সপ্তম শ্রেণি, বাওবি দ্বাদশ অধ্যায় (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা) || Class Seven, BGS Chapter 12 (Bangladesh and international co-operation)

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১. জাতিসংঘ দিবস কবে? 
উত্তর: জাতিসংঘ দিবস ২৪ অক্টোবর।

২. কোন আমলে অছি পরিষদের কাজ বেশি ছিল?
উত্তর:
ঔপনিবেশিক আমলে অছি পরিষদের কাজ বেশি ছিল।

৩. কোন ধারণা থেকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সৃষ্টি হয়েছে? 
উত্তর:
বর্তমানে আধুনিক যুগে কোনো রাষ্ট্রই এককভাবে তাদের সকল প্রয়োজন পূরণ করতে পারে না- এ ধারণা থেকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

৪. বিশ্বের সকল স্বাধীন দেশ কোন ক্ষমতার অধিকারী? 
উত্তর:
বিশ্বের সকল স্বাধীন দেশ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী।

৫. সাধারণত কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আঞ্চলিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো গড়ে ওঠে? 
উত্তর:
পারস্পরিক সহযোগিতা ও কল্যাণসাধনের লক্ষ্যে আঞ্চলিক সংস্থাসমূহ গড়ে ওঠে। 

৬. পারস্পরিক নির্ভরশীলতায় কোনটির কোনো বিকল্প নেই? 
উত্তর:
পারস্পরিক নির্ভরশীলতায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। 

৭. প্রথম মহাযুদ্ধ শুরু হয় কত সালে? 
উত্তর:
প্রথম মহাযুদ্ধ শুরু হয় ১৯১৪ সালে। 

৮. কত সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হয়? 
উত্তর:
১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হয়। 

৯. কত সালে লীগ অব নেশনস গঠিত হয়? 
উত্তর:
১৯২০ সালে লীগ অব নেশনস গঠিত হয়। 

১০. উইনস্টন চার্চিল কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন? 
উত্তর:
উইনস্টন চার্চিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। 

১১. ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট কোন দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন? 
উত্তর:
ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। 

১২. জাতিসংঘের সদর দপ্তর কোথায় অবস্থিত? 
উত্তর:
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তর অবস্থিত। 

১৩. জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব কে ছিলেন ? 
উত্তর:
নরওয়ের অধিবাসী ট্রিগভেলি ছিলেন জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব। 

১৪. জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিবের নাম কী? 
উত্তর:
জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিবের নাম অ্যান্টনিও গুতেরেস। 

১৫. বাংলাদেশ কত সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে? 
উত্তর:
বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। 

১৬. জলপাই পাতা কিসের প্রতীক? 
উত্তর:
জলপাই পাতা শান্তির প্রতীক। 

১৭. জাতিসংঘের পতাকাটি কোন রঙের? 
উত্তর:
জাতিসংঘের পতাকাটি হালকা নীল রঙের। 

১৮. জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য কী? 
উত্তর:
জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা।

১৯. জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের মর্যাদা কীরূপ? 
উত্তর:
জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের মর্যাদা সমান। 

২০. মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা দিয়েছে কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা? 
উত্তর:
মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। 

২১. জাতিসংঘের কোন সংস্থা নিরক্ষরতা দূরীকরণে সাহায্য করছে? 
উত্তর:
জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো নিরক্ষরতা দূরীকরণে সাহায্য করছে।

২২. জাতিসংঘের সদর দপ্তর কোথায় অবস্থিত? 
উত্তর:
জাতিসংঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত।

২৩. জাতিসংঘের মূল অঙ্গ সংস্থা কয়টি? 
উত্তর:
জাতিসংঘের মূল অঙ্গ সংস্থা ছয়টি। 

২৪. নিরাপত্তা পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যা কত? 
উত্তর:
নিরাপত্তা পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যা ৫ টি। 

২৫. জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখা কোনটি? 
উত্তর:
নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখা। 

২৬. জাতিসংঘের কয়টি মৌলিক নীতি আছে? 
উত্তর:
জাতিসংঘের সাতটি মৌলিক নীতি আছে। 

২৭. জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় অবদান কী? 
উত্তর:
জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় অবদান হলো এটি প্রতিষ্ঠার পর বিশ্বে আজ পর্যন্ত কোনো বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়নি। 

২৮. কত সাল থেকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার যাত্রা শুরু হয়? 
উত্তর:
২০১৬ সাল থেকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার যাত্রা শুরু হয়। 

২৯. বিশ্বশান্তি রক্ষার প্রধান দায়িত্ব কোন পরিষদের? 
উত্তর:
বিশ্বশান্তি রক্ষার প্রধান দায়িত্ব নিরাপত্তা পরিষদের।

৩০. বিশ্বশান্তির একটি অন্যতম দিক কোনটি? 
উত্তর:
বিশ্বশান্তির একটি অন্যতম দিক হলো মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। 

৩১. আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে কোন কাজটি সম্পন্ন করা হয়? 
উত্তর:
আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়।

৩২. বাংলাদেশ সর্বপ্রথম কত সালে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য প্রেরণ করে? 
উত্তর:
১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ ' সর্বপ্রথম শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য প্রেরণ করে। 

৩৩. বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘের অধীনে এ পর্যন্ত কতটি মিশনে কাজ করছে? 
উত্তর:
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘের অধীনে এ পর্যন্ত ৫০ টি মিশনে কাজ করেছে।

৩৪. বিশ্বশান্তির পথে একটি বড় বাধা কোনটি? 
উত্তর:
বিশ্বশান্তির পথে একটি বড় বাধা হলো ক্ষুধা ও দারিদ্র্য। 

৩৫. জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের অবস্থান কততম? 
উত্তর:
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম।

৩৬. বাংলাদেশ ২০১৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কত জন সদস্য পাঠিয়েছে? 
উত্তর:
বাংলাদেশ ২০১৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে ১,৫৭,০৫০ জন সদস্য পাঠিয়েছে।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন:
১। আন্তর্জাতিক আদালতের কাজ কী? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর:
জাতিসংঘের একটি অঙ্গ সংগঠন হলো আন্তর্জাতিক আদালত। জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তি করে। তাছাড়া সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সীমানাসহ যেকোনো বিরোধ মীমাংসা করা আন্তর্জাতিক আদালতের কাজ। ২০১২ সালে বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশ নিজের পক্ষে রায় পায়।

২। “বর্তমান বিশ্বে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে” — কথাটি ব্যাখ্যা কর। 
 উত্তর:
বর্তমান যুগ পরস্পর নির্ভরশীলতার যুগ। আর পারস্পরিক নির্ভরশীলতা এ যুগে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে একটি দেশ সরাসরি বা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষরের মাধ্যমে অন্য দেশকে সাহায্য করে। আবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমেও সহযোগিতা করে থাকে। আবার এমন অনেক সমস্যা আছে যেগুলো বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব হয় না। এজন্য বর্তমান বিশ্বে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

৩. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ সম্পর্কে ধারণা দাও। 
উত্তর: অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ জাতিসংঘের একটি অঙ্গ সংস্থা। এর সদস্যসংখ্যা ৫৪ জন। বছরে কমপক্ষে দুবার নিউইয়র্ক বা জেনেভায় এর অধিবেশন বসে। প্রত্যেক সদস্যের একটি করে ভোট আছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে যেকোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ পরিষদের কাজ হলো সদস্য দেশগুলোর মানুষের জীবনযাত্রার মান্নোনয়ন, বেকার সমস্যার সমাধান, শিক্ষার প্রসার, মানবাধিকার কার্যকর করা প্রভৃতি।

৪। বিশ্বের অনেক দেশই সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল নয় কেন? 
উত্তর: বিশ্বের অনেক দেশের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা বিদ্যমান থাকার কারণে কোনো দেশই সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল নয়। বিশ্বের দেশগুলো স্বাধীন ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হলেও অনেক দেশই সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল নয়, কারণ এ দেশগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, যেমন— শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতি, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি। এ সমস্যাগুলো দূর করার জন্য প্রয়োজন হয় অন্য দেশ ও সংস্থার সহযোগিতা। এ কারণে কোনো দেশই সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল নয়। 

৫। বৈদেশিক নীতি কেন প্রণয়ন করা হয়? 
উত্তর: বিশ্বের প্রত্যেক রাষ্ট্রই নিজেদের কল্যাণে বা স্বার্থে বৈদেশিক নীতি প্রণয়ন করে। সকল বৈদেশিক নীতির মূলে রয়েছে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার মাধ্যমে নিজ দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করা। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে এক রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। 

৬। অছি পরিষদের গঠন ব্যাখ্যা কর। 
উত্তর: নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ও নির্বাচিত অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে অছি পরিষদ গঠিত। অছি পরিষদ জাতিসংঘের হয়ে বিশ্বের অনুন্নত অঞ্চলসমূহের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করে।

৭। শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ কী ভূমিকা পালন করে? ব্যাখ্যা কর। 
উত্তর: বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর একটি অন্যতম সদস্য দেশ। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করার পর থেকেই বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ প্রথম স্থান অধিকার করে আছে। তাছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের অনেক সদস্য তাদের নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছে । ফলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অবস্থান উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো হয়ে আছে।

৮ । আঞ্চলিক সহযোগিতার ধারণা সৃষ্টি হয়েছে কেন? 
উত্তর: বর্তমানে আধুনিক যুগে কোনো রাষ্ট্রই এককভাবে তাদের প্রয়োজন সম্পন্ন করতে পারে না। এ প্রয়োজনীয়তা থেকেই আঞ্চলিক সহযোগিতার ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সহযোগিতা সংস্থা। যেমন— সার্ক, আসিয়ান, ইইউ ইত্যাদি। 

৯. আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ধারণাটি ব্যাখ্যা কর। 
উত্তর: বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশই পারস্পরিক নির্ভরশীলতার মাধ্যমে নিজ দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করে থাকে। দেশগুলো স্বাধীন ও সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হলেও সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল নয়। এছাড়াও এসব দেশগুলোর সমস্যা দূর করার জন্য প্রয়োজন হয় অন্যদেশ ও সংস্থার সহযোগিতা। এভাবে বিশ্বের কোনো রাষ্ট্রই অন্য রাষ্ট্রের সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না। তাই বলা যায়, বিশ্বের দেশগুলো পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সুন্দরভাবে টিকে আছে।

১০. আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। 
উত্তর: বর্তমান যুগ পরস্পর নির্ভরশীলতার যুগ । পারস্পরিক নির্ভরশীলতার এ যুগে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। একটি দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া কোনো রাষ্ট্রীয় সমস্যাই সঠিকভাবে সমাধান করা সম্ভব হয় না। তাই বর্তমান বিশ্বে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব অপরিসীম।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url