজিক সাম্যের শিক্ষা গ্রহণ করব।
১৫। 'মূলত জানাযার সালাত মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া'— কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: মানুষ মরণশীল। প্রত্যেককেই একদিন না একদিন মরতে হবে। মৃত ব্যক্তির প্রতি জীবিতদের অনেক কর্তব্য আছে। মৃতকে গোসল দেওয়া, কাফন পরানো, তার ওপর জানাযার সালাত আদায় করা এবং সবশেষে তাকে কবরস্থ করা একান্ত জরুরি। মূলত জানাযার সালাত হলো মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া। যত বেশি লোক -একত্রিত হয়ে দোয়া করবে ততই তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই জানাযার সালাতে লোক যত সংখ্যক বেশি হবে ততোই ভালো। কিন্তু লোকসংখ্যা বেশি হবার জন্য জানাযা বিলম্ব করা ঠিক নয়।
১৬। তারাবিহর সালাত আদায়ের নিয়ম-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: রমযান মাসে ইশার ফরয ও দুই রাকআত সুন্নাতের পর বিতরের পূর্বে তারাবিহের নিয়তে দুই রাকআত করে মোট বিশ রাকআত সালাত আদায় করতে হয়। প্রতি চার রাকজাত অন্তর বসে বিশ্রাম নিতে হয়। তখন বিভিন্ন তাসবিহ পড়া যায়। তারাবিহের নালাত শেষ করে বিতরের সালাত রমযান মাসে জামাতে আদায় করার বিধান রয়েছে।
১৭। মহানবি (স) - এর ওপর তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের বিশেষ তাগিদ দেওয়া হয়েছিল- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: 'তাহাজ্জুদ' আরবি শব্দ এর অর্থ রাত জাগা, ঘুম থেকে ওঠা। মধ্যরাতের পর ঘুম থেকে ওঠে যে সালাত আদায় করতে হয় তাকে তাহাজ্জুদের সালাত বলে। তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করা সুন্নাত। এর গুরুত্ব অপরিসীম। নবি করিম (স) প্রতিনিয়ত সালাত আদায় করতেন এবং সাহাবিগণকেও আদায়ের জন্য উৎসাহিত করতেন। তাই মহানবি (স) -এর ওপর তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের বিশেষ তাগিদ দেওয়া হয়েছিল। মহান আল্লাহ বলেন, “রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করুন। এ সালাত আপনার জন্য অতিরিক্ত।" বনি ইসরাইল: ৭৯ ]
কোনো কারণে তাহাজ্জুদের সালাত ছুটে গেলে মহানবি (স) দুপুরের আগেই আদায় করে নিতেন।
১৮। সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের নিয়ম বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: ঈদের সালাতের পূর্বে নিসাব পরিমাণ মালের মালিকের সাদাকাতুল ফিতর আদায় করতে হয়। ঈদের দু-একদিন আগে ‘সাদাকাতুল ফিতর' আদায় করা যায়। তবে ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে ঈদের মাঠে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে 'সাদাকাতুল ফিতর' আদায় করা উত্তম। ঈদের পর কেউ এটি আদায় করলে , আদায় হবে কিন্তু সাওয়াব কম হবে।
১৯। জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষের স্বীয় প্রবৃত্তিকে সংযমের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ রাখা প্রয়োজন— বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: মানুষের মধ্যে যেমন মানবিক ভালো গুণ থাকে; তেমনি তার মধ্যে দৈহিক ও পাশবিক শক্তিও থাকে। পাশবিক শক্তি তাকে স্বেচ্ছাচারিতার পথে পরিচালিত করে। স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সমাজে অনাচার, কোন্দল, কলহ ও অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। তাই জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষের স্বীয় প্রবৃত্তিকে সংযমের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ রাখা প্রয়োজন।