জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১. জিন্নাহ কত সালে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেন?
উত্তর: ১৯৪৮ সালে।
২. পাকিস্তান সরকার কোন ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্র করে?
উত্তর: উর্দু ভাষা।
৩. মুক্তিযুদ্ধ কত সালে শুরু হয়?
উত্তর: ১৯৭১ সালে।
৪. ছাত্ররা কোন ধ্বনিতে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়?
উত্তর: 'না, না, না' ধ্বনিতে।
৫. ভাষা আন্দোলনের সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর: লিয়াকত আলী খান।
৬. কোন ভাষা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়া যুক্তিযুক্ত ছিল?
উত্তর: বাংলা ভাষা।
৭. পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার মধ্যে বাঙালির সংখ্যা কত ছিল?
উত্তর: ৪ কোটি ৪০ লাখ।
৮. কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সমন্বয়ে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়?
উত্তর: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
৯. ছাত্ররা কোন দিন গণপরিষদ ঘেরাও করার সিদ্ধান্ত নেয়?
উত্তর: ২১ শে ফেব্রুয়ারি।
১০. ২১ শে ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা কত ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করে?
উত্তর: ১৪৪ ধারা।
১১. ২১ শে ফেব্রুয়ারি মিছিলের নেতৃত্বে কে ছিলেন?
উত্তর: আবদুল মতিন ও গাজীউল হক।
১২. ভাষাশহিদ ওলিউল্লাহর বয়স কত ছিল?
উত্তর: ৯ বছর।
১৩. ১৯৫২ সালের ২১ ও ২২ শে ফেব্রুয়ারি যারা নিহত হয়েছিলেন তারা কী বলে পরিচিত?
উত্তর: ভাষাশহিদ।
১৪. বড় শহিদ মিনার তৈরি করা হয় কখন?
উত্তর: ১৯৬৩ সালে।
১৫. পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান কত সালে রচিত হয়?
উত্তর: ১৯৫৬ সালে।
১৬. নভেম্বর মাসের কত তারিখে ইউনেস্কো বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা করার ঘোষণা দেয়?
উত্তর: ১৭ তারিখে।
১৭. বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে কত সালে?
উত্তর: ১৯৯৯ সালে।
১৮. ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে কোন দল বিজয় লাভ করে?
উত্তর: যুক্তফ্রন্ট।
১৯. ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করা হয় কত সালে?
উত্তর: ১৯৬৬ সালে।
২০. মুসলিম জাতীয়তাবাদের প্রধান প্রবক্তা কে?
উত্তর: মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
২১. কত সালে পাকিস্তানে শিক্ষা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে।
২২. কখন ভাষার দাবিতে ধর্মঘট ডাকা হয়?
উত্তর: ১৯৪৮ সালের ১১ ই মার্চ।
২৩. কাদের নেতৃত্বে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়?
উত্তর: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে।
২৪. কোন সংস্থা ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়?
উত্তর: ইউনেস্কো।
২৫. কত সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয় ?
উত্তর: ১৯৪৯ সালে।
২৬. ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রতীক কী ছিল?
উত্তর: নৌকা।
২৭. যুক্তফ্রন্ট জনগণের সামনে কত দফা কর্মসূচি প্রকাশ করে?
উত্তর: ২১ দফা কর্মসূচি।
২৮. কে পূর্ব বাংলায় কেন্দ্রীয় শাসন চালু করেন?
উত্তর: পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মুহম্মদ।
২৯. ছয় দফা দাবিতে কে শঙ্কিত হন?
উত্তর: আইয়ুব খান।
৩০. কোন আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো পাকিস্তান কেঁপে ওঠে?
উত্তর: ১১ দফা আন্দোলন।
৩১. কোনটি স্বাধীনতা অর্জনের অনুপ্রেরণা জোগায়?
উত্তর: ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান।
৩২. কোন সালের সংবিধানে বাঙালির অধিকার ক্ষুণ্ন হয়?
উত্তর: ১৯৬২ সালের সংবিধানে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন:
১. ১৯৫৪-এর নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ব্যাপক সাফল্যের মূলে ছিল-
i. নেতৃবৃন্দের ব্যাপক প্রচার ও সমন্বয়
ii. জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি
iii. মুসলিম লীগের দুর্নীতি ও গণবিচ্ছিন্নতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
২. ছয় দফা আন্দোলনের তাৎপর্য হচ্ছে-
i. যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ
ii. ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে আইয়ুব খানের পতন
iii. ১৯৭০-এর নির্বাচনে জয়লাভ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
৩. ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনের কারণ-
i. ছাত্র অধিকার রক্ষা করা
ii. জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা
iii. শিক্ষা ও অফিস আদালতে বাংলা ভাষা চালু করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
৪. বাঙালিরা লড়াকু জাতি, কারণ হলো-
i. এরা কারও বশীভূত নয়
ii. এরা অতিথিপরায়ণ
iii. এরা যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে সাহস রাখে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
৫. পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই-
i. শাসকরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়
ii. আওয়ামী মুসলিম লীগ ক্ষমতাসীন দল
iii. মুসলিম লীগ শোষণের প্রতীক হয়ে ওঠে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
৬. শরীফ কমিশন নামে পরিচিত শিক্ষানীতিতে ছিল-
i. অভিন্ন বর্ণমালা চালু
ii. অবৈতনিক শিক্ষা বাতিল করা
iii. সঠিক শিক্ষালাভের সুযোগ বৃদ্ধি করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ৭ ও ৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে জনাব আনিছুর রহমান ২১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ২১ দফাকে সামনে রেখে তিনি নির্বাচনি প্রচারণা চালান এবং নির্বাচনে তার দল বিজয় অর্জন করে।
৭. জনাব আনিছুর রহমানের নির্বাচনি কর্মসূচি পাকিস্তান আমলের কোন নির্বাচনকে মনে করিয়ে দেয়?
ক. ১৯৩৭-এর নির্বাচন খ. ১৯৫৪-এর নির্বাচন
গ. ১৯৪৯-এর নির্বাচন ঘ. ১৯৭০-এর নির্বাচন
৮. উক্ত নির্বাচনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো-
i. জমিদারি প্রথা বাতিল করা
ii. পাটশিল্পকে জাতীয়করণ করা
iii. সমবায়ভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থা চালু করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
৯. ঐতিয্যসিফ আপারগুলা মামলা, উনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান ও ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করা হয় কত সালে?
ক. ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৮ খ. ২৩ শে মার্চ, ১৯৬৮
গ. ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ ঘ. ২৫ শে মার্চ, ১৯৬৯
১০. আইয়ুব খানের পতন হয় কখন?
ক. ১৯৫৮ সালের ২৫ মার্চ খ. ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ
গ. ১৯৭০ সালের ২৫ মার্চ ঘ. ১৯৬৭ সালের ২৫ মার্চ
১১. আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালের কত তারিখে আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করেন?
ক. ২৩ মার্চ খ. ২২ ফেব্রুয়ারি
গ. ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘ. ২২ মার্চ
১২. আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান আসামি কে ছিলেন?
ক. মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী
খ. এ. কে. ফজলুল হক
গ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
ঘ. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
১৩. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগ কতটি আসন পেয়েছিল?
ক. ২৯৮টি খ. ২৭০টি
গ. ২৬৭টি ঘ. ৭০টি
১৪. অধ্যাপক শামসুজ্জোহা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন?
ক. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খ. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
গ. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ঘ. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৫. আগরতলা কোথায় অবস্থিত?
ক. পূর্ব পাকিস্তানে খ. পশ্চিম পাকিস্তানে
গ. ভারতে ঘ. শ্রীলঙ্কায়
১৬. কত সালে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়?
ক. ১৯৫৪ সালের ৫ ডিসেম্বর খ. ১৯৭০ সালের ৬ ডিসেম্বর
গ. ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর ঘ. ১৯৭০ সালের ৮ ডিসেম্বর
১৭. তৎকালীন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের আসন সংখ্যা কতটি ছিল?
ক. ৩১৩ খ. ৩১১
গ. ৩০৯ ঘ. ৩০৭
১৮. পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কতটি আসন লাভ করে?
ক. ১৬৭ খ. ১৬৬
গ. ১৬৫ ঘ. ১৬৪
১৯. ১৯৭০ সালের ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে মোট আসন ছিল কতটি?
ক. ৩১০ খ. ৩২০
গ. ৩৫০ ঘ. ৩৬০
২০. ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার উদ্দেশ্য কী ছিল?
ক. সাধারণ নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া
খ. ছয় দফা আন্দোলনকে নস্যাৎ করা
গ. মৌলিক গণতন্ত্র বজায় রাখা
ঘ. ছাত্রদের আন্দোলন দমিয়ে রাখা
২১. ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার মোট আসামি ছিলেন কত জন?
ক. ৩৫ খ. ৩৩
গ. ৩১ ঘ. ২৯
২২. আসাদুজ্জামান কত সালে শহিদ হয়েছিলেন?
ক. ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি খ. ১৯৬৯ সালের ২২ জানুয়ারি
গ. ১৯৬৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ঘ. ১৯৬৯ সালের ২৫ জানুয়ারি
২৩. পাকিস্তান সরকার আগরতলা মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছিল কেন?
ক. গণআন্দোলনের মুখে খ. ছয় দফা দাবি পূরণে
গ. জনতার ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ঘ. রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষার্থে
২৪. গণআন্দোলনের ভয়ে ভীত হয়ে কে আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে নেন?
ক. ইয়াহিয়া খান খ. ইস্কান্দার মির্জা
গ. নুরুল আমীন ঘ. আইয়ুব খান
২৫. বন্দি অবস্থায় উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কে শহিদ হন?
ক. অধ্যাপক শামসুজ্জোহা খ. ছাত্রনেতা আসাদ
গ. সার্জেন্ট জহুরুল হক ঘ. কিশোর মতিউর
২৬. কোন ছাত্রনেতা উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হন?
ক. জহুরুল হক খ. মতিউর
গ. শামসুজ্জোহা ঘ. আসাদ
২৭. শেখ মুজিবুর রহমানকে কখন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়?
ক. ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খ. ১৯৬৯ সালের ২৪ মার্চ
গ. ১৯৬৯ সালের ২৫ এপ্রিল ঘ. ১৯৬৯ সালের ২৭ মে
২৮. গণঅভ্যুত্থান হয় কত সালে?
ক. ১৯৬৮ সালে খ. ১৯৬৯ সালে
গ. ১৯৬৭ সালে ঘ. ১৯৬৫ সালে
২৯. মোজাম্বিকের লেবার পার্টি বিপুল ভোটে ফ্রিডম পার্টির বিরুদ্ধে জয়লাভ করে। কিন্তু ফ্রিডম পার্টি ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ। এ ঘটনাটি রাংলাদেশের কোন নির্বাচনের সাথে তুলনীয়?
ক. ১৯৫৪ সালের নির্বাচন খ. ১৯৫৬ সালের নির্বাচন
গ. ১৯৭০ সালের নির্বাচন ঘ. ১৯৪৫ সালের নির্বাচন
৩০. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে কোন দলটির ভরাডুবি হয়?
ক. যুক্তফ্রন্ট খ. মুসলিম লীগ
গ. ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ঘ. আওয়ামী লীগ
অনুধাবণ মূলক প্রশ্ন:
১. শহিদ মিনার কেন নির্মাণ করা হয়?
উত্তর: ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখে বাংলা ভাষার দাবিতে কতিপয় ছাত্র - জনতা শহিদ হন। শহিদ ছাত্র - জনতার মধ্যে সালাম, শফিউর, জব্বার, রফিক, বরকত অন্যতম ছিলেন। এ ছাড়াও নাম না জানা আরও অনেকেই বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠাল আন্দোলনে বুকের তাজা রক্তে রাজপদ রঞ্জিত করেন। এ শহিদগণের স্মৃতি আমাদের এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অম্লান করে রাখতেই শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়।
২. পাকিস্তান কীভাবে নীতি ও আদর্শের সংকটে পড়ে?
উত্তর: পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভের পর রাষ্ট্রের নীতি ও আদর্শ নি বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে। ক্ষমতাসীন পশ্চিম পাকিস্তানের নেতৃবর্গ যারা দেশেই তাদের ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করে। অথচ জিন্নাহসহ প্রথম সারির নেতারাই আবার পাঞ্জাবি বাঙালি সিদ্ধি - পাখতুন পরিচয় ভুলে পাকিস্তানি পরিচয় প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। তাদের দুমুখো নীতি বাঙালি জনগণকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। ফলে রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান নীতি আদর্শের সংকটে পড়ে।
৩. বাংলার জনগণের মাঝে সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটে কীভাবে?
উত্তর: ১৯৪৭-৭১ পর্যন্ত মোট ২৪ বছরে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকরা আমাদের ভাষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চেয়েছিল। সর্বস্তরের বাঙালি জনগণ তা মেনে নিতে পারেনি। ফলে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটে। সাংস্কৃতিক সংগঠন 'ছায়ানট' প্রতিষ্ঠা করা হয়। পুরো ষাটের দশকে চলমান সাংস্কৃতিক আন্দোলন বাঙালি জনগণের মাঝে সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটায়।
৪. বাঙালিরা কেন ভাষা আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিল?
উত্তর: পাকিস্তান সৃষ্টির পর পাকিস্তানের শাসকরা শুধু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে অনড় রইলেন পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির জন্য আন্দোলন করেছিল এবং পাকিস্তানের শাসকদের ভাই বলে মেনে নিয়েছিল। অথচ শত্রুতেই পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ বাঙালির প্রাণের ভাষা, মায়ের ভাষা বাংলার উপর আঘাত করেছিল। ফলে শাসকদের দৃষ্টবুদ্ধি তাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল। এ কারণেই বাঙালিরা সিদ্ধান্ত নিল, আন্দোলন করে তারা মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষা করবে।
৫. যুক্তফ্রন্ট বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করল কেন?
উত্তর: যুক্তফ্রন্ট জনগণের সামনে তাদের ২১ দফা কর্মসূচি প্রকাশ করে। এতে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি, জমিদারি প্রথা বাতিল, পাটশিল্প জাতীয়করণ, কৃষিব্যবস্থা, বিনাপয়সায় ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাদান করে। এছাড়া সব অন্যায় আইনকানুন বাতিল, ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদ স্মরণে শহিদ মিনার নির্মাণ, ২ ফব্রুয়ারি সরকারি ছুটি ঘোষণা এবং পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের কথাও বলা হয় যে কারণে জনগণের সমর্থন যুক্তফ্রন্টের পক্ষে যায় এবং যুক্তফ্রন্ট বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করে।
৬. আইয়ুব খান কীভাবে নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি দেখিয়ো ইস্কান্দার মির্জা ১৯৫৮ সালের ৭ ই অক্টোবর দেশে সামরিক আইন জারি করেন। সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট বলে প্রধান সামরিক শাসক নিযুক্ত করা হয় প্রধান সেনাপতি মুহম্মদ আইয়ুব খানকে। ২০ দিনের মধ্যেই আইয়ুব খান তার নিয়োগকর্তা ইস্কান্দার মির্জাকে পদচ্যুত করে পাকিস্তান ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেন এবং নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন।
৭. শেখ মুজিবকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধি দেয় কেন?
উত্তর: ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর মুসলিম লীগ ও পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিমাতামূলক আচরণের কারণে বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম শুরু করেন। ৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে আগরতলা মামলা পর্যন্ত তিনি বাংলা ও বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে বারবার কারাবরণ করেন। দুঃখী বাঙালির মুখে হাসি ফোটানোর অবদানস্বরূপ ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে কারামুক্তির পর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) শেখ মুজিবকে সংবর্ধনা জানায়। এখানেই ছাত্র জনতা বাঙালিদের প্রতি তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ মহান নেতাকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করে।
৮. বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবি স্বাধীনতার দাবিতে রূপান্তরিত কেন?
উত্তর: ১৯৫৮ সালে জারি সামরিক শাসনে রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড, সংসদ কার্যক্রম, মৌলিক অধিকার সব স্থগিত করে রাখা হয়। আইয়ুব আমলে বাঙালি রাজনীতিবিদদের জেল, জরিমানা ছাড়াও বিভিন্ন আদেশ ও অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এমনকি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বঙ্গবন্ধুকে প্রহসনের বিচারে ফাঁসি দেওয়ার জন্য তাকেসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলেও তাদের সরকার গঠন করতে দেয়নি। ফলে পাকিস্তান রাষ্ট্রকাঠামোর মধ্যে বাঙালির স্বায়ত্তশাসন দাবি স্বাধীনতার দাবিতে রূপান্তরিত হয়।
৯. ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের কারণে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশ লাভ করে কেন?
উত্তর: ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আইয়ুব খানের শাসনামলে সবচেয়ে শক্তিশালী আন্দোলন ছিল। সাধারণ দাবি নিয়ে এ আন্দোলন শুরু হলেও ক্রমান্বয়ে তা জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে পরিণত হয়। মাত্র তিন মাসের মধ্যে আন্দোলন ঢাকা শহর পেরিয়ে প্রাম - গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে। জনগণের ঐকা ও জাগরণ যে স্বৈরাচারী শাসকদের বুলেটের চেয়েও শক্তিশালী তা এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়। এভাবে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে জনুপ্রেরণা জোগায়।
সৃজনশীল প্রশ্ন:
১. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
কাশিমপুর অঞ্চলের মানুষ তাদের চেয়ারম্যানের স্বৈরাচারী মনোভাব ও কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে আন্দোলন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তিনি তার কাছের দুইএকজন ছাড়া অন্যদের কোনো সুযোগ সুবিধাই দিতেন না। অন্যরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। চেয়ারম্যান পেশিশক্তি প্রদর্শন, রক্তপাত ঘটিয়েও আন্দোলন স্তিমিত করতে পারেননি। জনগণের ঐক্য, সংগ্রামী চেতনা, আত্মত্যাগের কাছে তাঁর ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উক্ত চেয়ারম্যান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
ক. ১৯৫৮ সালে তদানীন্তন পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করেন কে?
খ. ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে মুসলিম লীগ কেন পরাজিত হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. কাশিপুরের মানুষের আন্দোলন পূর্ব-পাকিস্তানের কোন আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘কাশিমপুরের চেয়ারম্যানের পরিণতি যেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের পরিণতিরই প্রতিচ্ছবি’—উক্তিটি পরীক্ষা কর।
২. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ঘটনা-১: ‘ক’ দেশে বিভিন্ন ভাষাভাষী লোকের বাস ছিল। কিন্তু শাসকগোষ্ঠী একটি ভাষাকে রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের জন্য নির্ধারণ করে। এতে অন্য ভাষা ভাষীরা আন্দোলন করে। আন্দোলনের একপর্যায়ে শাসকগণ সব ভাষাকেই স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।
ঘটনা-২: দাদা তার নাতি তৌহিদুলকে বললেন, ‘তাঁর বাবা আনসারি সাহেব পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। তাঁর দল জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে কালক্ষেপণ করেন।’
ক. কতজনের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা (রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য) দায়ের করা হয়?
খ. ছয় দফাকে বাংলার মানুষের মুক্তির দলিল বলা হয় কেন?
গ. ঘটনা-১: তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তানের কোন ঘটনার ইঙ্গিত বহন করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ঘটনা-২: ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার প্রতিচ্ছবি—মূল্যায়ন কর।
৩. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করে বেশ কয়েকটি উপজাতি। তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো ‘ঢ’ উপজাতি। আর ক্ষুদ্র হলেও শক্তিশালী ছিল ‘ণ’ উপজাতি। স্থানীয় উপজাতিদের নেতা ‘ণ’ উপজাতির হওয়ায় সকল উপজাতির উপর তাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ কারণে তারা তাদের ওপর শক্তির অপপ্রয়োগ করে, অত্যাচার শুরু করে। কিন্তু ‘ঢ’ উপজাতি অন্যান্য উপজাতিকে সঙ্গে নিয়ে ‘ণ’ উপজাতির এ আগ্রাসনকে ব্যর্থ করে দেয়।
ক. কোন আন্দোলনের সাফল্যের সূত্র ধরে বাঙালিরা স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেরণা পেয়েছে?
খ. স্বাধীনতার পর কেন পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দের মধ্যে রাষ্ট্রের নীতি ও আদর্শ নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়?
গ. উদ্দীপকের ঘটনার সঙ্গে তৎকালীন পাকিস্তানের কোন দিক সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘পরিচয়ের সংকট অপেক্ষা আদর্শিক সংকটই তৎকালীন পাকিস্তানে প্রকট ছিল’—উদ্দীপক ও পাঠ্যবইয়ের আলোকে বক্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।
৪. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
একটি বিশেষ দিনে শফিকের মা তাকে খুব ভোরে জাগিয়ে দিলেন আর তাকে বললেন, প্রায় ৬০ বছর আগে এই দিনে বাঙালি জাতি তাদের প্রাণের দাবি আদায়ে একটি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আর উক্ত আন্দোলনই বাঙালিকে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়েছিল।
ক. পাকিস্তান আমলে পূর্ব-পাকিস্তানের কতজন মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলত?
খ. পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার উর্দুকে কেন পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছিল?
গ. উদ্দীপকে শফিকের মা যে আন্দোলনের কথা বলেছিলেন তার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত আন্দোলন বাঙালি জাতিকে কীভাবে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিয়েছিল? বিশ্লেষণ কর।