কম্পিউটার কি? || What is Computer?
কম্পিউটার কি ?
কম্পিউটার (Computer) শব্দটি গ্রিক কম্পিউট (Compute) শব্দ থেকে এসেছে। Compute শব্দের অর্থ গণনা করা। Computer শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। পূর্বে কম্পিউটার দিয়ে শুধু হিসাব নিকাশের কাজই করা হতো বলে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। কম্পিউটার হচ্ছে এমন এক ধরনের যন্ত্র যা মানুষের দেয়া যুক্তিসঙ্গত তথ্যের ভিত্তিতে অতি দ্রুত সঠিকভাবে কোনো নির্ণয় কার্য সম্পাদন করতে পারে এবং এটার ফলাফল নির্ধারণ করতে পারে। বর্তমান যুগে কম্পিউটারের বহুমুখী ব্যবহারের ফলে এর সংজ্ঞা অনেক ব্যাপকতা লাভ করেছে। কাজের অনেক নির্দেশ কম্পিউটারের স্মৃতিতে সংরক্ষণ করা সম্ভব এবং প্রয়োজনে এটি একটির পর একটি করে সেসব নির্দেশ নির্ভুলভাবে ত্বরিত গতিতে নির্বাহ করতে পারে। হিসাব সিদ্ধান্ত ও যুক্তিমূলক সমস্যার দ্রুত ও নির্ভুল সমাধান দিয়ে মানুষের উদ্ভাবনী শক্তির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে কম্পিউটার। এর গতি, বিশ্বস্ততা ও নির্ভরতা মানুষের অনুরূপ ক্ষমতার তুলনায় অনেক উন্নত।
কম্পিউটারের শ্রেণীবিভাগ
১. সাধারণ ব্যবহারিক কম্পিউটার এবং
২. বিশেষ ব্যবহারিক কম্পিউটার।
১. অ্যানালগ কম্পিউটার
২. ডিজিটাল কম্পিউটার এবং
৩. হাইব্রিড কম্পিউটার।
i. মেইনফ্রেম কম্পিউটার
ii. মিনি কম্পিউটার
iii. মাইক্রো কম্পিউটার এবং
iv. সুপার কম্পিউটার।
অ্যানালগ কম্পিউটার: যে কম্পিউটার একটি রাশিকে অপর একটি রাশির সাপেক্ষে পরিমাপ করতে পারে, তাই অ্যানালগ কম্পিউটার। এটি উষ্ণতা বা অন্যান্য পরিমাপ যা নিয়মিত পরিবর্তিত হয় তা রেকর্ড করতে পারে। মোটর গাড়ির বেগ নির্ণায়ক যন্ত্র অ্যানালগ কম্পিউটারের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
ডিজিটাল কম্পিউটার : যে কম্পিউটার সংখ্যা ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে তাই ডিজিটাল কম্পিউটার । এটি যে কোনো গণিতের যোগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে এবং বিয়োগ , গুণ ও ভাগের মতো অন্যান্য অপারেশন যোগের সাহায্যে সম্পাদন করে।
হাইব্রিড কম্পিউটার : হাইব্রিড কম্পিউটার হলো এমন একটি কম্পিউটার যা এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্যগুলোর সমন্বয়ে গঠিত। এটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহৃত হয়।
মেইনফ্রেম কম্পিউটার: মেইনফ্রেম কম্পিউটার হচ্ছে এমন একটি বড় কম্পিউটার যার সঙ্গে অনেকগুলো ছোট কম্পিউটার যুক্ত করে এক সঙ্গে অনেকে কাজ করতে পারে। জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণা, উচ্চস্তরের প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ , বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের শৈল্পিক ব্যবহারে এটা কাজে লাগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে , বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়ে থাকে। CYBER - 170 , IBM - 4300 এ ধরনের কম্পিউটার।
মিনি কম্পিউটার: যে কম্পিউটারে টার্মিনাল লাগিয়ে প্রায় এক সাথে অর্ধ শতাধিক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে তাই মিনি কম্পিউটার। এটা শিল্প - বাণিজ্য ও গবেষণাগারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। NCRS / 9290 , PDP - II , IBM S / 36 ইত্যাদি এ শ্রেণীর কম্পিউটার।
মাইক্রো কম্পিউটার : মাইক্রো কম্পিউটারকে পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি বলেও অভিহিত করা হয়। ইন্টারফেস চিপ , একটি মাইক্রোপ্রসেসর CPU এবং RAM , ROM সহযোগে মাইক্রো কম্পিউটার গঠিত হয়। দৈনন্দিন জীবনের সর্বক্ষেত্রে এ কম্পিউটারের ব্যবহার দেখা যায়। ম্যাকিনটোস আইবিএম পিসি এ ধরনের কম্পিউটারের উদাহরণ।
সুপার কম্পিউটার: অত্যন্ত শক্তিশালী ও দ্রুতগতিসম্পন্ন কম্পিউটারকে সুপার কম্পিউটার বলে। এ কম্পিউটারের গতি প্রায় প্রতি সেকেন্ডে ১ বিলিয়ন ক্যারেক্টর। পৃথিবীর আবহাওয়া বা কোনো দেশের আদমশুমারির মতো বিশাল তথ্য ব্যবস্থাপনা করার মতো স্মৃতিভাণ্ডার বিশিষ্ট কম্পিউটার হচ্ছে সুপার কম্পিউটার। Supers XII , CRAY 1 ইত্যাদি সুপার কম্পিউটারের উদাহরণ।