অনলাইন ব্যাংকিং কাকে বলে? || What is Online Banking?
অনলাইন ব্যাংকিং কাকে বলে?
অনলাইন ব্যাংকিং - এর গুরুত্ব
বর্তমানকালে ব্যাংকিং সেবার মানোন্নয়নে যেসব প্রক্রিয়া ও কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে তার মধ্যে অনলাইন ব্যাংকিং অন্যতম । এ ব্যাংকিং গ্রাহকদের জন্য অনেক সুযোগ - সুবিধা সৃষ্টি করেছে । বিশ্ব অর্থনীতি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেই সাথে ব্যাংকিং খাতটিকেও তার সাথে তালমিলিয়ে চলতে হচ্ছে । এর অংশ হিসেবে অনলাইন ব্যাংকিং খুব গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী । অনলাইন ব্যাংকিং - এর গুরুত্ব হলো
অনলাইন ব্যাংকিং - এর সুবিধা
২. ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রমে প্রবেশ করতে পারে।
৩. ATM ( Automated Teller Machine ) বুথের সাহায্যে দিন - রাত অর্থ উত্তোলন করা সম্ভব।
৪. ATM এ ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্ড ব্যবহার করা হয় । এই কার্ডগুলো ব্যবহারের ওপর ডিসকাউন্ট দেয় । এছাড়া কার্ডের দ্বারা বিভিন্ন দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়।
৫ . অতি সহজে , দ্রুতগতিতে , বাড়ি , অফিস বা যেকোনো স্থানে অর্থ লেনদেন করতে পারে । ৬. নির্দিষ্ট সময়ে ও তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিল পরিশোধ করতে পারে।
৭. একাউন্টে ব্যালেন্সসহ যেকোনো প্রকার ব্যাংকিং তথ্যাবলি , সার্ভিস চার্জ ও লভ্যাংশ প্রাপ্তির তথ্য জানা যায়।
৮. বিনিয়োগ তথ্যসহ শেয়ারবাজারের বিভিন্ন তথ্য জানা যায়।
অনলাইন ব্যাংকিং একটি আধুনিক পদ্ধতি হলেও এর কিছু অসুবিধা রয়েছে । যেমন- ব্যাংক সাইট পরিবর্তন হলে ক্রেতার সকল তথ্যসমূহ পুনরায় সংযোজন করতে হয় । )
ডেবিট কার্ড ( Debit Card): ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের অন্যতম একটি মাধ্যম হলো ডেবিট কার্ড । ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রাহককে প্রদত্ত চুম্বকভিত্তিক সাংকেতিক নম্বরযুক্ত এক বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক কার্ডকে ডেবিট কার্ড বলে । এ কার্ডকে ক্যাশ কার্ড বা সম্পদ কার্ডও বলে । কারণ এ কার্ডে গ্রাহকের হিসাবে সরাসরি অর্থ জমা হয় । ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে অর্থ স্থানান্তর ও অর্থ উঠানো যায় । ১৯৭০ সালে সর্বপ্রথম কানাডায় এ কার্ডের ব্যবহার চালু হয় ।
মোবাইল ব্যাংকিং কাকে বলে?
মোবাইল ব্যাংকিং - এর কার্যক্রম বা সেবাসমূহ :
২ . নগদ টাকা নিরাপদে জমা বা উঠানো।
৩. এক হিসাব থেকে অন্য হিসাবে টাকা প্রেরণ , বিদেশ থেকে অর্থ গ্রহণ।
৪. হিসাবের ব্যালেন্স জানা , স্বল্প ( মিনি ) দৈর্ঘ্যের স্টেটমেন্ট জানা , বেতন - ভাতা প্রেরণ ও গ্রহণ।
৫. ইউটিলিটি বিল পরিশোধ ও পণ্য সেবা কেনাবেচা।
মোবাইল ব্যাংকিং - এর সুবিধাসমূহ :
২. যেকোনো মোবাইলের সিম ব্যবহার করা যায়।
৩. ব্যাংকিং অপারেটিং খরচ খুব কম।
৪ . বিভিন্ন যানবাহনের টিকেট সংগ্রহ- ট্রেনের টিকেট , বাসের টিকেট সংগ্রহ করা যায়।
মোবাইল ব্যাংকিং - এর গুরুত্ব
অনলাইন ব্যাংকিং
ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনাকে অনলাইন ব্যাংকিং বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং বলে । একে ই - ব্যাংকিং বা ভার্চুয়াল ব্যাংকিং - ও করা হয়। এক্ষেত্রে গ্রাহককে লেনদেনের জন্য শরীরে ব্যাংকে যাবার প্রয়োজন হয় না। বরং ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে ব্যাংকের নির্দিষ্ট সুরক্ষিত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একজন গ্রাহক তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লগইন করে লেনদেন করতে পারে। অ্যাকাউন্ট করার জন্য ব্যাংক তার গ্রাহককে প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন, আইডি , পাসওয়ার্ড প্রভৃতি দিয়ে থাকে। বাড়িতে বা কর্মস্থলে কিংবা ভ্রমণরত অবস্থাতেও এই কার্যক্রম সম্পন্ন বনা যায়। বর্তমানে অনলাইন ব্যাংকিং - এর মাধ্যমে প্রায় প্রতিটি ব্যাংকের আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা যায়। অনলাইন ব্যাংকিং করার জন্য গ্রাহকের আইডি , পাসওয়ার্ড ছাড়াও কম্পিউটার বা স্মার্টফোন, ইন্টারনেট সংযোগ এবং অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড প্রয়োজন হয়।
বারকোড ( Barcode ): বারকোড হলো মেশিনে তৈরি এক প্রকারের সাংকেতিক কোড। বারকোডকে সোর্স কোডও বলা হয় । বিভিন্ন পণ্যের গায়ে কালো কালো কিছু দাগ দেয়া থাকে। এটাই হলো বারকোড। একটি ছোট্ট যন্ত্র কম্পিউটারের সাথে কানেক্ট করা থাকে , যার মধ্য থেকে লাল আলো বের হয় ; সেই আলোকে কালো কালো দাগগুলোর উপরে ধরলেই কম্পিউটারে জিনিসটির নাম ও মূল্য চলে আসে। মূলত যাতে বড় কোনো হিসাব করতে ভুল না হয়, সেজন্য বারকোড ব্যবহার করা হয়। বারকোড রিডার নামক যন্ত্র দিয়ে বারকোড পড়া যায়। বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে যাদের মাধ্যমে বারকোড তৈরি করা যায় এবং রিড করা যায়।
কিউআর কোড ( QR Code ): QR code বা কুইক রেসপন্স কোড এক ধরনের ম্যাট্রিক্স 2D বারকোড QR কোডে মেসেজ , নম্বর বা অক্ষর দিয়ে তৈরি ডেটা , সাইটের ঠিকানা URL , ফোন নম্বর ইত্যাদি ছবির আকারে এনকোড করে রাখা হয়। কুইক রেসপন্স কোড গঠিত হয় সাদা পটভূমিতে বর্গাকৃতির গ্রিড এ সুবিন্যস্ত কালো উপাদান ( বর্গাকৃতির বিন্দু ) দিয়ে , যা যেকোনো ধরনের ক্যামেরা দিয়ে পড়া যায়।
Automated Teller Machince : অটোমেটেড টেলার মেশিনকে সংক্ষেপে ATM বলা হয়। ATM হচ্ছে ব্যাংকিং আর্থিক লেনদেন করার জন্য একটি বিশেষ ইলেকট্রনিক টেলিযোগাযোগ ডিভাইস , যা কোনো ব্যাংক টেলর বা ক্লার্ক ছাড়াই কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ( ব্যাংক ) -এর গ্রাহকদের নগদ টাকা ভোলার কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম। এ যন্ত্রের সাহায্যে বৈদ্যুতিক চুম্বক ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহক টাকা উত্তোলন করতে পারে। এই সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় মেশিনটি যেখানে স্থাপন করা হয় , তাকে ATM বুথ বলে এবং গ্রাহককে এখান থেকে টাকা উত্তোলন করার জন্য যে বিশেষ কার্ডটি প্রয়োজন তাকেই ATM কার্ড বলে । এই কার্ড ব্যবহার করে যে কোনো ( 24/7 ) সময় নিরাপদে টাকা উত্তোলন করা যায় । ATM বুথ থেকে কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন করার সময় একটি গোপনীয় পিন কোডের প্রয়োজন হয়।
এমআইসিআর চেক ( MICR Cheque ) : MICR ( Magnetic Ink Character Reader ) MICR চেক ব্যাংক লেনদেনের জন্য নিরাপদ এবং সময় সাশ্রয়ী । এটি ব্যাংক আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার অন্যতম অংশ । MICR এমন একটি প্রযুক্তি , যার মাধ্যমে চেকে বৈধতা যাচাই করা যায়। এতে চুম্বকীয় কালি ( Magnetic Ink ) ব্যবহার করা হয় । এ চেক স্ক্যান করার সময় এর চুম্বকীয় ডিজিট , কম্পিউটার নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে পাঠ করে এবং ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করে । এই চেক দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ হয় এবং চেক ক্লিয়ারিং - এর সময় হ্রাস পায় । এক্ষেত্রে অন ডিমান্ড চেক মুদ্রদ একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি এবং এটি চেক প্রতারণামূলক কার্যক্রম হ্রাস করে । পাশাপাশি এটি চেক রিজেকশন হ্রাস করে উন্নত গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করে।
ডিজিটাল মুদ্রা ( Digital Currency ): ডিজিটাল মুদ্রা (ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা বা ইলেক্ট্রনিক টাকা) এক ধরনের মুদ্রা , যা শুধু ডিজিটাল রূপে পাওয়া যায় । এটি ভৌত মুদ্রার অনুরূপ বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে , তবে এটি তাত্ক্ষণিক লেনদেন ও সীমান্তহীন মালিকানা হস্তান্তরের সুযোগ করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ ভার্চুয়াল মুদ্রা ও ক্রিপ্টোকারেনসি। যেমন : বিটকয়েন একটি ডিজিটাল মুদ্রা , যা ভার্চুয়াল মুদ্রার জন্য একটি রূপ বিটকয়েন ও এর বিকল্পগুলো ক্রিপ্টোগ্রাফিক অ্যালগরিদম - এর ওপর ভিত্তি করে উদিত। তাই এ ধরনের ভার্চুয়াল মুদ্রাসমূহকে ক্রিপ্টোকারেন্সিসও বলা হয়। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যে কোনো ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্বীকৃত নয়।
SWIFT Code : SWIFT (Societyfor Worldwide Interbank Financial Telecommunication) হলো বেলজিয়ামভিত্তিক আন্তঃব্যাংক আর্থিক লেনদেনের নেটওয়ার্ক। সুইফট - এর মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক লেনদেনের পরিচিতি শনাক্ত করা হয়। এই শনাক্তকরণ মূলতঃ সংকেতলিপি তথা কোডের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে লেনদেনের তারবার্তা ( ওয়্যার ) এই সুইফট কোডের মাধ্যমে আদান - প্রদান করা হয় । বিশ্বের দু'শতাধিক দেশে ১১ হাজার ব্যাংক সুইফট ব্যবহার করে। আর্থিক লেনদেনে কোড পরিচালনাকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সুইফট সম্মিলিতভাবে পরিচালনা করছে বিশ্বের অন্তত ৩ হাজার আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের প্রায় সব ব্যাংক আন্তর্জাতিক লেনদেনে সুইফট - এর সেবা নেয়।
ই - রিটেইলিং (e - retailing) : ই - রিটেইলিং - এর পূর্ণ অর্থ হলো ইলেকট্রনিক রিটেইলিং (Electronic Retailing)। ই - রিটেইলিং হলো বিজনেস টু কনজুমার বা B2C লেনদেনের প্রতিশব্দ । সাধারণভাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুচরা পণ্য বিক্রি করাকে ই - রিটেইলিং বলে। পৃথিবীর জনপ্রিয় দুইটি ই - রিটেইলিং শাপ হলো আমাজন ও eBay । এছাড়াও দেশি ই - রিটেইলিং শপ - এর মধ্যে বিক্রয় ডট কম উল্লেখযোগ্য।