ই-মেইল || E-mail

 ই - মেইল কি? 

ই - মেইলের পূর্ণ অর্থ হলো ইলেকট্রনিক মেইল। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস (কমপিউটার, মোবাইল প্রভৃতি) -এর মধ্যে নির্ভরযোগ্যভাবে ডিজিটাল তথ্য আদান - প্রদান ব্যবস্থাকে ই - মেইল বলে। ই - মেইল তথ্য আদান - প্রদানে আইপি বা ইন্টারনেট প্রোটোকল ব্যবহার করে থাকে এবং এতে টেক্সট বার্তার সাথে অ্যাটাচমেন্ট আকারে নানা ফাইলও ( ডকুমেন্ট, ছবি, অডিও , ভিডিও সহ যে কোনো ডিজিটাল ফাইল) পাঠানো যায় । ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় সারা বিশ্বের যেকোনো স্থানে ই-মেইল পাঠানো যায়। 

উইকিপিডিয়া অনুসারে- "Electronic mail or e-mail is a method of exchange digital message from an author to one or more recipient."

 ই - মেইলের জন্য একটি নির্দিষ্ট ই - মেইল অ্যাড্রেস ব্যবহৃত হয়, যা প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য ইউনিক হয়ে থাকে। নিরাপত্তার জন্য গোপন পাসওয়ার্ড দ্বারা প্রত্যেকের ই - মেইল অ্যাকাউন্টকে সুরক্ষিত রাখা হয়। একটি ই - মেইল অ্যাড্রেসের দুটি অংশ থাকে। যার প্রথম অংশটি ব্যবহারকারীর পরিচিত এবং শেষাংশটি ডোমেইন নেম হিসেবে পরিচিত। যেমন- mrahman@gmail.com একটি ই - মেইল অ্যাড্রেস: যার mrahman অংশটি ব্যবহারকারীর পরিচিতি এবং gmail.com অংশটি ডোমেইন নেম হিসেবে চিহ্নিত হবে। ই - মেইল অ্যাড্রেসের এ দুই অংশকে @ চিহ্ন দ্বারা পৃথক করা হয়ে থাকে। 

e-mail

ই-মেইলের জনক কে?

আমেরিকান কমপিউটার প্রোগ্রামার Raymond Samuel Tomlinson এর জন্য ১৯৪১ সালের হয় এপ্রিল। তিনিই সর্বপ্রথম আরপানেটে ই-মেইল প্রোগ্রাম ব্যবহার করে এক হোস্ট আপিউটার থেকে অপর হোস্ট কম্পিউটারে ই-মেইল করেন। তার সূচিত এই ই-মেইল ব্যবস্থা পরবর্তীতে সারা পৃথিবীতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে তথ্য আদান - প্রদান ব্যাপক বিপ্লব সাধন করে। ই - মেইলের মাধ্যমে তথ্য বিনয় পদ্ধতি উদ্ভাবন ও তার দ্বারা প্রথম সফল ই-মেইল বিনিময়ের কৃতিত্বের কারণে ডাকে ই-মেইলের জনক বলা হয়।

ই-মেইল লেখার নিয়ম

ই-মেইল লেখার নিয়ম মোটামুটি ফর্মাল লেখার নিয়মের মধ্যে অনুসরণ করা হয়, কারণ ই-মেইল সাধারণভাবে আধিকারিক যোগাযোগের একটি সাধারণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একটি প্রফেশনাল ই-মেইল লেখার সময় নিম্নলিখিত নীতিমালা মেনে চলা উচিত:

  1. 1. সূত্র বা প্রাধিকৃত ঠিকানা: ই-মেইলে সংকেত বা প্রাধিকৃত ঠিকানা লিখুন যাতে প্রাপক সহজে যোগাযোগ করতে পারেন।

  2. 2. বিষয় লাইন: ই-মেইলের বিষয় লাইন দিন যাতে প্রাপক মেইল বদলে দেখতে পারেন এবং মেইল বুঝতে সহায়ক হয়।

    • * সময়ের মধ্যে মেইল প্রেরণ করা হয়েছে কি?
    • * আপনি একটি অ্যাটাচমেন্ট সংযুক্ত করতে চান কি?
    • * যে কোনও স্পেশাল প্রয়োজনীয়তা আছে কি?

  3. 3. উপযুক্ত মেইল শীর্ষক: আপনি একটি প্রফেশনাল সংস্করণে আপনার নাম বা কোম্পানির নাম ব্যবহার করতে পারেন যেটা মেইলটি একটি আধিকারিক ই-মেইল হিসেবে প্রদর্শন করতে সাহায্য করে।


  4. 4. প্রথম অনুচ্ছেদ: ই-মেইলে সাধারণভাবে একটি স্বাগত অংশ থাকতে পারে, যেখানে আপনি আপনার পরিচিতি নিয়ে কিছু কথা বলতে পারেন বা প্রাপকে ধর্মীয় অথবা আপনার সাথে যে কোন সাপ্তাহিক প্রসঙ্গ সম্পর্কে কিছু কথা বলতে পারেন।


  5. 5. মুদ্রণকৃত নাম এবং স্বাক্ষর: আপনি আপনার ই-মেইলে আপনার নামের স্বাক্ষর যোগ করতে পারেন, এটি একটি আধিকারিক প্রক্রিয়া যা সত্যসাধ্যে মেইল সম্পাদনা করার সময় ব্যবহৃত হতে পারে।


  6. 6. মুদ্রণকৃত স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তা: কিছু প্রাপক ই-মেইলের সম্প্রতি মুদ্রণকৃত স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তা থাকতে পারে, বিশেষভাবে আনুষ্ঠানিক কাজে বা আধিকারিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে।


  7. 7. সংক্ষিপ্ত এবং স্পষ্ট ভাষা: আপনার ই-মেইল সাংকেতিক, সংক্ষিপ্ত এবং স্পষ্ট হতে চাইবে। বৃহত্তর প্রসঙ্গ এবং অসংক্ষেপণে ই-মেইল পড়া ক্লিপ্সি হতে পারে এবং প্রাপক দ্বারা বোঝা সহজ হতে পারে।


  8. 8. উপরে যোগ করা যাবে: আপনি প্রয়োজনে আপনার ই-মেইলে যে কোনও আপলোড করতে পারেন, যেমন ডকুমেন্ট, ছবি, অথবা অন্যান্য স্বয়ংক্রিয় ফাইল।


  9. 8. বৈদ্যকরণ: নিম্নলিখিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যকরণ বাণীগুলি মেইল সম্পাদনা করতে সাহায্য করতে পারে:


  10. 9. প্রবণতা এবং ব্যক্তিগত তথ্য: প্রাপকের কোনও ব্যক্তিগত তথ্য অথবা প্রবণতা শ্রদ্ধাশীলভাবে সংরক্ষণ করা উচিত নয়।


  11. 10. শেষ অনুচ্ছেদ এবং শেষ বাক্য: আপনি আপনার মেইল প্রবৃত্তি এবং প্রবণতা অনুযায়ী পুনর্নির্দিষ্ট করে সেরা উপযুক্ত প্রবর্তন করতে পারেন।


  12. 11. প্রুফরিড পোস্টস্ক্রিপ্ট (PPS): এই সেকশনে আপনি যে কোন অতিরিক্ত তথ্য যোগ করতে পারেন, যেমন অতিরিক্ত যোগাযোগ তথ্য, ধারাবাহিক বা ব্যক্তিগত তথ্য, পুনর্নির্দিষ্ট ধরনের কাজ, ইত্যাদি।


  13. এই নিয়ম মেনে চললে, আপনি একটি প্রফেশনাল এবং সাধারণভাবে বুঝতে সাহায্য করবেন এবং মেইল প্রাপক দ্বারা সহজভাবে বোঝা সম্ভব হবে। এছাড়াও, সাবাপেক্ষতা এবং শ্রদ্ধা প্রদান করে আপনি সম্পাদনা করার সময় প্রাপকের মেইল পড়া মধ্যে সাহায্য করবে।


ই - মেইলেট সুবিধা 

১. ব্যবহার করা সহজ। সহজে তথ্য পাঠানো যায় ও গ্রহণ করা যায় এবং কম্পিউটারে সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
২. সবচেয়ে দ্রুত, মুহূর্তেই পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে পাঠানো যায়। 
৩. ই - মেইলের সাথে এটাচ করে অন্য প্রোগ্রাম বা ফাইল (ডকুমেন্ট, ইমেজ, অডিও, ভিডিও প্রভৃতি) পাঠানো যায়।
৪. একই স্নেইল সিসি (CC) বা বিসিসি (BCC) করে অনেকের কাছে পাঠানো যায়।
৫. কাগজের ব্যবহার হয় না বিধায় পরিবেশের জন্য সহায়ক।
৬. ই - মেইলের মাধ্যমে সহজেই খুব কম খরচে কোন পণ্য মার্কেটিং করা যায়।
৭. প্রাপ্ত মেইলের বিপরীতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো উত্তর পাঠানোর ব্যবস্থা করা যায়।

ই-মেইলের ক্ষেত্রে cc ও bcc কি?

ই-মেইলের ক্ষেত্রে "cc" ও "bcc" দুটি সংক্ষেপণ ব্যবহার হয় যাদের সাহায্যে আপনি ই-মেইল পাঠাতে পারেন:

1. CC (Carbon Copy):
"CC" এর সংক্ষেপণ হলে "Carbon Copy" এর। এটি ই-মেইলের একটি বৈশিষ্ট্য যেখানে আপনি আপনার প্রাথমিক প্রাপ্তকারীর বাইরে অন্য কেউকে মেইল পাঠাতে পারেন, তাহলে সে ব্যক্তিটি "cc" হিসেবে সংযোজিত হয়। এই ব্যক্তি মেইলটি পেতে পারে এবং এই মেইল প্রাপ্তকারীর জন্য যে মেইল পাঠানো হয়েছে তা সে জানতে পারে।

2. BCC (Blind Carbon Copy):
"BCC" সংক্ষেপণে "Blind Carbon Copy" এর অর্থ হলে অন্যের চোখে যে ব্যক্তি কেউ দেখতে পারে না, অর্থাৎ ব্লাইন্ড ভাবে কোন অসুস্থ প্রাপ্তকারীর মেইল ঠিকানার সঙ্গে মেইলটি পাঠানো হয়েছে। যে ব্যক্তি মেইল প্রাপ্তকারীদের "BCC" করেছে, সে অন্য সকল প্রাপ্তকারীর মেইল ঠিকানা দেখতে পারে না। এটি প্রাইভেসি এবং গোপনীয়তা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

এই উভয় বৈশিষ্ট্য ই-মেইলে ব্যবহৃত হয় যাতে একই মেইল প্রাপ্তকারীদের মধ্যে যে কোন ধরনের যোগাযোগ ও সাহায্যের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।

ই-মেইল খোলার পদ্ধতি কি?

ই-মেইল খোলার পদ্ধতি খুবই সহজ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে। নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে আপনি নিজের ই-মেইল খোলতে পারেন:
1. ইন্টারনেট সংযোগ তৈরি করুন: প্রথমে আপনার ডিভাইস (কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট) এ ইন্টারনেট সংযোগ তৈরি করুন। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলে ই-মেইল সেটাপ করা সম্ভব হবে না।

2. ই-মেইল সার্ভিস প্রায়েপ্ত করুন: আপনি একটি ই-মেইল সার্ভিস সার্ভার (যেমন, Gmail, Yahoo Mail, Outlook, ইত্যাদি) বেছে নিতে হবে। আপনি যে সার্ভিসটি বেছে নেন, সেটার ওয়েবসাইটে যাওয়া প্রয়োজন।

3. একটি একাউন্ট তৈরি করুন: সার্ভিসের ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর, "একটি নতুন একাউন্ট তৈরি করুন" বা "সাইন আপ" বোতাম ক্লিক করুন।

4. আবশ্যিক তথ্য প্রদান করুন: একাউন্ট তৈরি করার সময়, সার্ভিস প্রদানকারী আপনি থেকে আপনার নাম, ই-মেইল ঠিকানা, পাসওয়ার্ড, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, ইত্যাদি তথ্য চাইতে পারে। এই তথ্যগুলি সঠিকভাবে প্রদান করুন।

5. পাসওয়ার্ড তৈরি করুন: আপনার ই-মেইল একাউন্টের নিরাপত্তা জন্য একটি কঠিন পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। এটি অক্ষর, সংখ্যা, এবং বিশেষ চিহ্নগুলি যেমন স্যাম্বল (@, #, $, ইত্যাদি) ব্যবহার করে তৈরি করা উচিত। আপনার পাসওয়ার্ড সঁচানো ও সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নিন।

6. একাউন্ট সেটাপ সম্পন্ন করুন: প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করার পর, আপনি আপনার নতুন ই-মেইল একাউন্ট সেটাপ করতে পারেন। এটি আপনার সংস্থানিক নাম, এবং অন্যান্য সেটিংস সম্পর্কিত স্বপন্ন হতে পারে।

7. ই-মেইল ব্যবহার করুন: আপনার ই-মেইল একাউন্ট তৈরি সম্পন্ন হলে, আপনি ই-মেইল পাঠাতে, প্রাপ্ত করতে, এবং অন্যান্য ই-মেইল কাজ করতে পারেন।

এই পদক্ষেপগুলি সার্ভিস প্রদানকারী সাইটের সাথে যেসমুহ একই আছে তা ভিন্ন সাইটে এক্সেকিউট হতে পারে, তাই আপনি আপনার ব্যক্তিগত স্থিতি অনুযায়ী সাইটে যাওয়া এবং অনুসরণ করা প্রয়োজন। তারপরে, আপনি আপনার নতুন ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে ই-মেইল প্রেরণ ও প্রাপ্তি করতে পারেন।

বাংলাদেশে ই-মেইল চালু হয় কবে ?

বাংলাদেশে ই-মেইল চালু হওয়া শুরু হয় 1996 সালে। এই সময়ে, বাংলাদেশের প্রথম ই-মেইল সার্ভার এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সাধ্য হয়। এরপর থেকে ই-মেইল বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে প্রসারিত হয়ে আসে, এবং এটি আজও ব্যবহৃত হচ্ছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url