সপ্তম শ্রেণি, ইসলাম ও নৈতিকশিক্ষা, চতুর্থ অধ্যায় (আখলাক) || Class Seven, Islam and Moral Education, Chapter 4
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১। আমানত বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: আমানত বলতে বোজায় কোনো ব্যক্তি অন্য কারো কাছে কোনো কিছু গচ্ছিত রাখা।
২। আল্লাহ কখন বান্দার প্রতি শান্তি বর্ষণ করেন?
উত্তর: যে ব্যক্তি সৃষ্টির প্রতি দয়া ও সহানুভূতি প্রদর্শন করে, আল্লাহ তখন ওই বান্দার প্রতি শান্তি বর্ষণ করেন।
৩। ক্ষমার আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: ক্ষমার আরবি প্রতিশব্দ হলো 'আফউন’।
৪। শালীনতা অর্থ কী?
উত্তর: শালীনতা অর্থ - ভদ্রতা, নম্রতা ও লজ্জাশীলতা।
৫। “হাসাদুন" শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘হাসাদুন' আরবি শব্দ। এর অর্থ হিংসা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি।
৬। আখলাক অর্থ কী?
উত্তর: আখলাক আরবি শব্দ। এর অর্থ চরিত্র, স্বভাব, আচার-আচরণ, ব্যবহার ইত্যাদি।
৭। আখলাক কাকে বলে?
উত্তর: মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের মাধ্যমে যেসব আচার-ব্যবহার, চালচলন এবং স্বভাবের প্রকাশ পায় সেসবের সমষ্টিই হলো আখলাক।
৮। মানুষের ইমানকে পূর্ণতা দান করে কী?
উত্তর: উত্তম চরিত্র মানুষের ইমানকে পূর্ণতা দান করে।
৯। পরোপকার কী?
উত্তর: অন্যের প্রয়োজনে বা উপকারে আসার নামই হলো পরোপকার।
১০। পরোপকারের আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: পরোপকারের আরবি প্রতিশব্দ হলো 'ইহসান', যার অর্থ অন্যের উপকার করা।
১১। মহান আল্লাহর একটি বড় গুণ কী?
উত্তর: পরোপকার মহান আল্লাহর একটি বড় গুণ।
১২। শালীনতার আরবি প্রতিশব্দ কী ?
উত্তর: শালীনতার আরবি প্রতিশব্দ 'তাহযিব'।
১৩। শালীনতা কাকে বলে?
উত্তর: আচার-আচরণ, কথাবার্তায়, বেশভূষায় ও চালচলনে মার্জিত পন্থা অবলম্বন করাকে শালীনতা বলে।
১৪। কে নিজ হাতে যাঁতা ঘুরাতেন ?
উত্তর : প্রিয়নবি (স) - এর কন্যা হযরত ফাতিমা (রা) নিজ হাতে যাঁতা ঘুরাতেন।
১৫। মহান আল্লাহর অন্যতম গুণ কী?
উত্তর: মহান আল্লাহর অন্যতম গুণ ক্ষমা।
১৬। ক্ষমার আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: ক্ষমার আরবি প্রতিশব্দ ‘আউন’।
১৭। ‘আফ্উন’ এর অর্থ কী?
উত্তর: ‘আউন' এর অর্থ মাফ করা, প্রতিশোধ গ্রহণ না করা ইত্যাদি।
১৮। ক্ষমার ব্যাপারে কার নীতি ও আদর্শ আমাদের অনুসরণ করা আবশ্যক?
উত্তর: ক্ষমার ব্যাপারে মহান রাব্বুল আলামীনের নীতি ও আদর্শ আমাদের অনুসরণ করা আবশ্যক।
১৯। আখলাকে যামিমা বা নিন্দনীয় আচরণ কাকে বলে?
উত্তর: এমন কিছু আচরণ বা কাজ যা মানুষকে হীন, নিচু ও নিন্দনীয় করে তোলে সেগুলোকে আখলাকে যামিমা বা নিন্দনীয় আচরণ বলে।
২০। হিংসা কাকে বলে?
উত্তর: অন্যের সুখসম্পদ, মানসম্মান নষ্ট হওয়ার কামনা এবং নিজে এর মালিক হওয়ার বাসনা করাকে হিংসা বলে।
২১। হিংসা শব্দের আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: হিংসা শব্দের আরবি প্রতিশব্দ 'হাসাদুন'। যার অর্থ হিংসা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি।
২২। মানব সৃষ্টির পর কী কারণে সর্বপ্রথম পাপ সংঘটিত হয়?
উত্তর: মানব সৃষ্টির পর হিংসার কারণেই সর্বপ্রথম পাপ সংঘটিত হয়।
২৩। 'ক্রোধ' এর আরবি প্রতিশব্দ কী ?
উত্তর: 'ক্রোধ’ এর আরবি প্রতিশব্দ ‘গাদাব’। যার অর্থ রাগ।
২৪। ক্ৰোধ কাকে বলে?
উত্তর: স্বীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়া বা কারও দ্বারা তিরস্কৃত হওয়ার কারণে প্রতিশোধ গ্রহণের ইচ্ছায় মানুষের মনের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় তাকে ক্রোধ বলে।
২৫। কিসের মাধ্যমে আল্লাহর গযব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়?
উত্তর: ক্রোধ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আল্লাহর গযব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
২৬। ‘লোভ’ এর আরবি শব্দ কী?
উত্তর: লোভ -এর আরবি প্রতিশব্দ 'হিরছুন'। এর অর্থ লালসা, লিপ্সা, মোহ, আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা ইত্যাদি।
২৭। লোভ কী?
উত্তর: অধিক পাওয়ার ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষাকে লোভ বলে।
২৮। এখানে 'ইভ' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: এখানে ‘ইভ' বলতে নারী সমাজকে বোঝানো হয়েছে।
২৯। 'Tease' অর্থ কী?
উত্তর: 'Tease' অর্থ পরিহাস, জ্বালাতন করা, উত্ত্যক্ত করা, খেপানো ইত্যাদি।
৩০। ইভটিজিং বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ইভটিজিং বলতে কথা, কাজ, আচরণ ইত্যাদির মাধ্যমে নারীদের উত্ত্যক্ত করাকে বোঝানো হয়েছে।
৩১ ৷ ছিনতাই কাকে বলে?
উত্তর: জোরপূর্বক বা বলপ্রয়োগ করে অন্যের সম্পদ ছিনিয়ে নেওয়াকে ছিনতাই বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১। আমানত রক্ষা করা প্রয়োজন কেন?
উত্তর: সমাজের প্রতিটি মানুষের নিজ নিজ দায়িত্ব তার নিকট পবিত্র আমানত। সামাজিক শান্তি রক্ষার জন্য আমানত রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যিনি আমানত রক্ষা করেন তাকে সবাই বিশ্বাস করে এবং ভালোবাসে। সমাজের সবাই তাকে মর্যাদা দেয়। আমানত রক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে মহান আল্লাহ বলেন , “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা যেন আমানতসমূহ তার মালিককে যথাযথভাবে ফেরত দাও।" (সূরা আল নিসা: ৫৮) আমানত রক্ষা করা ইমানের অঙ্গ। এ ব্যাপারে মহানবি (স) বলেন, “যার আমানতদারি নেই তার ইমানও নেই।” (বায়হাকি)।
২। পরোপকার বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে। আর সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে হলে একে অপরের সহযোগিতা প্রয়োজন। অন্যের প্রয়োজনে বা উপকারে আসার নামই হলো পরোপকার। পরোপকারের আরবি প্রতিশব্দ হলো 'ইহসান'। যার অর্থ অন্যের উপকার করা। আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি মানুষের যে দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে সেগুলোকে উত্তম বা যথাযথভাবে পালন করার নামই পরোপকার।
৩। শালীনতার গুরুত্ব এত বেশি কেন?
উত্তর: শালীনতাবোধ মানুষকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে এবং আল্লাহর অনুগত বান্দা হতে সাহায্য করে। তাই শালীনতার গুরুত্ব এত বেশি।
৪। রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকারী বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় হলো—মা-বাবা , ভাইবোন , দাদা, চাচা, ফুফু ইত্যাদি । এদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক যে ছিন্ন করে , সে হলো রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকারী।
৫। “ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতারণা অতি গর্হিত কাজ” — ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: “ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতারণা অতি গর্হিত কাজ।" কারণ প্রতারণা করা মুনাফিকের কাজ। রাসুল (স) বলেছেন, “যেব্যক্তি প্রতারণা করে সে “আমার উম্মত নয়।" সত্যিকার ইমানদার লোক কখনো প্রতারণা করেন না। মানুষকে ধোঁকা দেন না এবং ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। মহান আল্লাহ তায়ালা প্রতারণার ব্যাপারে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন— “তোমরা সত্যের সাথে মিথ্যার মিশ্রণ করো না এবং জেনে বুঝে সত্যকে গোপন কর না।" তাই প্রতারণার মতো গর্হিত কাজ থেকে সকলের বেঁচে থাকা উচিত।
৬। আখলাকে হামিদার গুরুত্ব বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: মানবজীবনে আখলাকে হামিদার (উত্তম চরিত্রের) গুরুত্ব অপরিসীম। মানবজীবনের সুখ-শান্তি আখলাকে হামিদা বা প্রশংসনীয় আচরণের ওপর নির্ভরশীল । প্রশংসনীয় আচরণের মাধ্যমেই উত্তম চরিত্র গড়ে ওঠে। আখিরাতের সুখ - দুঃখও আখলাকে হামিদার ওপর নির্ভর করে। যার স্বভাব-চরিত্র যত সুন্দর হবে সে ততই সৎকর্মশীল হবে এবং আল্লাহর কাছে প্রিয় হবে।
৭। পরোপকারের পাঁচটি সুফল লেখ।
উত্তর: পরোপকার মহান আল্লাহর একটি বড় গুণ । পরোপকারের পাঁচটি সুফল নিম্নরূপ-
১. পরোপকারীদেরকে আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন । পরোপকারের মাধ্যমে সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।
২. পরম শত্রুকেও পরোপকারের মাধ্যমে আপন করা যায়।
৩. কঠোর হৃদয়বিশিষ্ট লোকের অন্তরকেও জয় করা যায়।
৪ . আল্লাহর কোনো সৃষ্টির প্রতি দয়া করলে তিনি দয়াকারী ব্যক্তির ওপর রহমত বর্ষণ করেন।
৫ . দয়া বা পরোপকারের মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় । সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।
২. পরম শত্রুকেও পরোপকারের মাধ্যমে আপন করা যায়।
৩. কঠোর হৃদয়বিশিষ্ট লোকের অন্তরকেও জয় করা যায়।
৪ . আল্লাহর কোনো সৃষ্টির প্রতি দয়া করলে তিনি দয়াকারী ব্যক্তির ওপর রহমত বর্ষণ করেন।
৫ . দয়া বা পরোপকারের মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় । সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।
৮। 'শালীনতা মানুষের একটি মহৎ গুণ' কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: শালীনতা মানুষের একটি মহৎ গুণ। এটির গুরুত্ব অপরিসীম। শালীনতাবোধ মানুষকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। শালীনতা আল্লাহর অনুগত বান্দা হতে সাহায্য করে। আচার - ব্যবহারে শালীন ব্যক্তিকে সবাই পছন্দ করে । শালীন পোশাক - পরিচ্ছদ সৌন্দর্যের প্রতীক । শালীন ও ভদ্র আচরণের মাধ্যমে বন্ধুত্ব ও হৃদ্যতা সৃষ্টি হয়। সমাজকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাখতে শালীনতার প্রয়োজন সর্বাধিক। শালীনতাপূর্ণ আচার -ব্যবহার সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের চাবিকাঠি।
৯। আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতিশীল দেখানো এবং এগুলোর যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ইসলামি পরিভাষায় আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি দয়া ও সহানুভূতিশীল হয়ে আদর-যত্ন করার নামই হলো সৃষ্টির সেবা। মহান আল্লাহ এ সুন্দর পৃথিবীতে মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা করে সৃষ্টি করেছেন। আর সৃষ্টিকুলের সবকিছু যেমন— জীবজন্তু, পশুপাশি, কীটপতঙ্গ, পাহাড়-পর্বত, গাছপালা ইত্যাদি মানুষের উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং এ সকল সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতি দেখানো এবং এগুলোর যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের অবশ্য কর্তব্য।
১০। সৃষ্টির সেবা বলতে কী বোঝ?
উত্তর: পৃথিবী ও এ মহাবিশ্বে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর সৃষ্টি। সৃষ্টিজগতের সবকিছু নিয়ে আল্লাহর সৃষ্টি পরিবার। আল্লাহর সৃষ্টি পরিবারে মানুষই সেরা সৃষ্টি। পরিবারে যেমন পরিবার প্রধানের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে তেমনি সৃষ্টিজগতের প্রতিও মানুষের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। সৃষ্টিকুলের প্রতি এ দায়িত্ব পালন করার নাম সৃষ্টির সেবা।
১১। জীবজন্তুর মতো উদ্ভিদের প্রতিও আমাদের সদয় হতে হবে কেন?
উত্তর: জীবজন্তুর মতো উদ্ভিদের প্রতিও আমাদের সদয় হতে হবে। আমাদের অকারণে গাছ কাটা উচিত না। গাছের পাতা ছেঁড়া বা চারাগাছ উপড়ে ফেলাও উচিত নয়। গাছপালার যত্ন করা উচিত। কারণ বৃক্ষলতাও মহান আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করে । পরিবেশ রক্ষায় ও নিজেদের প্রয়োজনে জীবজগৎ ও পরিবেশের প্রতি সদাচরণ করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
১২। আমানতের খিয়ানতকারীকে সমাজের সবাই ঘৃণা করে কেন?
উত্তর: সমাজের প্রতিটি মানুষের নিজ নিজ দায়িত্ব তার নিকট পবিত্র আমানত । সামাজিক শান্তি রক্ষার জন্য আমানত রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । যিনি আমানত রক্ষা করেন তাকে সবাই বিশ্বাস করে এবং ভালোবাসে। সমাজের সবাই তাকে মর্যাদা দেয় । আমানতের খিয়ানতকারীকে সমাজের কেউ পছন্দ করে না এবং বিশ্বাসও করে না। বরং তাকে সবাই ঘৃণা করে । তাই আমানত রক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে মহান আল্লাহ বলেন “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা যেন আমানতসমূহ তার মালিককে যথাযথভাবে ফেরত দাও। "
১৩। মহানবি (স) ক্ষমার মূর্ত প্রতীক ছিলেন— বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: মহানবি (স) ছিলেন ক্ষমার মূর্ত প্রতীক। কারণ একবার এক ইহুদি মহিলা প্রিয়নবি (স) - কে তার বাড়িতে দাওয়াত দেন এবং বিষ মিশ্রিত ছাগলের গোশত্ তাঁকে খেতে দেন। রাসুল (স) উক্ত গোশতের কিছু খেয়েই বিষক্রিয়া অনুভব করেন। পরে ঐ মহিলা গোশতে বিষ দেওয়ার কথা স্বীকার করে। কিন্তু প্রিয়নবি (স) তাকে ক্ষমা করে দেন। এমনিভাবে মক্কা বিজয়ের পর মহানবি (স) প্রাণের শত্রুদেরকেও ক্ষমা করে দেন । তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন , “আজ তোমাদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। তোমরা মুক্ত স্বাধীন।” পৃথিবীর ইতিহাস এরূপ ক্ষমার উদাহরণ আর দ্বিতীয় নেই।
১৪। হিংসা একটি মারাত্মক ব্যাধি— বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: হিংসা বহু কারণে সৃষ্টি হয়। যেমন— শত্রুতা, লোভ, অহংকার, নিজের অসৎ উদ্দেশ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা, নেতৃত্বের লোড ইত্যাদি। এসব কারণে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ করে থাকে । ইসলাম এ কাজগুলোকে হারাম ঘোষণা করেছে। হিংসার অপকারিতা সীমাহীন। হযরত আদম (আ) - এর পদমর্যাদা দেখে ইবলিস তার প্রতিহিংসা করে। ফলে সে অভিশপ্ত হয়। আল্লাহ তায়ালার দয়া থেকে বঞ্চিত হয়। তাই হিংসা একটি মারাত্মক ব্যাধি।
১৫। ক্রোধের ক্ষতিকর অবস্থা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ক্রোধ একটি নিন্দনীয় চরিত্র। এটি মানুষের মধ্যে ঝগড়াবিবাদ ও হিংসাবিদ্বেষ সৃষ্টি করে। আর হিংসা মানুষের সৎকর্মসমূহ শেষ করে দেয়। ক্রোধের সময় মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। সে নিজেকে সংযত রাখতে পারে না। ক্রোধ মানুষের ইমানকে ধ্বংস করে দেয়। এ সম্পর্কে মহানবি (স) বলেন, “সিরকা মধুকে যেভাবে বিনাশ করে, ক্রোধও ইমানকে তদ্রূপ নষ্ট করে।” (বায়হাকি)
মহানবি (স) বলেছেন , ক্রোধ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে, শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুনকে পানি ঠাণ্ডা করে । যদি কারও রাগ হয় তবে তার উচিত ওযু করে নেওয়া। (বুখারি ও মুসলিম)।
১৬। সন্তানের কর্তব্য পিতামাতার বাধ্য থাকা বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: পিতামাতার অবাধ্য হওয়া বলতে বোঝায় , তাঁদের শ্রদ্ধা ও সম্মান না করা। পিতামাতার কথামত না চলা। তাঁদের নির্দেশ অমান্য করা। আল্লাহর অনুগ্রহের পর সন্তানদের প্রতি পিতামাতার অনুগ্রহ সবচেয়ে বেশি। তাঁরা সন্তানের আপনজন। তাঁদের স্নেহ - মমতায় সন্তান লালিত - পালিত হয়। সন্তানের আরাম -আয়েসের জন্য তারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেন। সন্তানের ভবিষ্যৎ উন্নতির জন্য তাঁরা সবরকম ব্যবস্থা করেন। কাজেই সন্তানের কর্তব্য হলো পিতামাতার বাধ্য থাকা।