স্যাটেলাইট কি? || What is Satellite?

 

স্যাটেলাইট  

স্যাটেলাইট শব্দের অর্থ হলো উপগ্রহ। চাঁদ হলো পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ; আর মানুষ তৈরি করেছে কৃত্রিম উপগ্রহ; যেগুলো চাঁদের মতোই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ হলো মহাকাশে উৎক্ষেপিত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত কৃত্রিম উপগ্রহ। পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করানোর জন্য আধুনিক স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম ভূ উপগ্রহগুলোকে বায়ুমণ্ডলের বাইরে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে বিশেষ ধরনের তারবিহীন রিসিভার ট্রান্সমিটার সংযুক্ত করে স্থাপন করা হয়ে থাকে। স্যাটেলাইটকে রকেট বা স্পেস শাটলের কার্গো বে - এর মাধ্যমে কক্ষপথে পাঠানো হয়।

মহাকাশ প্রযুক্তি বিকশিত হওয়ার পর শত শত স্যাটেলাইট (কৃত্রিম উপগ্রহ) মহাকাশে উৎক্ষেপন ও কার্যত ব্যবহৃত হচ্ছে। স্যাটেলাইটের কক্ষপথ বা অরবিটের ওপর ভিত্তি করে চিহ্নিত জিওস্টেশনারি (Geostationary) ও পোলার (Polar) এই দুই ধরনের স্যাটেলাইটের মধ্যে প্রথমটি বহুল ব্যবহৃত। জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটগুলো তাদের সেবার সুবিধার্থে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ৩৫,৭৮৬ কিলোমিটার (২২,২৩৬ মাইল) ঊর্ধ্বে পৃথিবীর ঘূর্ণনের সাথে মিল রেখে হুবহু একই গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। ফলে এটি পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে আসতে সময় নেয় ২৪ ঘণ্টা এবং এদেরকে পৃথিবী থেকে আকাশে এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে বলে মনে হয়। টেলিকমিউনিকেশনে ব্যবহার করার জন্য এটিই প্রথম আবশ্যকীয় শর্ত। পৃথিবীতে প্রাপ্ত কয়েক ধরনের স্যাটেলাইটের মধ্যে রয়েছে ওয়েদার স্যাটেলাইট, কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট, নেভিগেশন স্যাটেলাইট, আর্থ - অবজারভেশন স্যাটেলাইট, মিলিটারি স্যাটেলাইট প্রভৃতি।
 
স্যাটেলাইটের ব্যবহার (Application of Satellite) 

১. পৃথিবীর জলবায়ু ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ করার কাজে। 

২. টেলিভিশন সম্প্রচার কাজে। 

৩. অপেশাদার রেডিও যোগাযোগের ক্ষেত্রে। 

৪. প্রতিরক্ষা কাজে। 

৫. ইন্টারনেট যোগাযোগের ক্ষেত্রে। 

৬. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে। 

৭. দূরের গ্রহ গ্যালাক্সি ও মহাশূন্যের বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ কাজে।

৮. গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (Global Positioning System - GPS) এর মতো বিভিন্ন অবস্থান নির্ণয় কাজে।

 স্যাটেলাইটের সাধারণ গঠন: স্যাটেলাইটের শরীর ধাতু সংকরের ফ্রেম দিয়ে তৈরি যা সাধারণভাবে বাস নামে পরিচিত। স্যাটেলাইটের সকল বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি এর অভ্যন্তরে স্থাপিত থাকে। প্রত্যেক স্যাটেলাইটে শক্তি সংরক্ষণের জন্য ব্যাটারি ও সোলার সেল থাকে। এর পাওয়ার সিস্টেম প্রসেসকে পৃথিবী থেকে সর্বদা মনিটর করা হয়। স্যাটেলাইটকে নিয়ন্ত্রণ এবং এর বিভিন্ন সিস্টেমকে মনিটর করার জন্য এতে একটি অন বোর্ড কমপিউটার সংযুক্ত থাকে। স্যাটেলাইটের অন্য একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো এর রেডিও সিস্টেম ও অ্যান্টেনা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url