সপ্তম শ্রেণি, ইসলাম ও নৈতিকশিক্ষা, পঞ্চম অধ্যায় (আদর্শ জীবনচরিত) || Class Seven, Islam and Moral Education, Chapter 5
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১। আহসানুল কাসাস মানে কী?
উত্তর: আহসানুল কাসাস মানে হলো- সর্বোত্তম কাহিনী। পবিত্র কুরআনে হযরত ইউসুফ (আ) এর কাহিনীকে আহসানুল কাসাস বলা হয়েছে।
২। কোন বংশ জমজম কূপের পাশে বসবাস করতে থাকল?
উত্তর: জুরাহুম বংশ জমজম কূপকে কেন্দ্র করে বসবাস করতে লাগল।
৩। হযরত ইউসুফ (আ) এর পিতার নাম কী ?
উত্তর: পিতার নাম হযরত ইয়াকুব (আ)।
৪। উত্তম চরিত্রের আরবি শব্দ কী?
উত্তর: উত্তম চরিত্রের আরবি শব্দ হলো আখলাকে হামীদাহ।
৫। হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় মহানবি (স) এর সাথে কতজন সাহাবি ছিলেন?
উত্তর: ১৪০০ জন সাহাবি ছিলেন।
৬। হযরত ইউসুফ (আ) - এর পিতার নাম কী?
উত্তর: হযরত ইউসুফ (আ) -এর পিতার নাম ছিল- হযরত ইয়াকুব (আ)।
৭। আদর্শ জীবন কাকে বলে?
উত্তর: যে জীবন অনুসরণ ও অনুকরণ করলে মানুষের জীবন সুন্দর ও সফল হয় তাকে আদর্শ জীবন বলে।
৮। হযরত ইসমাঈল (আ) কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: হযরত ইসমাঈল (আ) খ্রিষ্টপূর্ব ১৯১০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
৯। হযরত ইবরাহিম (আ) কোন বংশের আদি পিতা?
উত্তর : হযরত ইবরাহিম (আ) কুরাইশ ও উত্তর আরবের ‘আদনান' বংশের আদি পিতা।
১০। মা হাজিরা (আ) পানির সন্ধানে সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ে কয়বার ছুটাছুটি করেন?
উত্তর : মা হাজিরা (আ) পানির সন্ধানে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ছয়ে সাতবার ছুটোছুটি করেন।
১১। কোন গোত্রে হযরত ইসমাঈল (আ) বিবাহ করেন?
উত্তর: জুরহাম গোত্রে হযরত ইসমাঈল (আ) বিবাহ করেন।
১২। কুরাইশ গোত্র কোন গোত্রের একটি শাখা?
উত্তর: কুরাইশ গোত্র জুরহাম গোত্রের একটি শাখা।
১৩। পশু কুরবানি করা কী?
উত্তর: পশু কুরবানি করা ওয়াজিব।
১৪। বণিকদল হযরত ইউসুফ (আ) -কে কোথায় দাস হিসেবে বিক্রি করে?
উত্তর: বণিকদল হযরত ইউসুফ (আ) মিসরে দাস হিসেবে বিক্রি করে।
১৫। হযরত ইউসুফ (আ) কী করতে পারতেন?
উত্তর: হযরত ইউসুফ (আ) স্বপ্নের ভালো ব্যাখ্যা করতে পারতেন।
১৬। একদিন মিসরের বাদশা কী স্বপ্ন দেখেন?
উত্তর: একদিন মিসরের বাদশা স্বপ্ন দেখেন, “সাতটি সুস্থ সবল গাড়িকে সাতটি দুর্বল গাড়ি খেয়ে ফেলেছে।”
১৭। হযরত ইউসুফ (আ) কত বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: হযরত ইউসুফ (আ) ১১০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
১৮। হিজরত অর্থ কী?
উত্তর: হিজরত অর্থ দেশ ত্যাগ বা প্রস্থান।
১৯। হিজরত কাকে বলে?
উত্তর: সত্য ও ন্যায়ের জন্য স্বদেশ পরিত্যাগ করে আশ্রয় গ্রহণের উদ্দেশ্যে অন্যকোনো দেশে গমন করাই হিজরত।
২০। মহানবি (স) আবু বকর (রা) - কে নিয়ে কোন পর্বতের গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করলেন?
উত্তর : মহানবি (স) আবু বকর (রা) - কে নিয়ে সাওর পর্বতের গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করলেন।
২১। হযরত মুহাম্মদ (স) কোথায় একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: হযরত মুহাম্মদ (স) মদিনায় একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।
২২। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান কোনটি?
উত্তর: পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান হলো মদিনা সনদ।
২৩। মদিনা সনদে কয়টি ধারা ছিল?
উত্তর: ৪৭ টি ধারা ছিল।
২৪। মদিনা সনদের ফলে কারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হলো?
উত্তর: মদিনা সনদের ফলে মুসলমানরাই সবচেয়ে বেশি লাভবান হলো।
২৫। কাকে 'জামেউল কুরআন' বলা হয়?
উত্তর: হযরত উসমান (রা)।
২৬। হযরত উসমান (রা) দীর্ঘ কত বছর খিলাফতের দায়িত্ব পালন করেন?
উত্তর : হযরত উসমান (রা) দীর্ঘ ১২ বছর খিলাফতের দায়িত্ব পালন করেন।
২৭। হযরত উসমান (রা) কত বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: হযরত উসমান (রা) ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে ৮৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
২৮। হযরত আলী (রা) কে ছিলেন?
উত্তর: হযরত আলী (রা) রাসুল (স) - এর চাচাতো ভাই।
২৯। ছোটদের মধ্যে কে প্রথম মুসলমান হয়েছিলেন?
উত্তর: ছোটদের মধ্যে হযরত আলী (রা) প্রথম মুসলমান হয়েছিলেন।
৩০। ইসলামের চতুর্থ খলিফা কে?
উত্তর: হযরত আলী (রা)।
৩১। হযরত আলী (রা) কত খ্রিষ্টাব্দে শাহাদাত বরণ করেন?
উত্তর: হযরত আলী (রা) ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে ইবনে সুলজাম নামক এক পথভ্রষ্ট খারেজির হাতে শাহাদাত বরণ করেন।
৩২। হযরত ফাতিমা (রা) কত খ্রি. জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: হযরত ফাতিমা (রা) ৬০৫ খ্রি. জন্মগ্রহণ করেন।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১। মদিনা সনদ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: হিজরতের পর হযরত মুহাম্মদ (স) মদিনায় একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কতকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এগুলোর মধ্যে মদিনার সনদ উল্লেখযোগ্য। এতে তিনি ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রীয় বিভেদ নিরসন করে পারস্পরিক শান্তি - সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে কতিপয় নীতিমালা তৈরি করেন। যা মদিনা সনদ নামে খ্যাত। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান।
২। কেন হযরত ইউসুফ (আ) কারাবরণ করেন?
উত্তর: হযরত ইউসুফ (আঃ) যুবক বয়সে মিথ্যা অপবাদের দায়ে কারাবরণ করেন।
৩। মহানবি (স) ইহুদি মহিলাকে ক্ষমা করেছিলেন কেন?
উত্তর: ক্ষমা করা মহত্ত্বের লক্ষণ। তাই মহানবি (স) ইহুদি মহিলাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
৪। হযরত ইউসুফ (আ) এর ভাইয়েরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল কেন?
উত্তর: হযরত ইউসুফ (আ) কে হযরত ইয়াকুব (আ) একটু বেশি ভালোবাসতেন। এজন্য তারা ঈষান্বিত হয়ে তাঁর ভাইয়েরা যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
উত্তর: হযরত ইউসুফ (আ) কে হযরত ইয়াকুব (আ) একটু বেশি ভালোবাসতেন। এজন্য তারা ঈষান্বিত হয়ে তাঁর ভাইয়েরা যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
৫। হযরত ইসমাঈল (রা) - এর জন্ম ও বংশ পরিচয় সম্বন্ধে যা জান লেখ।
উত্তর: হযরত ইসমাঈল (আ) ছিলেন আল্লাহর নবি। তিনি হযরত ইবরাহিম (আ)-এর জ্যেষ্ঠ পুত্র। তাঁর মাতার নাম হাজিরা (আ)। তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ১৯১০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের সময় হযরত ইবরাহিম (আ) -এর বয়স ছিল ৮৫ বছর। তিনি কুরাইশ ও উত্তর আরবের ‘আদনান' বংশের আদি পিতা।
৬। কোন কাহিনীর ধারাবাহিকতায় আজকে আমাদের পশু কুরবানি দেওয়া হয়? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: আল্লাহ তায়ালা হযরত ইবরাহিম (আ) - কে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেন। প্রিয় পুত্র হযরত ইবরাহিম (আ) - কে কুরবানি করার নির্দেশ ছিল একটি পরীক্ষা। সেই অনুযায়ী হযরত ইবরাহিম (আ) ইসমাঈল (আ) - কে কুরবানি করার উদ্দেশ্যে 'মিনার' পথে রওনা হলেন। পথিমধ্যে শয়তান ইসমাঈল (আ)- কে বারবার প্রতারিত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে তিনি বিন্দুমাত্র প্রভাবিত না হয়ে নির্বিঘ্নে মিনায় পৌঁছেন। হযরত ইবরাহিম (আ) প্রাণপ্রিয় পুত্রকে কুরবানি করার জন্য উদ্যত হলেন।
এমন সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে ইবরাহিম (আ) আওয়াজ শুনতে পেলেন- 'হে ইবরাহিম' তুমি তোমার স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ— এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি।” অলৌকিকভাবে পুত্র ইসমাঈল (আ) - এর স্থলে একটি দুম্বা কুরবানি হয়ে গেল আর ইসমাঈল (আ) দুম্বার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। এ ধারাবাহিকতায় আজকে আমাদের এ পশু কুরবানি। কুরবানি করা ওয়াজিব।
৭। আল্লাহ তায়ালা হযরত ইসমাঈল (আ) - কে আল্লাহ ছাদেকুল ওয়াদ বা অঙ্গীকার পালনকারী উপাধি দান করেছিলেন কেন?
উত্তর : হযরত ইসমাঈল (আ.) ছিলেন ধৈর্যশীল ও পিতাভক্ত। বর্ণিত তিনি জনৈক ব্যক্তির সাথে অঙ্গীকার করেছেন; অমুক আছে যে, স্থানে তার জন্য অপেক্ষা করবেন , লোকটি কথা অনুযায়ী সে স্থানে না আসলেও তিনি তার জন্য তিন দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন এবং তৃতীয় দিন তার সাথে সেখানে দেখা হয় । (ইবন্ কাছির)। নিজের ওয়াদা রক্ষার জন্য তিন দিন পর্যন্ত কষ্ট করে অপেক্ষা করেছিলেন বলে হযরত ইসমাঈল (আ) - কে আল্লাহ ছাদেকুল ওয়াদ বা অঙ্গীকার পালনকারী উপাধি দিয়েছিলেন।
৮। হযরত ইউসুফ (আ) - এর বংশ পরিচয় সম্বন্ধে যা জান লেখ।
উত্তর: হযরত ইউসুফ (আ) ছিলেন আল্লাহর নবি। তাঁর পিতার নাম হযরত ইয়াকুব (আ) আর মাতার নাম রাহিলা বিনতে লাবন। তিনি হযরত ইয়াকুব (আ) - এর একাদশতম পুত্র। তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ১৯২৭-১৮১৭ মধ্যে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন কেনানের অধিবাসী। শারীরিক গঠনে অপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারী তার ব্যবহারে বিনয়ী ও উত্তম চরিত্র গুণে গুণান্বিত।
৯। হযরত মুহাম্মদ (স) - এর দেশপ্রেম সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: মহানবি (স) - এর জীবন পর্যালোচনা করলে আমরা তাঁর মাঝে দেশপ্রেমের অনুপম দৃষ্টান্ত দেখতে পাই। আমরা জানি, মক্কায় কাফিররা যতই নির্যাতন করল হযরত মুহাম্মদ (স) তাঁদের সব নির্যাতন সহ্য করলেন। তিনি তাঁর সাথীদের বিভিন্ন দেশে হিজরত করালেও প্রিয় জন্মভূমির মায়া ত্যাগ করে নিজে কোথাও যাননি। অবশেষে আল্লাহর পক্ষ থেকে হিজরতের আদেশ আসল। হযরত মুহাম্মদ ( স) আল্লাহর আদেশের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন এবং জন্মভূমির মায়া ত্যাগ করে মদিনায় চলে গেলেন। তিনি জন্মভূমি ছেড়ে যাওয়ার সময় মক্কাকে লক্ষ করে বললেন, “আল্লাহর কসম! তুমি আল্লাহর সর্বোত্তম ভূখণ্ড এবং আল্লাহর দৃষ্টিতে সর্বাপেক্ষা প্রিয়ভূমি । আমাকে এখান থেকে জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেওয়া না হলে আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।" (তিরমিযি)।
১০। মদিনা সনদ পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: হিজরতের পর হযরত মুহাম্মদ (স) মদিনায় একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কতকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এগুলোর মধ্যে মদিনার সনদ উল্লেখযোগ্য। এতে তিনি ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রীয় বিভেদ নিরসন করে পারস্পরিক শান্তি, সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে কতিপয় নীতিমালা তৈরি করেন। যা মদিনা সনদ নামে খ্যাত। তাই এটি পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান।
১১। ইসলামের ইতিহাসে মদিনা সনদের গুরুত্ব অপরিসীম- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ইসলামের ইতিহাসে মদিনা সনদের গুরুত্ব অপরিসীম। এ সনদের ফলে মদিনার লোকজনের মাঝে সকল প্রকার হিংসা - বিদ্বেষ ও কলহের অবসান হয়। তারা ঐক্যবদ্ধ হলো। ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলের প্রাপ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা হলো এবং মুসলিম ও অমুসলিমদের মাঝে এক উদার সম্প্রীতি স্থাপিত হলো। হযরত মুহাম্মদ (স) - এর ক্ষমতা বৃদ্ধি ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয়সহ ইসলাম প্রসারের কাজ আরও বেগবান হলো- নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি গড়ে উঠল রাজনৈতিক ঐক্য এবং গোড়াপত্তন হলো একটি শান্তিময় ইসলামি রাষ্ট্রের।
১২। হযরত মুহাম্মদ (স) সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : হযরত মুহাম্মদ (স) সুশাসন প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপগুলো হলো-
১. আইনের কর্তৃত্ব এবং সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহর প্রতিষ্ঠা করা।
২. ধর্ম, বর্ণ গোত্রভেদে সকল নাগরিকের প্রতি সুবিচার করা।
৩. মুসলমানদের মধ্যে সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
৪. সরকারের দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
৫ . মজলিসে শূরা বা পরামর্শ পরিষদ গঠন।
৬. ভালো কাজে একে অন্যকে সহযোগিতা করা ও অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখা ইত্যাদি। উপরোল্লিখিত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে মদিনায় ইসলামি রাষ্ট্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলো।
২. ধর্ম, বর্ণ গোত্রভেদে সকল নাগরিকের প্রতি সুবিচার করা।
৩. মুসলমানদের মধ্যে সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
৪. সরকারের দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
৫ . মজলিসে শূরা বা পরামর্শ পরিষদ গঠন।
৬. ভালো কাজে একে অন্যকে সহযোগিতা করা ও অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখা ইত্যাদি। উপরোল্লিখিত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে মদিনায় ইসলামি রাষ্ট্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলো।
১৩। হযরত উসমান (রা) - কে ‘যুননুরাইন' বলা হতো কেন?
উত্তর: হযরত উসমান (রা) ইসলামের চার খলিফার মধ্যে তৃতীয় খলিফা ছিলেন, বাল্যকাল থেকেই তিনি নম্র, ভদ্র, লজ্জাশীল ও বিনয়ী ছিলেন। তাঁর চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে রাসুল (স.) প্রথমে তাঁর কন্যা রুকাইয়াকে তাঁর নিকট বিবাহ দেন। রুকাইয়া মারা গেলে অতঃপর উম্মে কুলসুমকে তাঁর নিকট বিবাহ দেন। ফলে তাঁকে যুননুরাইন (দুই নূরের অধিকারী) বলা হতো।
১৪। হযরত উসমান (রা) - কে 'জামেউল কুরআন' বলা হয় কেন?
উত্তর: হযরত উসমান (রা) খলিফা নির্বাচিত হলে তিনি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি সম্পাদনের পাশাপাশি পবিত্র কুরআন সংকলনে হাত দেন। মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তৃত হলে বিভিন্ন এলাকার লোকজন পবিত্র কুরআন বিভিন্নভাবে তিলাওয়াত করতে লাগলেন। ফলে মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য দেখা দিল। তিনি এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। রাষ্ট্রীয় নির্দেশ জারি করে তখনকার সময়ের বিদ্যমান পবিত্র কুরআনের সকল কপি সংগ্রহ করলেন। তিনি হযরত হাফসা (রা) - এর নিকট সংরক্ষিত পবিত্র কুরআনের মূল কপিটি সংগ্রহ করার মাধ্যমে কুরআন সংকলনের কাজ সমাপ্ত করেন। অতঃপর মুসলিম জাহানের গভর্নরদের নিকট একটি করে কপি পাঠান। অবশিষ্ট সংগৃহীত কপিগুলো আগুনে পুড়িয়ে দিলেন। পবিত্র কুরআনের মূল ভাষা অনুযায়ী সংরক্ষণ করার ফলে তাঁকে ‘জামিউল কুরআন' (কুরআন সংকলন) বলা হয়।
উত্তর: হযরত উসমান (রা) খলিফা নির্বাচিত হলে তিনি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি সম্পাদনের পাশাপাশি পবিত্র কুরআন সংকলনে হাত দেন। মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তৃত হলে বিভিন্ন এলাকার লোকজন পবিত্র কুরআন বিভিন্নভাবে তিলাওয়াত করতে লাগলেন। ফলে মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য দেখা দিল। তিনি এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। রাষ্ট্রীয় নির্দেশ জারি করে তখনকার সময়ের বিদ্যমান পবিত্র কুরআনের সকল কপি সংগ্রহ করলেন। তিনি হযরত হাফসা (রা) - এর নিকট সংরক্ষিত পবিত্র কুরআনের মূল কপিটি সংগ্রহ করার মাধ্যমে কুরআন সংকলনের কাজ সমাপ্ত করেন। অতঃপর মুসলিম জাহানের গভর্নরদের নিকট একটি করে কপি পাঠান। অবশিষ্ট সংগৃহীত কপিগুলো আগুনে পুড়িয়ে দিলেন। পবিত্র কুরআনের মূল ভাষা অনুযায়ী সংরক্ষণ করার ফলে তাঁকে ‘জামিউল কুরআন' (কুরআন সংকলন) বলা হয়।
১৫। হযরত আলী (রা) - এর পরিচয় দাও।
উত্তর : হযরত আলী (রা) রাসুল (স) - এর চাচাতো ভাই। তিনি ৬০০ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করে। তাঁর পিতার নাম আবু তালিব, মাতার নাম ফাতিমা বিনতে আসাদ। তিনি ছোটদের মধ্যে প্রথম মুসলমান। তিনি ১০ বছর বয়সে মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি 'আশারা-ই-মুবাশ্শারার' (জান্নাতে সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবি) এর একজন এবং ইসলামের চতুর্থ খলিফা ছিলেন।
১৬। হযরত মুহাম্মদ (স) বলেছেন, “ফাতিমা হলেন জান্নাতবাসী মহিলাদের নেত্রী" — বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: হযরত ফাতিমা (রা) হযরত মুহাম্মদ (স) - এর সকল গুণই অর্জন করেছিলেন। তিনি ছিলেন সত্যনিষ্ঠ, লজ্জাশীল, পরোপকারিণী, ধৈর্যশীল ও আল্লাহর ওপর অধিক আস্থাশীল। হযরত আয়েশা (রা) বলেন, “আমি ফাতিমার তুলনায় স্পষ্টবাদী ও সত্যবাদী কাউকে দেখিনি। তবে তাঁর পিতার কথা স্বতন্ত্র"। হযরত মুহাম্মদ (স) বলেন, “ফাতিমা আমার দেহের এক অংশ, যে তাঁকে নারাজ করবে, সে আমাকে নারাজ করবে" (সহিহ বুখারি)। তিনি আরও বলেন, “ফাতিমা হলেন জান্নাতবাসী মহিলাদের নেত্রী।" (সহিহ বুখারি)।
১৭। হযরত আলী (রা) সহজ - সরল ও আত্মত্যাগের সুমহান আদর্শ ছিলেন— বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: হযরত আলী (রা) সহজ - সরল ও আত্মত্যাগের সুমহান আদর্শ। কারণ ছোটকাল থেকেই তিনি অত্যন্ত সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন। নিজের খাদ্য তিনি নিজেই যোগাড় করতেন। কখনো কখনো অনাহারে থাকতেন। তিনি নিজের কাজ নিজেই করতেন। ধনী - দরিদ্র সকলের সাথে তিনি মিলেমিশে চলতেন। খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পরও এসব গুণাবলি তাঁর মধ্যে বিদ্যমান ছিল।