নেটওয়ার্ক - সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি || Network - Related Equipment

 নেটওয়ার্ক - সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি

হাব (Hub): সাধারণত তারযুক্ত নেটওয়ার্কে থাকা অনেকগুলো আইসিটি যন্ত্র তথা কম্পিউটার, প্রিন্টার ইত্যাদিকে একসাথে যুক্ত করতে হাব ব্যবহার করা হয়। হাব এক যন্ত্রকে অন্য যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ দেয়। বলা যায়, একই নেটওয়ার্কে হাব দ্বারা সংযুক্ত সকল কম্পিউটার একটি আরেকটির সাথে যোগাযোগ করতে পারে। হাব বললেই আমরা ইন্টারনেট হাব বা নেটওয়ার্ক হাবকেই বুঝে থাকি। তবে ইদানীং আমরা অনেক USB হাবও দেখে থাকি। 

হাবের মধ্য দিয়ে যখন তথ্য বা উপাত্ত এক যন্ত্র থেকে অন্য যন্ত্রে যায়, হাব তখন সেগুলো পড়তে পারে না। এক কম্পিউটার থেকে অন্য একটি কম্পিউটারে তথ্য বা উপাত্ত পাঠালে হাব তার সাথে সংযুক্ত সকল কম্পিউটারে ঐ তথ্য বা উপাত্র পাঠিয়ে দেয়। এমনকি যে কম্পিউটার থেকে তথ্য পাঠানো হলো, ডাকেও হাব আবার ঐ তথ্য পাঠিয়ে দেয়। অর্থাৎ হাব নির্দিষ্ট ঠিকানা অনুযায়ী তথ্য পাঠাতে পারে না। বর্তমানে কম গতি ও বেশি সুবিধা পাওয়া যায় না বলে হাবের ব্যবহার কমে যাচ্ছে।

সুইচ (Switch): এটিও হ্যাবের মতো একটি ক্ষুদ্র আইসিটি যন্ত্র। বর্তমানে যেকোনো নেটওয়ার্ক তৈরি করতে বেশিরভাগ সময় সুইচ ব্যবহার করা হয়। হাবের সাথে সুইচের প্রধান পার্থক্য হলো সুইচ ভারের সাথে যুক্ত প্রত্যেকটি আইসিটি যন্ত্রকে পৃথকভাবে শনাক্ত করতে পারে কিন্তু হাব তা পারে না। ফলে সুইচ দিয়ে তৈরি নেটওয়ার্কের যেকোনো আইসিটি সরাসরি অন্য যন্ত্রের সাথে যোগযোগ করতে পারে। সুইচের সাথে যুক্ত বলগুলো শুধু যাকে ডেটা বা উপাত্ত পাঠাতে চায় তাকেই উপাত্ত পাঠায়। 

নেটওয়ার্ক - সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি

এখন প্রশ্ন হলো সুইচ এ কাজটি কীভাবে করে? 

সুইচ তার সাথে সংযুক্ত প্রত্যেকটি আইসিটি যন্ত্রের একটি করে ঠিকানা বরাদ্দ করে এবং ঐ ঠিকানা অনুযায়ী তথ্যের আদান - প্রদান করে। অর্থাৎ কোনো একটি ঠিকানা থেকে অন্য কোনো ঠিকানায় উপাত্ত বা ডেটা পাঠাতে চাইলে সুইচ এক ঠিকানার জন্য অন্য ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। এ বরাদবৃত্ত ঠিকানাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভাষায় MAC Media Access Control address নামে ডাকা হয়। উপরের শ্রেণিতে এ বিষয়ে আমরা আরো ব্যাপকভাবে জানব। আলাদা আলাদা ঠিকানা ব্যবহারের কারণে সুইচ হাবের চেয়ে অনেক দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে। এজন্য নেটওয়ার্ক তৈরিতে সুইচই এখন সবার পছন্দ। 

রাউটার (Router): Router শব্দটি এসেছে Route শব্দ থেকে। রাউটার একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যা হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যারের সমন্বরে তৈরি। এটি নেটওয়ার্ক তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। ইন্টারনেট অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে তৈরি। একই প্রোটোকলের অধীনে কার্যরত দুটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে ইন্টারনেটে অসংখ্য রাউটার রয়েছে। রাউটার এর প্রধান কাজ ডেটা বা উপাত্তকে পথ নির্দেশনা দেওয়া। ধরো অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত কোনো বন্ধুকে ই - মেইলের মাধ্যমে কেউ একটি ছবি পাঠাতে চায়। ছবিটি কয়েকটি ডেটা প্যাকেটে বিভক্ত হয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বন্ধুর কম্পিউটারে পৌঁছাবে। প্রতিটি ডেটা প্যাকেটে গন্তব্যস্থলের ঠিকানা সংযুক্ত থাকে। 

ইন্টারনেট যেহেতু জালের মতো গোটা পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত , তাই বিভিন্ন ডেটা প্যাকেট বিভিন্ন পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। একটি ডেটা প্যাকেট কোনো একটি রাউটার - এ পৌছালে পরবর্তী কোন পথে অগ্রসর হলে ডেটা সহজে এবং দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাবে তার পথনির্দেশ দেয় ঐ রাউটার। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি তোমাদের কাছে আরও স্পষ্ট হবে। মনে কর তুমি বাংলাদেশ থেকে বিমানে করে এমন একটি দেশে যেতে চাও, যেখানে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিমানে যাওয়া যায় না। তখন কী হবে? বিমান কোম্পানি প্রথমে তোমাকে সুবিধাজনক একটি গন্তব্যে নিয়ে যাবে, যেখান থেকে অন্য আরেকটি বিমান তোমার কাঙ্ক্ষিত দেশটিতে তোমাকে পৌঁছে দেবে।

মডেম (Modem): ইন্টারনেটের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র হলো মডেম। Modulator- এর Mo এবং Demodulator হতে Dem এই অংশ দুটির সমন্বয়ে Modem শব্দটি তৈরি হয়েছে। মডেম তার দ্বারা সংযুক্ত বা তারবিহীন (wireless) প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হতে পারে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডেটা বা উপাত্ত পাঠানোর জন্য এক ধরনের সিগনাল দরকার হয়। মডেম এমন একটি নেটওয়ার্ক যন্ত্র (Network device), যা কম্পিউটার হতে প্রাপ্ত ডিজিটাল সিগনালকে রূপান্তর করে Network কে প্রেরণ করে। আবার নেটওয়ার্ক হতে প্রাপ্ত সিগনালকে রূপান্তর করে কম্পিউটারে প্রেরণ করে। 

পূর্বে স্বল্প গতির ডায়াল - আপ মডেম ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে এর পরিবর্তে দ্রুতগতির কেবল বা DSL (Digital Subscribers Line) মডেম ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে Wi - Fi (Wireless Fidelity) মডেম ব্যবহৃত হচ্ছে। 

ল্যান কার্ড (LAN Card): দুটো বা অধিকসংখ্যক কম্পিউটারকে একসাথে যুক্ত করতে যে যন্ত্রটি অবশ্যই প্রয়োজন হয়, তা হলো ল্যান কার্ড। অর্থাৎ আমরা যদি কোনো নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে চাই , তবে অবশ্যই ল্যান কার্ডের প্রয়োজন হবে। নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত এক আইসিটি যন্ত্র থেকে অন্য যয়ে কোনো তথ্য বা উপাত্ত পাঠাতে কিংবা গ্রহণ করতে ল্যান কার্ডের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে ল্যান কার্ডের ভূমিকা ইন্টারপ্রেটারের মতো। বর্তমানে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বা আইসিটি যন্ত্রের মাদারবোর্ডের সাথেই ল্যান কার্ড সংযুক্ত (Bullt - in) থাকে। তারপরও কিছু আইসিটি যন্ত্রে আলাদা করে ল্যান কার্ড সংযুক্ত করতে হয়। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এখন তারবিহীন ল্যান কার্ড খুবই জনপ্রিয়।

 নেটওয়ার্কের ব্যবহার 

মানুষ সামাজিক প্রাণী। আদিকাল থেকে মানুষ নানা ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একসঙ্গে সসমাজবদ্ধভাবে থাকতে শিখেছে। সমাজের সবার কিছু দায়িত্ব থাকে এবং সবাই মিলে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে শিখে। সভ্যতার বিকাশের পর সামাজিকভাবে একসঙ্গে থাকার বিষয়টিও নতুন মাত্রা পেয়েছে। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তিতে যে নেটওয়ার্কের জন্ম হয়েছে, সেটিও আমাদের জীবনে একটা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমরা অতীতে যে কাজগুলো করতাম, আজকাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সেই একই কাজ অন্যভাবে করতে শিখেছি। নেটওয়ার্কের সবচেয়ে বড় ব্যবহার হচ্ছে তথ্যকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা।

আগে একটি তথ্য সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া অসম্ব ও কঠিন একটি কাজ ছিল। এখন মুহূর্তের মধ্যে একটি তথ্য শুধু যে নিজের পরিচিতদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারি তা নয়, সেটি সারা দেশে, এমনকি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে পারি। শুধু তাই নয়, একসময় তথ্য ছিল সম্পদের মতো। যার কাছে তথ্য যত বেশি, সে তত ক্ষমতাশালী। নেটওয়ার্কের কারণে এ ধারণাটা পুরোপুরি পাল্টে গেছে। এখন তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত। বিশেষ বিশেষ প্রতিষ্ঠান বিশেষ বিশেষ তথ্যকে নিজের জন্য আলাদাভাবে সংরক্ষণ করে কিন্তু অন্যান্য সাধারণ তথ্য এখন সবার জন্য উন্মুক্ত। 

একজন খুব সাধারণ মানুষ আর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী মানুষ দুজনেরই পৃথিবীর তথ্যভাণ্ডারে সমান অধিকার। দুজনেই একই তথ্যভাণ্ডার থেকে একই তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। নেটওয়ার্ক দিয়ে তথ্যকে উপস্থাপন করার কারণে সারা পৃথিবীতেই নতুন একধরনের কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। একসময় যে তথ্যগুলো কপিজে সংরক্ষণ করতে হতো, এখন সেটি ডেটাবেসে সংরক্ষণ করা হয়। আগে সেই তথ্যগুলো কাগজ ঘেটে মানুষকে খুঁজে বের করতে হতো; কাজটি ছিল নিরানন্দময় এবং সময় সাপেক্ষ। 

এখন কম্পিউটারে আঙুলের টোকায় নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে যে কেউ ডেটাবেসে তথ্য রাখতে পারে, প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারে। একসময় যে কাজটি করার জন্যে অনেক ধরনের কাগজপত্রে অনেক ধরনের তথ্য রাখার প্রয়োজন হতো, এখন সেটি কোনো শক্তিশালী কম্পিউটারের ডেটাবেসে রাখা হয়। কাগজপত্রের ব্যবহার দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে বিমানের টিকেট। এক সময় বিমানের যাত্রীদের টিকিট হাতে নিয়ে বিমানবন্দরে যেতে হতো। এখন সারা পৃথিবীতে ই - টিকিটের প্রচলন হয়েছে এবং বিমানের কোনো যাত্রীকে আর বিমানের টিকিট হাতে করে নিতে হয় না। 

নেটওয়ার্কের ব্যবহার

বিমানের কর্মকর্তারা যাত্রীর পরিচর থেকে সরাসরি তার টিকিটের তথ্য পেয়ে যান এবং যাত্রীদের বিমান ভ্রমণের ব্যবস্থা করে দেন। সেই দিনটি আর বেশি দূরে নয়, যখন কাউকে আর নিজের পাসপোর্টটি সাথে নিয়ে ভ্রমণ করতে হবে না। যখন প্রয়োজন হবে, তখন তার আঙুলের ছাপ কিংবা চোখের রেটিনা স্ক্যান করে ডেটাবেস থেকে তার সকল তথ্য বের করে নিয়ে আসা হবে। নেটওয়ার্কের অন্য ব্যবহারটি হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত সকল প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ভাগাভাগি করে নেওয়ার সুযোগ। 

একসময় সকল প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার প্রত্যেকটি কম্পিউটারেই আলাদাভাবে রাখার প্রয়োজন হতো। এখন আর সেটি রাখতে হয় না। একটি মূল কম্পিউটার বা সার্ভারে সফটওয়্যার রাখা হয় এবং সেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্যান্য সব কম্পিউটার সার্ভারে রাখা সেই সফটওয়্যার ব্যবহার করে। কাজেই ব্যক্তিগতভাবে একজন মানুষ কোনো মূল্যবান সফটওয়্যার না কিনেই বিনামূল্যে বা অত্যন্ত কম মূল্যে সেটি ব্যবহার করতে পারে। শুধু যে একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারে তা নয়, একজন মানুষ তার ব্যক্তিগত সবকিছুই নিজের কম্পিউটারে না রেখে অন্য কোথাও রেখে দিতে পারে। যেকোনো সময় পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে সেটি ব্যবহার করতে পারে , সেরকম ব্যবস্থাও রয়েছে। এরকম একটি জনপ্রিয় সেবার নাম ড্রপবক্স (Dropbox) এবং এই বইটিও ড্রপবক্স ব্যবহার করে লেখা হয়েছে।

নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত সম্পদ ভাগাভাগি করে নেওয়ার সুযোগটি ধীরে ধীরে একটি নতুন ধারণার জন্ম দিয়েছে । সাধারণভাবে এটিকে বলা হয় ক্লাউড কম্পিউটিং। তথ্যপ্রযুক্তির নানা ধরনের সেবা পাওয়ার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে সব সময়ই নানা ধরনের যন্ত্রপাতি (Hardware), সার্ভার ইত্যাদি কিনতে হয়। সেগুলো ঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্যে দক্ষ মানুষ নিয়োগ দিতে হয় সেই যন্ত্রপাতি বা সার্ভারে ব্যবহার করার জন্য মূল্যবান এবং জটিল সফটওয়্যার কিনতে হয়। তাহলেই প্রতিষ্ঠানটি তথ্যপ্রযুক্তি থেকে সঠিক সেবা পেতে পারে। 

অনেক সময়েই একটি সেবার প্রয়োজন হয় খুব সামরিক এবং সেই সামরিক সেবার জন্যও প্রতিষ্ঠানটিকে অনেক খরচ সাপেক্ষ একটা প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। শুধু তাই নয়, তথ্যপ্রযুক্তি - সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি এত দ্রুত উন্নত হচ্ছে যে, অনেক অর্থ দিয়ে নানা ধরনের যন্ত্রপাতি কেনার কয়েক বছরের মধ্যে দেখা যায় তার আর্থিক মূল্য কমে প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছ। এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে তথ্যপ্রযুক্তি ক্লাউড কম্পিউটিং নামে একটি নতুন ধরনের সেবা জন্ম নিয়েছে। এর পেছনের ধারণাটি খুবই সহজ। 

যেকোনো ব্যবহারকারী বা যকোনো প্রতিষ্ঠান নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কম্পিউটারের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে যেকোনো ধরনের সেবা গ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তার জন্যে সবকিছু করে দেবে। ব্যবহারকারীর প্রয়োজনটি সাময়িক হলে সে সাময়িকভাবে এটি ব্যবহার করবে এবং যতটুকু সেবা গ্রহণ করবে, ঠিক ততটুকু সেবার জন্য মূল্য দিবে। এই ধারণাটি অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং পৃথিবীতে ক্লাউড কম্পিউটারের প্রচলন ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে। ভোমরা কিংবা তোমাদের পরিচিত কেউ যদি hotmail , yahoo বা gmail ব্যবহার করে কোনো ই - মেইল পাঠিয়ে থাকো তাহলে সেটি ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহার করে করা হয়েছে। কিংবা তুমি যদি বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকাতে কোনো বাংলা তথ্য খুঁজে দেখো, তাহলে সেটিও ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহার করে করা হয়েছে।

নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সারা পৃথিবীতে সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মানুষের সাথে মানুষের এক ধরনের যোগাযোগ শুরু হয়েছে। সামাজিক নেটওয়ার্কে একে অন্যের সাথে ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিনিময় করতে পারে, ইমেইল পাঠাতে বা গ্রহণ করতে পারে, মেসেজ দেওয়া নেওয়া করতে পারে। এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক নেটওয়ার্কের মধ্যে রয়েছে ফেসবুক ও টুইটার। নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আজকাল টেলিফোন করা যায়। টেলিফোনে শুধু যে কণ্ঠস্বর শোনা যায় তা নয়, আমরা যার সাথে যোগাযোগ করছি তাকে দেখতেও পারি। অফিসের কাজে ফাইল দেওয়া নেওয়া করতে হয়, সেগুলোর প্রক্রিয়া করতে হয়। নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এখন এই ফাইল প্রক্রিয়া করার কাজগুলোও অনেক দক্ষতার সাথে করা হয়। 

মানুষের বিনোদনের জন্য নেটওয়ার্কের ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একসময় একটি সিনেমা দেখার জন্য মানুষকে সিনেমা হলে যেতে হতো কিংবা সিডি কিনে দেখতে হতো। এখন সরাসরি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে একজন দর্শক সিনেমাটি ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারে। নেটওয়ার্কের ব্যবহার বিনোদনের জগতে নতুন একটি মাত্রা যুক্ত করেছে। রাষ্ট্রপরিচালনা, নিরাপত্তা এমনকি যুদ্ধবিগ্রহেও নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হয়। নতুন পৃথিবীতে সম্পদ হচ্ছে তথ্য। যে যত দক্ষতার সাথে তথ্য ব্যবহার করতে পারবে, নতুন পৃথিবীতে সে-ই হবে তত শক্তিশালী। আর তথ্য ব্যবহার করার জন্য দরকার শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। তাই ভবিষ্যতে আমরা নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে নতুন নতুন পদ্ধতির ব্যবহার দেখব সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url